Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘পচা খেজুরের দাম নির্ধারণ করে রোজাদারদের উপহাস করেছে সরকার’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৩ মার্চ ২০২৪ ১৭:৫৩

ঢাকা: সরকার পচা খেজুরের দাম নির্ধারণ করে রোজাদারদের উপহাস করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, ‘সরকার গতকাল নিম্নমানের পচা খেজুরের দাম নির্ধারণ করে দিয়ে রোজাদারদের উপহাস করেছে। রমজান মাসে ইফতারের সময় খেজুর খাওয়ায় ধর্মীয় অনুভুতি কাজ করে। অথচ সরকারের একজন মন্ত্রী ইফতার নিয়ে উপদেশ দিচ্ছেন জনগণকে। যেহেতু এরা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এমপি বা মন্ত্রী হননি, সে কারণে তারা রোজাদার মানুষদের নিয়ে মশকরা করছেন।’

তিনি বলেন, ‘পবিত্র রমজান মাসের খেজুর আমদানির জন্য ভতুর্কি দুরে থাক, উল্টো খেজুরকে বিলাসী পণ্য উল্লেখ করে খেজুর আমদানির উপর শুল্ক বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার। খেজুরের ভর্তুকি না দিলেও শত শত কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে সোনালী ব্যাংক, রূপালি ব্যাংককে। আওয়ামী লুটেরা চক্র ব্যাংক থেকে বিভিন্ন প্রজেক্টের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিদেশে পাচার করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া বানিয়ে দিয়েছে।’

রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ব্যাংক হেলথ ইনডেক্স অ্যান্ড হিট ম্যাপ’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুসারে ৯টি ব্যাংকে জ্বলছে লাল বাতি, আরও ১২টির অবস্থা খুব খারাপ। সব মিলিয়ে ৩৮টি ব্যাংকে দুর্বল ব্যাংক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফলে সরকার এইসব ব্যাংক টিকিয়ে রাখার জন্য শত শত কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে। ঋণ খেলাপি, লুটেরা, টাকা পাচারকারীদের বাঁচিয়ে রাখতে ভর্তুকি দিলেও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ইফতার করার জন্য খেজুর আমদানির জন্য ভর্তুকি দিচ্ছেন না।’

তিনি বলেন, ‘খেজুর আমদানির জন্য ভর্তুকি না দিয়ে উল্টো বেশি করে শুল্ক আরোপ কোনো সাধারণ অপরাধ নয়, রীতিমতো মহাপাপ। শুধু খেজুর নয়, সরকারের সিন্ডিকেটবান্ধব লুটপাটের নীতি ও চরম ব্যর্থতায় নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। বাজারে চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, চিনি, আটা, ময়দা, ছোলা, বেসন, লেবু, শসা, মাছ-মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি পণ্যের দাম মানুষের আয় থেকে দুস্তর ব্যবধান।’

রিজভী বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ এই কারণে যে, সিন্ডিকেটবাজরা সকলেই সরকারের আশ্রিত লোক। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে হাজার হাজার মাইল দূরে কোথায় কোন দেশে যুদ্ধ হচ্ছে দুর্নীতিবাজ সরকার সেইসব অজুহাত তুলছে। প্রতিদিন দাম বাড়ার নানান ধরনের উদ্ভট কারণ আবিস্কারে ব্যস্ত সরকার।’

তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা সিন্ডিকেটের পক্ষে অবস্থান নিয়ে জনগণকে হাইকোর্ট দেখাচ্ছেন। অথচ, বাস্তবতা ভিন্ন। গত শুক্রবার প্রকাশিত জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশনের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিশ্ববাজারে টানা ৭ মাসেরও বেশি সময় ধরে প্রতিটি খাদ্যপণ্যের দাম কমছে অব্যাহতভাবে। জাতিসংঘ বলছে, ২০২৩ সালের জুলাই মাস থেকে বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম কমতে শুরু হয়েছে। বিশেষ করে গত ৭ মাসে দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের দাম ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ, ভোজ্য তেলের দাম ১১ শতাংশ এবং মাংসের দাম দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে। সারাবিশ্বে দাম কমলেও বাংলাদেশে প্রতিদিন কেবল বাড়াচ্ছে জনগণের ‘পকেট কাটা সরকার’।’

রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়া-কমার সঙ্গে বিশ্ব পরিস্থিতির সম্পর্ক নেই, সম্পর্ক আওয়ামী লুটেরাদের সঙ্গে। আওয়ামী লুটেরা আর টাকা পাচারকারীদের দমন করা না গেলে কখনোই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আসবে না।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ। দেশে ৯০ ভাগের বেশি মুসলমান। সুতরাং রমজান মাস জুড়ে সাধারণত সারাদেশের সকল স্কুল কলেজ কিংবা মাদ্রাসা-সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকতো। অথচ, এবার ব্যতিক্রম। সরকার রমজানের অর্ধেক মাস দেশের সকল স্কুল কলেজ মাদ্রাসা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। বিষয়টি গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। প্রশ্ন হচ্ছে, সরকার ধর্মীয় সংস্কৃতি সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয় নিয়ে কী কারণে বিতর্ক তৈরি করতে চায়? রমজান মাসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা, ইফতার পার্টি নিষিদ্ধ অর্থাৎ সরকার বাংলাদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় সংস্কৃতি-বিশ্বাসের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি বিষয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিতর্ক সৃষ্টি করছে।’

সারাবাংলা/এজেড/ইআ

খেজুরের দাম টপ নিউজ রুহুল কবির রিজভী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর