খালেদার জামিন চেম্বার আদালতে স্থগিত
২৯ মে ২০১৮ ১৫:৫৬
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নাশকতার দুই মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া ছয় মাসের জামিন স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। একই সঙ্গে এ বিষয়ে শুনানির জন্য ৩১ মে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ মে) চেম্বার আদালতের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ আদেশ দেন।
গতকাল সোমবার কুমিল্লায় নাশকতার দুই মামলায় খালেদা জিয়াকে ছয় মাসের জামিন দেন হাইকোর্ট। তবে তার বিরুদ্ধে নড়াইলের মানহানির মামলাটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন আদালত।
জামিনের এ আদেশ স্থগিত চেয়ে ওই দিনই চেম্বার আদালতে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
মঙ্গলবার আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।
আদেশের পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বেগম জিয়ার মুক্তি সরকারের সদিচ্ছার উপর নির্ভর করছে। সরকার চায় বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে তারা নির্বিঘ্নে বাংলাদেশে বাকশাল কায়েম করবে। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করবে। সেই স্বপ্ন কোনোদিনও স্বার্থক হবে না। সেটাই আমরা বিশ্বাস করি।’
তিনি বলেন, হাইকোর্ট খালেদা জিয়াকে দুটি মামলায় জামিন দিয়েছিল। এই জামিনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল আপিল বিভাগে যে প্রভিশনাল লিভ পিটিশন দায়ের করেছলাম। সেটির উপর আজ শুনানি হয়েছে। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আগামী ৩১ মে বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির দিন নির্ধারণ করেছে। সে অবধি হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের সদিচ্ছা না হলে খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন না, এ ধরনের বক্তব্য আদালত অবমাননাকর। কারণ এই দেশে আদালত আছে। আদালত জামিন দিচ্ছে আবার জামিন স্থগিতও করছে।
তিনি বলেন, তাদের (বিএনপি আইনজীবীদের) মামলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে এবং যে সমস্ত তথ্য-উপাত্ত আছে তার উপর নির্ভর করেই তাদের বক্তব্য দিতে হবে, যুক্তিতর্ক করতে হবে। মুখরোচক বক্তব্য দিয়ে তাদের কোনো লাভ হবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমি তো জ্যেতিষি না যে, বলতে পারবো খালেদা জিয়া কবে মুক্তি পাবেন বা পাবেন না। এটা সম্পূর্ণ আদালতের বিষয়। তবে এতটুকু বলতে পারি এ ধরনের অপরাধ করে পৃথিবীর কোনো দেশের কোনো রাষ্ট্র প্রধান কিন্তু পার পেতো না।
২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রাম থানার হায়দার পুলের একটি কাভার্ড ভ্যানে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই দিনই চৌদ্দগ্রাম থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে নাশকতার অভিযোগে মামলা হয়।
এ মামলায় ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্র দাখিল করে তদন্তকারী কর্মকর্তা। অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ ৩২ জনকে আসামি করা হয়।
এছাড়া ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি বাসে প্রেট্রোল বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা হয়। মামলায় খালেদা জিয়াসহ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করার অভিযোগে ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর নড়াইলের ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মানহানির মামলা হয়।
সারাবাংলা/এজেডকে/একে