৫০০ কোটি টাকার পোশাক বিক্রির আশা রাজশাহীর ব্যবসায়ীদের
২৫ মার্চ ২০২৪ ০৮:৩৬
রাজশাহী: ঈদুল ফিরতে আসতে বাকি আর মাত্র দুই সপ্তাহ। এর মধ্যেই জমে উঠেছে রাজশাহী নগরীর ‘ঈদ শপিং’। বিপণিবিতান ও মার্কেটগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় কদিন হলো। ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের জের ধরে গত বছর পর্যন্তও তারা ভালো ব্যবসা করতে পারেননি। এবার তাই ভালো বেচাকেনা আশা করছেন তারা। তাদের প্রত্যাশা, এবার বেচাকেনা ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
এদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিটি পোশাকের দামই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেশি। ঈদুল ফিতরে নারী ও শিশুদের পোশাকের বিক্রি বেশি হয়। সেসব পোশাকের দামও যেন এর মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশি। নতুন পোশাকের পসরা সাজানো বিক্রেতাদের দাবি, পাইকারিতেই এবার তাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে পোশাক। আর ক্রয়মূল্য বেশি হওয়ার কারণেই তাদের বেশি দামে বিক্রিও করতে হচ্ছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, রাজশাহীর সাহেববাজার, আরডিএ মার্কেট ও গণকপাড়া এখন বেশ সরগরম। রমজানের প্রথম ১০ দিন পার হতে না হতেই এসব এলাকায় বিপণিবিতানগুলোতে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে।
প্রতি বছরের মতো এবারও ভিন্ন ভিন্ন নামের পোশাক এসেছে বাজারে। এ বছর আলিয়া কাট, আরিগ্রাউন্ড, ইন্ডিয়ান গ্রাউন্ড, নাইরা কাট, সারারা, গাড়ারা ও পাকিস্তানি গাউন বেশি চলছে। এর মধ্যে ক্রেতাদের প্রধান আকর্ষণে পরিণত হয়েছে নারীদের ‘আলিয়া কাট’ আর ‘নাইরা কাট’ জামা। এ ছাড়া বাচ্চাদের পোশাক, বিশেষ করে বিভিন্ন নকশার পাঞ্জাবিতেও রয়েছে সমান আকর্ষণ। ১২০০ থেকে শুরু করে ১৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব পোশাক।
নগরীর সাহেববাজারে অবস্থিত আরডিএ মার্কেটের ক্রেতাগোষ্ঠী প্রধানত মধ্যম আয়ের মানুষ। এবারও এই মার্কেটে বাহারি রঙের পোশাক এসেছে। তবে দাম বেশি বলে অসন্তুষ্টি জানাচ্ছেন ক্রেতারা।
বাবা মমিনুল ইসলামের হাত ধরে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছিল ছোট্ট শিশু মাসুদা। তারও পছন্দ ‘নাইরা কাট’ জামা। বাবা মমিনুল ইসলাম বলেন, “দাম অনেক বেশি। গতবারে চেয়ে অন্তত দেড় থেকে দ্বিগুণ বেশি দামে পোশাক বিক্রি হচ্ছে। এখন উৎসব তো, যত কষ্টই হোক না কেন, বাচ্চাদের নতুন পোশাক কিনে দিতেই হবে। একটা ‘নাইরা কাট’ জামা কিনেছি, ১৮০০ টাকা নিয়েছে। এটা অনেক বেশি।”
রাজশাহীর আরডিএ মার্কেটের বিক্রেতা মাসুদ রানা সারাবাংলাকে বলেন, রোজার প্রথম থেকেই ক্রেতারা ঈদের কেনাকাটা করতে আসতে শুরু করেছেন। গত বছরের চেয়ে এ বছর সব পোশাকের দামই বেড়েছে। এবার বেশি আলিয়া কাট, আরিগ্রাউন্ড, ইন্ডিয়ান গ্রাউন্ড, নাইরা কাট, সারারা, গাড়ারা ও পাকিস্তানি গাউন। তবে তরুণীদের বেশি আগ্রহ আলিয়া কাট ও নাইরা কাটে। এগুলো মানভেদে ১২০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর সব বিপণিবিতান আর বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শোরুমগুলোও ঝলমলে আলোতে সাজানো হয়েছে। বিক্রেতারা আশাবাদী এবারের ঈদবাজার নিয়ে। ফড়িং রাজশাহী শাখার ম্যানেজার এমরান হোসেন বলেন, আমরা ঈদকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছি। নতুন নতুন নকশার বিভিন্ন ফ্যাশনের পণ্য আনা হয়েছে। বিশেষ করে নাইরা কাটিং, সিকুন্সের পাঞ্জাবি, বিভিন্ন নিজস্ব ডিজাইনের থ্রিপিস আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ঈদ আসতে অনেক সময় এখনো বাকি। আমরা আশা করছি অনেক ক্রেতা হবে। তবে এখন পর্যন্ত ক্রেতা আসলেও তেমন ব্যবসা জমে ওঠেনি। আশা করি শেষ ১০ দিনে বেশ ভালো জমে উঠবে বেচাকেনা।
রাজশাহীর আড়ংয়ে শাড়ি কিনতে এসেছিলেন শাহনাজ পারভীন। তিনি বলেন, রোজার দিনে একটু স্বাচ্ছন্দ্যে কিনতেই আমি সাধারণত এই শো-রুমগুলোতে আসি। তবে এবার ইদের শাড়িগুলোর দাম একটু বেশি। তবে নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাক আছে। এতেই খুশি আমরা।
রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দোর আলী বলেন, রাজশাহী জেলায় এখনো তেমন কেনাকাটা জমে ওঠেনি। সাধারণত ঈদের শেষ ১০ দিনে বাজার জমে ওঠে। এবারও তাই হবে। আমরা আশা করছি, এবারের ঈদে শুধু ৫০০ কোটি টাকার জামা-কাপড় বেচাকেনা হবে।
সারাবাংলা/টিআর
ঈদ শপিং ঈদের কেনাকাটা ঈদের পোশাক ঈদের বেচাকেনা পোশাক বিক্রি রাজশাহী