সুন্দরবনে আগুন সম্পূর্ণ নেভানো পর্যন্ত কাজ চলবে: মন্ত্রণালয়
৫ মে ২০২৪ ২২:৪৮ | আপডেট: ৬ মে ২০২৪ ০৮:৫১
ঢাকা: একদিনেরও বেশি সময় পরে সুন্দরবনের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। তবে আগুন নিভলেও বনের মধ্যে আবারও আগুন লেগে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ কারণে নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আগামী কয়েক দিন সুন্দরবনে অগ্নি নির্বাপণসংশ্লিষ্ট কার্যক্রম চলমান রাখা হবে।
রোববার (৫ মে) সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আগুন লাগার সুনির্দিষ্ট কারণ নির্ণয়ে তদন্তের জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয় বলছে, আগুন লাগার স্থানের চারদিকে প্রায় পাঁচ একর জায়গাজুড়ে ফায়ার লাইন কেটে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। তবে যেহেতু আগুন মাটির নিচ দিয়ে গাছের শেকড়ের মধ্যে দিয়ে বিস্তৃতি লাভ করছে, তাই সতর্কতার সঙ্গে আগুন নেভাতে হচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও আগামী কয়েক দিন এখানে অগ্নি নির্বাপণসংশ্লিষ্ট কার্যক্রম চলমান রাখা হবে। কারণ ‘ফরেস্ট ফায়ার’ আপাত নিভে গেছে বা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে মনে হলেও আবার যেকোনো নতুনভাবে সৃষ্টি ও বিস্তৃতি লাভ করতে পারে।
আরও পড়ুন- নেভেনি সুন্দরবনের আগুন, নিয়ন্ত্রণে লাগবে আরও ৩ দিন
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, শনিবার দুপুর আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে আগুন লাগার ঘটনা প্রথম জানা যায়। সঙ্গে সঙ্গে বন বিভাগের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিস এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বন বিভাগের কর্মীরা স্থানীয় কমিউনিটি প্যাট্রোলিং গ্রুপ, ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম এবং স্থানীয় জনগণের সহায়তায় আগুন লাগার চারপাশে ফায়ার লাইন কাটার কাজ শুরু করেন। কিন্তু সে সময় ভাটার কারণে খালে কোনো পানি না থাকায় আগুনে পানি দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে রাতেই বন বিভাগের নিজস্ব ফায়ার ফাইটিং ইকুপমেন্ট ও পানি দেওয়ার মেশিন এনে সেটি রেডি করে পাইপ লাগিয়ে সেট করে রাখা হয়। রোববার ভোর থেকেই বন বিভাগের কর্মী, ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় জনগণ, সিপিজি, সিএমসির লোকদের নিয়ে আগুন লাগার স্থানে চারদিকে ফায়ার লাইন কাটার পাশাপাশি পানি দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ পুরোদমে শুরু করেন।
বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় বলছে, বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের আওতাধীন চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়া ক্যাম্পের বনাঞ্চলের আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। আগুন গাছের ওপরে বা ডালপালায় বিস্তৃত হয়নি, কেবল মাটির ওপরে বিক্ষিপ্তভাবে বিস্তৃত হয়েছে। ঘটনাস্থলে বন বিভাগের পাশাপাশি ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট, নৌবাহিনী, পুলিশ, জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সিপিজি, স্বেচ্ছাসেবক ও স্থানীয় জনগণ অগ্নি নির্বাপণে সহায়তা করছেন। এ ছাড়া বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারও অগ্নি নির্বাপণে ওপর থেকে পানি ছিটিয়ে সহায়তা করেছে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ সুন্দরবনের আগুন নির্বাপণ কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিকভাবে তদারকি ও সমন্বয় করছেন বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অবহিত আছেন এবং তিনি নিয়মিত খোঁজখবর রাখছেন। এ কর্মকাণ্ড সরেজমিনে তদারকি করতে প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী সুন্দরবনের ঘটনাস্থলে গেছেন।
সারাবাংলা/আরএফ/টিআর