ময়মনসিংহে প্রস্তুত কোরবানির পাঁচ লাখেরও বেশি গবাদি পশু
৬ মে ২০২৪ ০৯:৩৯
ময়মনসিংহ: পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ময়মনসিংহ বিভাগের ৪ জেলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত আছে গরু, ছাগল, মহিষ ও ভেড়া মিলিয়ে ৫ লাখ ৬১ হাজার ৭৮০টি নিরাপদ গবাদি পশু। বিভাগে কোরবানিযোগ্য গবাদি পশুর চাহিদা রয়েছে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৯৬টি এবং উদ্বৃত্ত ১ লাখ ৬৭ হাজার ৬৮৪টি।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্যমতে, এ বিভাগে গত বছর কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৩৩ হাজার ৭৮৯টি এবং চাহিদার তুলনায় ১ লাখ ৪৭ হাজার ৩৭৯টি পশু অতিরিক্ত ছিল।
এ বছর ময়মনসিংহ জেলায় কোরবানির জন্য ২ লাখ ৪৯ হাজার ৯২৬টি গবাদি পশু প্রস্তুত রয়েছে। চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার ৫৯৮টি। ষাঁড় ও গাভী মিলিয়ে মোট কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা ৮৪ হাজার ৬টি এবং মহিষ ১ হাজার ৮৪১টি, ছাগল ১ লাখ ৫৬ হাজার ৭০২টি ও ভেড়া ৭ হাজার ৩৭৭টি।
নেত্রকোনা জেলার কোরবানি উপলক্ষে গবাদি পশুর সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার ৮৮২টি এবং চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ৩৮৮টি।
জামালপুরে গবাদি পশুর সংখ্যা রয়েছে ৯৫ হাজার ১৭০টি ও চাহিদা আছে ৫১ হাজার ৫৩১ টি এবং শেরপুরে গবাদি পশুর সংখ্যা ৮৩ হাজার ৮০২টি ও চাহিদা আছে ৫৭ হাজার ৫৭৯টি।
প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ময়মনসিংহ বিভাগীয় পরিচালক ডা. মনোরঞ্জন ধর বলেন, ‘ময়মনসিংহসহ বিভাগের ৪ জেলায় খামারি এবং কৃষক পর্যায়ে কোরবানির জন্য ৫ লাখ ৬১ হাজার ৭৮০টি গবাদিপশু প্রস্তুত করা হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় ১ লাখ ৬৭ হাজারের বেশি। এবারও ক্রেতাদের চাহিদা এবং সুবিধার কথা চিন্তা করে পশুর হাটের পাশাপাশি অনলাইনে গবাদিপশু কেনাবেচার মাধ্যম রাখা হবে। হাটগুলোতে থাকবে প্রাণিসম্পদের ভেটেনারি মেডিকেল টিম। তাই আশা করা যায়, খামারিরা ন্যায্যমূল্য পাবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে তাপপ্রবাহের কারণে গবাদিপশু যাতে অসুস্থ না হয় সেজন্য আমাদের টিম সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছে। মাঠপর্যায়ে খামারিদের নিয়ে এই তাপপ্রবাহ মোকাবিলা করার জন্য তাদের মধ্যে ব্যানার, ফেস্টুন বিলি করা হচ্ছে, যাতে করে পশুদের এই গরমে সহনীয় পর্যায়ে সুস্থ রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।’
গবাদিপশু বা পোল্টির ঘর শীতল রাখার পরামর্শ দেন তিনি। এজন্য শেডের চালে ভেজা চট, বস্তা বা কাপড় বিছিয়ে দিলে ঘরের ভিতর তাপমাত্রা কমাতে তা সাহায্য করবে বলে জানান। ঘরের ভিতরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা এবং প্রয়োজনে ফ্যান ব্যবহার করা, একাধিকবার গোসল করানো, পাইপের সাহায্যে পানি ছিটিয়ে ভিজিয়ে দেয়া এবং গবাদিপশু বা পোল্টিকে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করার ব্যাপারে নির্দেশনা দেন।
এছাড়া দিনের অতিরিক্ত গরমের সময় খাদ্য সরবরাহ কম করা, প্রচণ্ড গরমে পারতপক্ষে কৃমিনাশক ব্যবহার বা টিকা দেওয়া ও পরিবহন পরিহার করতেও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় প্রাণিসম্পদ দফতরের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখার পরামর্শও দিয়েছেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের এই কর্মকর্তা।
খাতসংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পশুখাদ্যের কিছু উপকরণের দাম বেড়ে এখন দ্বিগুণের বেশিতে। আবার ওষুধ, বিদ্যুৎ, কর্মচারীদের বেতনসহ সার্বিক উৎপাদন ব্যয় বাড়াতে হয়েছে খামারিদের। এর ধারাবাহিকতায় এবার গত বছরের তুলনায় কোরবানির পশুর দাম একটু বাড়তে পারে। খামারিরা গতবারের তুলনায় জমজমাট কোরবানির হাট এবং ভালো দামের আশা করছেন।
সারাবাংলা/এমও