গণতন্ত্র ও সুশাসনের জন্য শেষ লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিন: রিজভী
৪ মে ২০২৪ ১৪:৫০
ঢাকা: দেশে গণতন্ত্র, সুশাসনের জন্য সর্বশেষ লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শনিবার (৪ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানবন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এ আহ্বান জানান। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিবের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ মানববন্ধন আয়োজন করা হয়।
রিজভী বলেন, ‘প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ এক সঙ্গে চালাতে হবে। না হলে আরও অনেক হাবিবুর রশিদ হাবিবকে কারাগার যেতে হবে। প্রতিকার পাওয়া যাবে না। কারণ, হাইকোর্ট আওয়ামী লীগ, পুলিশ আওয়ামী লীগ, প্রশাসন এর ডিসি এসপিরা ছাত্রলীগ। এরকম একটা পরিবেশে মানুষের দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কোনো ন্যায় বিচার নেই। সুতরাং গণতন্ত্র ও সুশাসনের জন্য শেষ লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিন।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দুদিন ধরেই বলছেন তাকে নাকি কিছু রাজনৈতিক দল উৎখাতের চেষ্টা করছে। আমার কথা হচ্ছে- রাজনৈতিক দল উৎখাতে চেষ্টা করবে কেন? আপনি, আপনার সরকার উৎখাত হোক এটা তো জনগণ চাচ্ছে। আর ক্ষমতায় আসা না আসা কোন রাজনৈতিক দলের ওপর নির্ভর করে না, জনগণের ওপর নির্ভর করে। আপনি জনগণের মালিকানা কেড়ে নিয়েছেন, ভোটার অধিকার কেড়ে নিয়েছেন, বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছেন। আপনার ক্ষমতা চলে যাক এটা জনগণ চায়।
‘৭৮, ৭৯ সাল থেকে গণতন্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে’— প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র,রাষ্ট্র,সরকারের আভিধানিক অর্থ জানি। পলিটিক্যাল সায়েন্স ও ডিকশনারি তে এর অর্থ আছে। কিন্তু শেখ হাসিনার যে কথাবার্তা চিন্তা ধারা সেটা জানতে হলে শেখ হাসিনার জন্য আলাদা একটা ডিকশনারি বা পলিটিকাল সায়েন্স ডিপার্টমেন্ট খুলতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার গণতন্ত্রের নমুনা হলো কক্সবাজারের কুখ্যাত ব্যক্তি বদি প্রকাশ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান নুর আলমকে পিস্তল দেখিয়েছে যে, কেন সে আবার উপজেলা নির্বাচন করবে। সরিষাবাড়ীতে আওয়ামী লীগের যিনি প্রার্থী তিনি বলেছেন তার বিরুদ্ধে কোনো প্রার্থী দাঁড়াতে পারবে না। বরিশালের হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেছেন, তার মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে যে থাকবে তার নাকি হাত-পা ভেঙে দেওয়া হবে। এই হচ্ছে শেখ হাসিনার গণতন্ত্রের নমুনা। এই গণতন্ত্র তিনি চালু করেছেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘এই গণতন্ত্র তিনি চালু করেছেন ৫ জানুয়ারি ২০১৪, ২০১৮ এবং ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে। তার মত অনুযায়ী গণতন্ত্রের ব্যাখ্যা দিতে হবে। বাংলাদেশে জনগণের অধিকার বলে যে কথাটা আছে তিনি তা মুছে দিয়েছেন, নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছেন। কারণ, তিনি যে দুঃশাসন চালাচ্ছেন তার বিরুদ্ধে যেন কেউ টু শব্দ করতে না পারে।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা উন্নয়নের কথা বলে। একটা প্রবাদ আছে অন্ধের হাতি দর্শন শেখ হাসিনার উন্নয়ন। মানুষ অভুক্ত, খেতে পারছে না তারপরও শেখ হাসিনার উন্নয়নের কথা বলতে হবে। আলু, পিয়াজ, বোরো চাষ করার জন্য কৃষকরা ৫০০০ টাকা ঋণ নেয় সেই ঋণ শোধ করতে না পারলে কৃষকদেরকে জেলে যেতে হয়। আর হাজার হাজার কোটি টাকা যারা ঋণ নিয়েছে তারা হচ্ছে ক্ষমতার ঘনিষ্ঠ। তারা প্রকাশ্য আলোতে ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং সরকারের পাশে থাকেন তারা। এটা শেখ হাসিনার সুশাসনের একটি নমুনা।’
সারাবাংলা/এজেড/এনইউ