Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ঢুকতে না দিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২০ মে ২০২৪ ১৫:৩৮

ঢাকা: কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে বিধিনিষেধ তুলে না নিলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম। সোমবার (২০ মে) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামে (ইআরএফ) অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সংবাদ সম্মেলনে এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন সংগঠনটির সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা।

ফোরামের সভাপতি বলেন, ‘ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে তড়িঘড়ির কারণে অস্থিরতা, ব্যাংক খাতের বর্তমান তারল্য সংকটের বিষয়টি সবার জানা। এসব সমস্যার সমাধান না করে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে জনমণে আতঙ্ক বেড়েছে। তথ্য প্রবাহ আটকানোর চেষ্টা দেশের জন্য বড় কোনো বিপদ ডেকে আনতে পারে, যা কাম্য নয়।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দ্রুত তুলে নিন। নইলে পেশাগত দায়িত্ব পালনের স্বার্থে সামনে কঠোর অবস্থানে যেতে বাধ্য হব।’

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারে কিনা তা নিয়ে কেউ–কেউ প্রশ্ন তুলেছেন উল্লেখ করে রেফায়েত উল্লাহ মীরধা বলেন, ‘এর আগে জানতে হবে অন্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কিনা? যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইট অনেক সমৃদ্ধ। সেখানে অর্থনীতির সব সূচকের নিয়মিত আপডেট ছাড়াও বোর্ড মিটিংয়ের কার্যবিবরণী, বিভিন্ন ব্যাংকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাসহ সব ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হয়। কোনো সাংবাদিক প্রশ্ন করলে দ্রুত রেসপন্স করা হয়।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এসব দেশের আর্থিক খাতের সুশাসনের মাত্রা অনেক উঁচুতে। পদ্ধতিগত কারণে সেখানে কোনো অনিয়ম–দুর্নীতির তথ্য আড়াল করা কঠিন। এছাড়া বেনামি ঋণ, ঋণখেলাপি, অর্থপাচারকারী বা অনিয়ম–দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত কেউ কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারে বলে আমাদের জানা নেই। এখন বাংলাদেশে সবার জন্য উন্মুক্ত রেখে কেবল সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আসলে কি তথ্য আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে আমরা সে প্রশ্ন রাখতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন হারানোর কারণে আর্থিক খাতের দূরবস্থার কথা বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ, গবেষকদের বক্তব্যে উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা, তদারকি ব্যবস্থার ভঙ্গুরতা, বিভিন্ন গোষ্ঠীর চাপে নীতির ধারাবাহিকতা রাখতে না পারার বিষয়টি সবার জানা। ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে তড়িঘড়ির কারণে অস্থিরতা, ব্যাংক খাতের বর্তমান তারল্য সংকটের বিষয়টি সবার জানা। এসব সমস্যার সমাধান না করে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় জনমনে আতঙ্ক আরও বাড়বে। তথ্য প্রবাহ আটকানোর চেষ্টা দেশের জন্য বড় কোনো বিপদ ডেকে আনতে পারে। যা কাম্য নয়।’

বর্তমান সরকার অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার কথা বলে আসছে মন্তব্যে করে রেফায়েত উল্লাহ মীরধা বলেন, ‘অথচ ৫৩ বছরের প্রথা ভেঙ্গে হঠাৎ করে বাংলাদেশ ব্যাংক সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যা সরকারের অবস্থানের বিপরীত।’

গত ২১ মার্চ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক অলিখিতভাবে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ বিষয়ে সমাধান চেয়ে ইআরএফেরপক্ষ থেকে এরইমধ্যে গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হয়েছে এবং দু’দফা চিঠিসহ বিভিন্নভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা আরও বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রায় দুই মাস হলেও সমস্যার সমাধান না করে এখন বিভিন্ন ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এরকম বাস্তবতায় আজকের এইসংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। এখানে আমি একটি বিষয় পরিষ্কার করতে চাই সাংবাদিকরা এর আগে নিজের কার্ড প্রদর্শনকরে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারতেন। এখন তা বন্ধ করা হয়েছে। হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় নানা গুজব ডালপালা মেলার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছে কিনা সে প্রশ্ন উঠছে।’

সারাবাংলা/জিএস/একে

ইআরএফ ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ইনজুরিতে মৌসুম শেষ রদ্রির
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১০:২৮

সম্পর্কিত খবর