Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জাতীয় ঈদগাহে কর্মযজ্ঞ, চলছে ঈদ জামাতের প্রস্তুতি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৬ মার্চ ২০২৪ ১৭:২৭

আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ঈদের প্রধান জামাত হবে জাতীয় ঈদগাহে। তাই চলছে প্রস্তুতির কর্মযজ্ঞ। ছবি: হাবিবুর রহমান/ সারাবাংলা

ঢাকা: ঈদুল ফিতরের বাকি আর দুই সপ্তাহ। এর মধ্যেই ঈদ ঘিরে যাবতীয় প্রস্তুতি চলছে সংশ্লিষ্ট সব জায়গাতেই। বাকি নেই জাতীয় ঈদগাহ ময়দানও। ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় এই মাঠেই। রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি ও মন্ত্রিপরিষদ সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও এখানেই ঈদের নামাজ আদায় করে থাকেন। সেই ঈদ জামাতের জন্যই এখন রীতিমতো কর্মযজ্ঞ চলছে জাতীয় ঈদগাহে।

রাজধানী ঢাকায় সুপ্রিম কোর্টের পাশেই অবস্থান জাতীয় ঈদগাহের। রমজানের শুরু থেকেই ঈদুল ফিতরের নামাজের জন্য এখানে কাজ শুরু হয়েছে। কাজ অনেকটা এগিয়েও গেছে। সেখানে নিযুক্ত শ্রমিকরা জানালেন, যথাসময়েই তারা সব কাজ ঠিকঠাকমতো শেষ করে ফেলবেন।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৬ মার্চ) রমজানের ১৫তম দিনে জাতীয় ঈদগাহ মাঠ ঘুরে দেখা যায়, মাঠজুড়ে চলছে প্যান্ডেল তৈরি ও মাটি ভরাটসহ মাঠ সজ্জার বিভিন্ন ধরনের কাজ। প্রতিদিন অন্তত দেড় শ শ্রমিক প্যান্ডেল তৈরির কাজ করছেন।

প্রতিদিন প্রায় দেড় শ শ্রমিক ঈদ জামাতের প্যান্ডেলের জন্য বাঁশের অবকাঠামো তৈরির কাজ করছেন। ছবি: হাবিবুর রহমান/ সারাবাংলা

মাঠ ঘুরে দেখা যায়, বাঁশের খুঁটি বসানোর কাজ অনেকটা এগিয়ে গেছে। যতটুকু কাজ বাকি আছে, তার জন্য মাঠের কয়েকটি জায়গায় বাঁশ স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে মাঠের মধ্যে মিনার ও ইমামের মেহেরাব বরাবর উত্তর থেকে দক্ষিণ পাশ পর্যন্ত সবচেয়ে উঁচু বাঁশের খাটালসহ (খুঁটির সারি) মোট সাতটি খাটাল বসানো হয়েছে। পুরো মাঠে মোট ১৬টি খাটাল (খুঁটির সারি) বসবে।

শ্রমিকরা জানালেন, বাঁশের কাঠামো তৈরির কাজ শেষ হলে শুরু হবে তাঁবু টাঙানোর কাজ। বৃষ্টি এলেও যেন পানি প্যান্ডেলের ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য তাঁবু দেওয়া হবে পুরো মাঠজুড়ে। তাঁবুর নিচে দেওয়া হবে সাদা পর্দা (সামিয়ানা)। এরপর সেট করা হবে ফ্যান।

বিজ্ঞাপন

প্যান্ডেল তৈরির কাজে নিয়োজিত শ্রমিক রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরই আমরা প্যান্ডেল তৈরির কাজ করে থাকি। প্রথম রোজার দিন থেকে কাজ শুরু হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ১৫০ জনের মতো শ্রমিক কাজ করছি।

এরই মধ্যে বাঁশের অবকাঠামোর অর্ধেকেরও বেশি অংশের কাজ শেষও হয়ে গেছে। ছবি: হাবিবুর রহমান/ সারাবাংলা

এ ছাড়াও ভেতরে নামাজের জায়গা, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা তৈরি এবং সাদা কাপড় দিয়ে সজ্জিত করার জন্য মাঠের ভেতরের অংশে মাটি ঢেলে সমতল করা হচ্ছে। এসব কাজ আগাামী এক সপ্তাহের মধ্যেই শেষ হয়ে আসবে বলে জানালেন শ্রমিকরা।

পুরো প্যান্ডেলের কাজ শেষ করার পর নিরাপত্তা বাহিনীর তদারকিতে বসানো হবে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসি ক্যামেরা)। নিরাপত্তা বাহিনীকে ঈদগাহ ময়দান বুঝিয়ে দেওয়ার পর ঈদের দিন নামাজের পর পর্যন্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোরভাবে মনিটরিং করবে পুলিশ।

আগের বছরগুলোর মতো এবারও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে জাতীয় ঈদগাহের প্যান্ডেল নির্মাণের টেন্ডার পেয়েছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পিয়ারু সর্দার অ্যান্ড সন্স ডেকোরেটরের ব্যবস্থাপক মো. মোজাম্মেল হক।

সারাবাংলাকে মোজাম্মেল বলেন, আমার কাজ শুধু প্যান্ডেল নির্মাণ করা। ২৬-২৭ রোজার মধ্যেই আমরা প্যান্ডেল নির্মাণের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা হাতে নিয়ে কাজ করছি। এখন পর্যন্ত ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলা যেতে পারে।

শ্রমিকরা জানাচ্ছেন, প্রথম রোজা থেকেই তারা কাজ করছেন। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষও করে ফেলবেন। ছবি: হাবিবুর রহমান/ সারাবাংলা

ধর্ম মন্ত্রণালয় ঈদুল ফিতর উদ্‌যাপনের জন্য সরকারি কর্মসূচি নির্ধারণে এরই মধ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা করেছে। ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত হবে জাতীয় ঈদগাহে। প্রতিকূল আবহাওয়া প্রতিকূল কিংবা অন্য কোনো কারণে সেটি সম্ভব না হলে তখন ঈদের প্রধান জামাত হবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে।

জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আবু নাছের সারাবাংলাকে বলেন, এবার জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত হওয়ার কথা রয়েছে। সে লক্ষ্যেই আমরা কার্যক্রম শুরু করেছি। ঈদের আগে অন্তত দুয়েক দিন হাতে রেখে মাঠের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

জাতীয় ঈদগাহ মাঠসহ আশপাশে নারী-পুরুষ মিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। জাতীয় ঈদগাহ মাঠে রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, কূটনীতিক, সচিবসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ঈদ জামাতে অংশ নেবেন।

সারাবাংলা/ইউজে/টিআর

ঈদগাহ ময়দান ঈদগাহের প্রস্তুতি ঈদের জামাত ঈদের নামাজ ঈদের প্রধান জামাত জাতীয় ঈদগাহ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর