Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জলদস্যুদের হাতে জিম্মি সাইদুজ্জামান, ঈদের আনন্দ নেই পরিবারে

আব্দুর রউফ পাভেল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৫ এপ্রিল ২০২৪ ১১:২৯

ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামানের পরিবার

নওগাঁ: ‘মোবাইলটা সবসময় কাছেই রাখি। অপর প্রান্ত থেকে শুনতে পাব আমার ছেলে মুক্তি পেয়েছে। ছেলের একটি ফোনের আশায় এখন দিন কাটছে।’ কান্নাজরিত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামানের বাবা অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল কাইয়ুম।

তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে এবার ঈদে বাড়িতে আসার কথা ছিল। বলেছিল, বাবা ঈদে বাড়ি যাব। ছুটি নিয়ে সবাই মিলে ঈদ করব একসঙ্গে। কিন্তু ভাগ্যের কি পরিহাস ছেলে আমার হাজার-হাজার মাইল দূরে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হয়ে আছে। বাড়িতে নেই ঈদের আনন্দ। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আশায় প্রহর গুনছি।’

বিজ্ঞাপন

গত ১২ মার্চ অপহৃত হওয়ার পর থেকেই ছেলের মুক্তির সংবাদের প্রতীক্ষায় সময় পার করছেন সাইদুজ্জামানের বৃদ্ধ মা-বাবা ও স্ত্রী। সন্তানকে ফিরে পেতে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করে সময় পার করছেন। আর মাঝে মধ্যেই ছেলের ছবি দেখছেন। প্রতীক্ষার প্রহর যেন তাদের শেষ হতে চাইছে না। তারা চান ঈদের আগেই যেন তার সন্তানের মুক্তি মেলে। কিন্তু সেই সম্ভাবনা অনেক ক্ষীণ। জাহাজ ছিনতাই হওয়ার পর সাইদুজ্জামানের ভাগ্যে কী ঘটছে? সেই শঙ্কায় ঈদের আনন্দ ও আমেজ নেই তার পরিবার ও স্বজনদের মাঝে।

সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাতে ভারত মহাসাগর থেকে জিম্মি হন বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ জন নাবিক। এদের মধ্যে জাহাজ ‘এমভি আব্দুল্লাহ’র চিফ ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান। ঈদের আগেই সরকার বা জাহাজ মালিকদের পক্ষ থেকে সু-সংবাদের অপেক্ষায় বন্দি সাইদুজ্জামানের বাবা, মা, স্ত্রী ও স্বজনরা।

ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান

ইঞ্জিনিয়ার এ এস এম সাইদুজ্জামান

পরিবার সূত্রে জানা যায়, সাইদুজ্জামান ২০ বছর ধরে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির জাহাজে কাজ করছেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামের গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান এস আর শিপিং লিমিটেডের মালিকানাধীন জাহাজে কাজ করছেন। এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজ এস আর শিপিং লিমিটেড কোম্পানির একটি জাহাজ।

বিজ্ঞাপন

সাইদুজ্জামানের বাবা আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘আমার হাজার-হাজার মাইল দূরে জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হয়ে আছে। প্রতিবছর ঈদের কেনাকাটা করলেও এবার কিছুই হয়নি। ছেলের সুস্থতা আর নিরাপদের ফিরে আসার অপেক্ষা করছি আমরা। দ্রুত আমাদের মাঝে ফিরে আসুক সেই কামনা করছি। মাঝে মাঝে যোগাযোগ করা যাচ্ছে জলদস্যুরা কোনো বাধা দিচ্ছে না। আর জাহাজ কোম্পানি ও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা চেষ্টা করছে ফিরিয়ে আনার।’

সাইদুজ্জামানের মা কোহিনূর বেগম বলেন, ‘আমাদের মাঝে ঈদের আনন্দ নেই। ছেলেকে দ্রুত ফিরে পেতে চাই। সরকার যেন দ্রুত ঈদের আগেই আমার ছেলেসহ অন্যদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়, সেই দাবি ও অনুরোধ করছি। ছেলেকে ছাড়া কিছুই ভালো লাগছে না। কবে ফিরে আমার বুকের ধন?’

সাইদুজ্জামানেরর স্ত্রী মান্না তাহরিন শতধা বলেন, ‘ঈদের আনন্দের চেয়ে বড় আনন্দ হবে যদি দ্রুত স্বামীকে ফিরে পেতাম। কবে ফিরবে কিছুই জানি না। সরকার যেন দ্রুত উদ্যোগ নেয়। খুব চিন্তার মাঝে দিন রাত পার করছি আমরা। যা বলে বোঝাতে পারব না। যেকোনো মূল্যেই আমার স্বামীকে যেন ফিরে নিয়ে আসা হয়। আমরা আর এমন কষ্ট আর সইতে পারছি না।’

সারাবাংলা/এনএস

এ এস এম সাইদুজ্জামান এমভি আব্দুল্লাহ নওগাঁ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর