Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুতের নির্দেশ, ঝুঁকিতে থাকাদের সরতে মাইকিং

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৫ মে ২০২৪ ২০:৪৪

চট্টগ্রাম ব্যুরো: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ এবং সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাব মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন। জানমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে নগরীর সাগর তীরবর্তী এলাকা এবং ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্র ও নিরাপদ স্থানে চলে যেতে মাইকিং শুরু করেছে সিটি করপোরেশন।

অন্যদিকে, জেলা প্রশাসন উপকূলবর্তী এলাকায় সব আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। প্রস্তত করা হয়েছে ২৯০টি মেডিকেল টিম।

শনিবার (২৫ মে) দুপুর থেকে নগরীর উপকূলবর্তী এলাকা ও বিভিন্ন পাহাড়ে রেড ক্রিসেন্টের টিম নিয়ে মাইকিং শুরু করা হয়। এ ছাড়া, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে নগরীর দামপাড়ায় বিদ্যুৎ বিভাগের কার্যালয়ে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে। যে কোনো প্রয়োজনে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ০১৮১৮৯০৬০৩৮ নম্বরে যোগাযোগের জন্য বলা হয়েছে।

চসিকের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন জানিয়েছেন, জরুরি প্রয়োজনে বিতরণের জন্য শুকনো খাবার মজুত রাখা হয়েছে। রোববার (২৬ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর টাইাগারপাসে অস্থায়ী নগর ভবনে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে দুর্যোগ মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণে সভা হবে।

এদিকে, শনিবার রাত ৯টায় জরুরি সভায় বসেছে জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি। সেখানে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা যোগ দিয়েছেন।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান সারাবাংলাকে বলেন, ‘চট্টগ্রামের উপকূলবর্তী সকল উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ২৯০টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। প্রায় পাঁচ শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার জন্য বলা হয়েছে।’

আবহাওয়া অধিদফতরের সবশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৮.২° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৯.৮° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি শনিবার (২৫ মে ) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ১ (এক) নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে অতিদ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এদিকে, চট্টগ্রাম নগরীসহ আশপাশের এলাকায় শনিবার দুপুরে হালকা বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে ভ্যাপসা গরম এখনও অব্যাহত আছে।

নগরীর পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ ও পূর্বাভাস কর্মকর্তা মেঘনাথ তঞ্চঙ্গ্যা জানিয়েছেন, চট্টগ্রামে শনিবার ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বইছে, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ দশমিক ১ ডিগ্রি বেশি। আগামী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামসহ আশপাশের এলাকায় অস্থায়ী অথবা দমকা ঝোড়ো হাওয়াসহ মাঝারি বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও ভারি বর্ষণের সম্ভাবনাও আছে।

গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল আছে। চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য ওঠানামায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়েছে। তবে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে। আবহাওয়া অধিদফতর তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেওয়ার পর চট্টগ্রাম বন্দর তাদের নিজস্ব অ্যালার্ট-১ জারি করেছে সতর্কতার অংশ হিসেবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক সারাবাংলাকে বলেন, ‘বন্দরের কার্যক্রমে এখনও কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে জেটিতে ও বহির্নোঙ্গরে থাকা জাহাজগুলোকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। জেটিতে পণ্য ওঠানামা ও ইয়ার্ড থেকে খালাসেও সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।’

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

আশ্রয়কেন্দ্র টপ নিউজ প্রস্তুত মাইকিং


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর