আদালতের নির্দেশ অমান্য করে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়ার অভিযোগ
২৬ এপ্রিল ২০২৪ ২১:২৭
ঠাকুরগাঁও: আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ভেলাজান আনছারিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যদিও বেশিরভাগ প্রার্থী প্রবেশপত্র না পেয়ে এই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি। এতে মোট প্রার্থী ছিলেন ৩১ জন, এর মধ্যে পরূক্ষায় অংশ নেন মাত্র ৮ জন। যদিও এই পরীক্ষা অনুষ্ঠানের বিষয়ে আদালতের বেশ কয়েকটি নির্দেশনা ছিল।
শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজে অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে এ নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভেলাজান আনছারিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসায় অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগের জন্য ২০২২ সালে মাদরাসা কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুযায়ী একই বছরের ২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় এক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। বিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে ওই পদে ৩১ জন চাকরিপ্রার্থী আবেদন করেন।
পরবর্তীতে গোপনে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করলে মো. মোসাদ্দেক আলী নামে এক প্রার্থী নিয়োগ পরীক্ষায় অস্বচ্ছতা ও স্বজনপ্রীতি হওয়ার আশঙ্কায় ওই মাদরাসার সভাপতি সুলতান আলী চৌধুরীসহ ১৭ জনকে বিবাদী করে জেলার সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন। এতে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ ছিলো।
পরে আদালত মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়ে একটি নোটিশ দেয়। এতে বলা হয়েছিল, বাদিসহ বাকি যেসব প্রার্থী রয়েছেন তাদের কাছে অবশ্যই প্রবেশপত্র ইস্যু করতে হবে। ইস্যু বলতে প্রবেশপত্র হাতে পেয়েছেন এমন নিশ্চিত করতে হবে এবং সব বৈধ প্রার্থীদের অংশগ্রহণ করে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য বলা হয়েছে।
কিন্তু আদালতের এই নির্দেশনা ভঙ্গ করে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ অন্য প্রার্থীদের প্রবেশপত্র না দিয়ে অল্প সময়ে তড়িঘড়ি করে নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করেন। অনেকেই নিয়োগ পরীক্ষার কয়েক ঘণ্টা আগে প্রবেশপত্র হাতে পেয়েছেন বলে জানা গেছে।
ভুক্তভোগী মোসাদ্দেক আলী বলেন, ‘ভেলাজান আনছারিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসার অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে আমি আবেদন করেছি। মাদরাসার সভাপতি ও ম্যানেজিং কমিটি গোপনে অবৈধ ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে গত ২০২৩ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার উদ্যোগ নেয়। পরবর্তীতে সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করি। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ শুক্রবার বেলা ১২টায় শুনি যে, ওই পদে পরীক্ষা ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজে চলছে। অথচ আমার কাছে কোন প্রবেশপত্র আসেনি। পরে আমি অধ্যক্ষের নিকট প্রবেশপত্র চাইলে তিনি জানান, মামলার মাধ্যমে প্রবেশপত্র দেওয়া হবে।’
অন্য চাকরিপ্রার্থীরা বলছেন, তাদের না জানিয়েই ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজে অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর পদে পরীক্ষার জন্য তাদের পছন্দের প্রার্থীদের ডেকে নেয়া হয়। এতে ৮ জন প্রার্থী অংশ নেন। বাকি ২৩ জনকে জানানো হয়নি।
এ বিষয়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ খোরসেদ আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
মাদ্রাসার সভাপতি সুলতান আলী চৌধুরী বলেন, ‘সব চাকরি প্রার্থীকে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়েছে। কেউ যদি না আসে তাহলে তো তাকে জোর করে আনা যাবে না।’
এ বিষয়ে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধি শরিফুল ইসলাম নিয়োগ পরীক্ষার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সারাবাংলা/এমও