বাংলাদেশ ব্যাংকের নিট রিজার্ভ ১৩.৭৬ বিলিয়ন ডলার
১৩ মে ২০২৪ ১৮:৪২
ঢাকা : এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন বা ১৬৩ কোটি ডলার পরিশোধের পর বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ কমে ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘরে নেমে এসেছে। এর ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও কমে এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে।
সোমবার (১৩ মে) পর্যন্ত সময়ে রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৮ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার। ২০১৪ সালের শুরুর দিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়ানোর পর আর কখনও নিচে নামেনি। এদিন নিট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, আকু একটি আন্তঃদেশীয় লেনদেন নিষ্পত্তি ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে প্রতি দুই মাস অন্তর বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তানের মধ্যকার লেনদেনের দায় পরিশোধ করা হয়। একসময় শ্রীলঙ্কা আকুতে থাকলেও অর্থনৈতিক সংকটের কারণে গত বছর তারা নিজ থেকেই বেরিয়ে যায়।
এদিকে আইএমএফ থেকে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। এ ঋণের জন্য বিভিন্ন শর্ত মানতে হচ্ছে। আইএমএফ আগামী জুনে রিজার্ভ সংরক্ষণের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ১৪ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করেছে। ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি ছাড়ের সময় অবশ্য শর্ত ছিল আগামী জুনে ২০ দশমিক ১১ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ রাখতে হবে। গত মার্চে নিট রিজার্ভ রাখার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয় ১৯ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, ডলার সংকটের কারণে গত দুই বছর ধরে আমদানির পরিমাণ ব্যাপকহারে কমেছে। অন্যদিকে ডলার আসার (আন্তঃপ্রবাহ) তুলনায় বেশি চলে যাওয়ার (বহিঃপ্রবাহ) বেশি হওয়ায় ধারাবাহিকভাবে রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। গত রমজান ও ঈদের কারণে বেশ কিছু পণ্যের আমদানি বেড়ে যাওয়ায় গত মার্চ-এপ্রিল এই দুই মাসে আগের মাসের তুলনায় আকুর পেমেন্ট বেশি করতে হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি সময়ের জন্য আকু বিল বাবদ পরিশোধ করতে হয়েছিল ১.২৯ বিলিয়ন ডলার। সে সময় এ দায় পরিশোধের পর দেশের রিজার্ভ কমে দাঁড়িয়েছে ২০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যমতে, বেসরকারি ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়কালে ৪৪.৩১ বিলিয়ন ডলারের এলসি নিষ্পত্তি করেছে, যা এক বছর আগের একই সময়ের ৫১.৪৮ বিলিয়ন ডলারের চাইতে ১৩.৯৩ বিলিয়ন ডলার কম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে, গত ৮ মে বিপিএম-৬ পদ্ধতি অনুযায়ী দেশের রিজার্ভ ছিল ১৯.৮২ বিলিয়ন ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের নিট রিজার্ভের হিসাব প্রকাশ না করলেও তা ১৪ বিলিয়ন ডলারের ঘরে রয়েছে বলে জানিয়েছেন নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তারা।
এদিকে আজ আকুর ১.৬ বিলিয়ন ডলার বিল পরিশোধ করার পর দেশের নিট রিজার্ভ ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণের শর্ত অনুযায়ী যে রিজার্ভ রাখার কথা, এ পরিমাণ তারচেয়ে কম।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা আশা করছেন, চলতি মাসের শেষদিকে বা আগামী মাসের শুরুতে আইএমএফের ঋণের তৃতীয় কিস্তি বাবদ ১.১৫ বিলিয়ন ডলার পাওয়া গেলে রিজার্ভ ফের বাড়বে।
সারাবাংলা/জিএস/একে