হিন্দু পরিবারের বাড়ি দখল, নায়ক জায়েদ খানের ভাইয়ের বিরুদ্ধে রুল
২৯ মে ২০১৮ ১৬:১৫
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: পিরোজপুরে সার্জিকেয়ার ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক বিজয়কৃষ্ণ হালদারের পরিবারের নিরাপত্তা ও সম্পদভোগের অধিকার নিশ্চিত করতে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২৯ মে) বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি কাজী ইজারুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে বিজয় কৃষ্ণ হালদার ও তার পরিবারের নিরাপত্তা ও চলাচল নিশ্চিত করতে এবং সার্জিকেয়ার ক্লিনিকের সম্পত্তি রক্ষায় বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, পিরোজপুর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, মেয়র, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পিরোজপুর সদর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, ও বাড়ি দখলকারী যুবলীগ নেতা ও নায়ক জায়েদ খানের ভাই ওবায়দুল হকসহ আটজনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ২৭ মে পিরোজপুরে ‘বাড়ি দখল করতে যুবলীগ নেতার অবিশ্বাস্য কাণ্ড’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। রিটের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের একজন নাগরিক হওয়া সত্ত্বেও নিজের বাড়িতে স্বাধীনভাবে থাকার অধিকার তার রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী এ পরিবারের নিরাপত্তা বিধানের জন্য প্রশাসন দায়বদ্ধ। সেইভাবে প্রশাসন দায়িত্ব পালন করছে না। এ জন্য আমরা আদালতের কাজে নির্দেশনা প্রার্থনা করেছি। আদালত আমাদের আবেদন গ্রহণ করে রুল জারি করেছেন।’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিরোজপুর শহরের মাছিমপুরে সার্জিকেয়ার ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। নিজের গড়া এই ভবনের পাঁচতলায় অনেকটা বন্দিদশায় চিকিৎসক বিজয়কৃষ্ণ হালদারের পরিবার। বাসাটিতে গ্যাস নেই। বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগও বিচ্ছিন্ন। এ অবস্থায় নয় মাস ধরে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ গীতা রানী মজুমদার ও তার স্নাতকপড়ুয়া একমাত্র মেয়ে। পরিবারটিকে বের করে দিয়ে বাড়িটি দখল করতে পিরোজপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক ওবায়দুল হক ওরফে পিন্টু এই কাজ করেছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
গীতা রানী জানান, গত বছরের আগস্টে তাদের বাসার পানি ও বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। রান্নার জন্য গ্যাসের সিলিন্ডার আনতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। কারা এটা করছে—জানতে চাইলে গীতা রানী বলেন, বাড়ি ও ক্লিনিকটি পুরোপুরি দখল করে রেখেছেন ওবায়দুল হক। তিনিই পানি ও বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন। বাসায় আসা-যাওয়া করতে বাধা দিচ্ছেন, ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।
সারাবাংলা/এজেডকে/একে