Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে’

ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
১৮ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৩৫

ঢাকা: ১৯৭১ সালে গঠিত বিপ্লবী সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রকে পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতারা। তারা বলছেন, ঘোষণাপত্রটি পাঠ্যবইয়ের প্রধান অধ্যায় হওয়ার দাবি রাখে। এ ছাড়া ১০ এপ্রিলকে জাতীয়ভাবে প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে পালন করার দাবি জানান তারা।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের ৫৩তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সেমিনার কক্ষে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র: স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানের সৃষ্টিতত্ত্ব’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় সঞ্চালনা করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আইটি সেলের সভাপতি নাট্যজন নাট্যজন আসিফ মুনীর।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন (রিমি)।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিমিন হোসেন বলেন, ‘তরুণ প্রজন্মের অনেকেই এখন ১৭ এপ্রিলের কথা জানে না। আমরা তারে বিদ্যুৎ সঞ্চালন করতে পারিনি। ৫৩ বছরেও আমরা সবগুলো বিন্দু রেখাতে মেলাতে পারিনি।’

তিনি বলেন, “খুবই পরিষ্কার ভাষায় স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি লেখা হয়েছে। কেন আমাদের মুক্তিযুদ্ধ যৌক্তিক, সে সমস্ত বিষয় ‘যেহেতু… যেহেতু’ দিয়ে খুব সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে এখানে। অথচ আমরা নতুন প্রজন্মের কাছে সেটি ঠিকঠাক পৌঁছাতে পারিনি।”

আলোচনাসভায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক শহীদসন্তান অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী বলেন, ‘১০ ও ১৭ এপ্রিলের গুরুত্ব তুলে ধরার চেষ্টা করছি বিশবছর ধরে। তরুণরা এই দিবসগুলো নিয়ে খুব একটা বেশি জানে না। অথচ এটিকে সংবিধানের সৃষ্টিতত্ত্ব বলা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধ যে বিচ্ছিন্নতাবাদী কোনো ঘটনা ছিল না, সেটিই তো প্রমাণ করে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র। সেখানে প্রতিটি কথা যৌক্তিকভাবে উল্লেখ আছে। আমি তো মনে করি, পাঠ্যবইয়ের প্রধান একটি অধ্যায় হওয়া উচিত এটি। আমাদের সন্তানরা কেন ঘোষণাপত্রটি সম্পর্কে জানবে না? তারা কেন ব্যাখ্যা পড়বে না? কেন ইতিহাসটা তাদের জানা হবে না? ইতিহাস বিকৃতি দোষের কাজ। ইতিহাসের খণ্ডিত প্রকাশও বিকৃতির মধ্যে পড়ে।’

আলোচনাসভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, “১০ এপ্রিল গঠিত সরকারের গুরুত্বই এখানে যে, এটি ছিল গণপ্রজাতন্ত্রের প্রথম সরকার। যারা গঠন করেছিলেন, তাদের পরিষ্কার একটি দৃষ্টিভঙ্গি ছিলো। এখন সরকারি কাগজে লেখার সময় ‘গণপ্রজাতন্ত্রী’ শব্দটা বাদ পড়ে যায়। শুধু বাংলাদেশ সরকার লেখা হয়। এভাবেই বয়ানগুলো বদলে যায়।”

তিনি বলেন, ‘একটি নির্ভেজাল সিভিলিয়ান সরকারের আওতায় জনযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছিলো। জনগণ এই সরকারের নির্দেশেই যুদ্ধ করেছে। এটিই তো বড় গর্বের বিষয়।’

সভাপতির বক্তব্য একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘১৭ এপ্রিল বাংলাদেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ দিবস। ১৭ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহণ করে। সংবিধান গ্রহণ করার আগ পর্যন্ত এই সরকারের নির্দেশনাতেই সব চলেছে। এই সরকারের ঘোষণাপত্র যে অস্বীকার করবে, সে দেশোদ্রহী। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশে সেটিই হচ্ছে। বিএনপি জামায়াত এটি করে আসছে। জিয়াউর রহমানকে তারা স্বাধীনতার ঘোষক বলা শুরু করেছে। অথচ জিয়াউর রহমান নিজেই বিচিত্রায় ছাপা তার এক লেখায় বঙ্গবন্ধুকে ঘোষক হিসেবে স্বীকার করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর অনেক দেশ ঘোষণাপত্র দিয়ে স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু, বাংলাদেশের যে ঘোষণাপত্র, এর মতো তাৎপর্যপূর্ণ অন্য আর একটি নেই’

এ সময় শাহরিয়ার কবির ১০ এপ্রিলকে জাতীয়ভাবে প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে পালন করার দাবি জানান।

তিনি বলেন, ‘যারা এই ঘোষণা অস্বীকার করে, তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। এ ঘোষণাপত্র পাঠ্যবইয়ের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’

আলোচনাসভায় অন্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকসহ অনেকে।

সারাবাংলা/আরআইআর/একে

ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি টপ নিউজ মুক্তিযুদ্ধ মুনতাসীর মামুন শাহরিয়ার কবির


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর