Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রার্থীদের আয় ও সম্পদ বৃদ্ধির উৎস খতিয়ে দেখা উচিত: টিআইবি

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৭ মে ২০২৪ ১৬:৪২

ঢাকা: ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশলান বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. মো. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্বাচনে প্রার্থীদের আয় বৃদ্ধি বিষয়টি নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যাদের সম্পদের বিবরণ দেওয়া হয়েছে তার উৎস খতিয়ে এবং আয়ের সঙ্গে সম্পদের বিকাশ সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা সেটা আইন অনুযায়ী খতিয়ে দেখা উচিত।

সোমবার (২৭ মে) ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে উপজেলা নির্বাচনের তৃতীয় ধাপের প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি। সংস্থাটির গবেষক রিফাত রহমান গবেষণাপত্রটি উপস্থাপন করেন। তৃতীয় দাপে ১১২টি উপজেলার মধ্যে ১১১ প্রার্থীর হলফনামা নির্বাচন কমিশন প্রকাশ করে। ওই প্রার্থীদের হলফনামায় দেওয়া আট ধরনের তথ্যের বহুমাত্রিক ও তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

টিআিইবি‘র নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আমাদের পর্যবেক্ষণে দেখা যাচ্ছে, যারা নির্বাচিত হননি তাদের তুলনায় নির্বাচিত ছিলেন সেই ধরনের প্রার্থীদের আয় ও সম্পদ বেশি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের আধিক্য দেখতে পাচ্ছি। আয় বৃদ্ধি হোক আমরাও চাই। অস্বাভাবিক হারে আয় বৃদ্ধি পচ্ছে, এমনকি পরিবারের আয়ও অস্বাভাবিক।

তিনি বলেন, প্রার্থীদের আয়কর রিটার্নের তথ্যের সঙ্গে হলফনামায় গরমিল রয়েছে, যে কারণে করনেট বৃদ্ধিতে জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থীদের জমা দেওয়া হিসাববিবরণী খতিয়ে দেখার জন্য ইসিও এনবিআরকে খতিয়ে দেখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের যেমন প্রার্থীদের বাতিলের এখতিয়ার রয়েছে, তেমন আইনগত প্রক্রিয়ায় জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রয়েছে। আবার করের বিষয়টি যদি বিবেচনা করা উচিত। আয়কর রিটার্নের তথ্যে সঙ্গে হলফনামার গরমিল রয়েছে সেটাও খতিয়ে দেখা উচিত। জনপ্রতিনিধি ও প্রার্থীদের যে হিসাব জমা দিয়েছেন সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় তা যদি আইনগতভাবে এনবিআর অনুসন্ধান করে, তাহলে করনেট বৃদ্ধি কথা বলে সেখানে সাফল্যজনক ফলাফল পাওয়া সম্ভব।

টিআাইবি‘র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তৃতীয় ধাপে এক হাজার ৪১৯ জন প্রার্থীর মধ্যে ৬৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। যদিও আয়ের বিবেচনায় প্রার্থীরা ৭১ দশমিক ৮৮ শতাংশ ব্যবসা হতে আয় দেখিয়েছেন। এ পর্যায়ে প্রার্থীদের মধ্যে কোটিপতি সংখ্যা ১০৬ জন আর ১০ লাখ টাকার ওপরে আয় করেন ১৬০ জন প্রার্থী। অন্যদিকে এক একর বা তার বেশি আয় করেন এমন প্রার্থীর সংখ্যা ৪২৬ জন। তিন ধাপের উপজেলা নির্বাচন হিসেবে ওই সংখ্যা গড় এক হাজার ৫৪৪ জন।

গবেষণায় বলা হয়েছে, সার্বিকভাবে প্রার্থীদের প্রায় ৩৭ শতাংশ আয় দেখিয়েছেন সাড়ে তিন লাখ টাকার নিচে অর্থাৎ করযোগ্য আয় নেই তাদের। সাড়ে ১৬ লাখ টাকার বেশি আয় দেখিয়েছেন ১০.৫ শতাংশ প্রার্থী। চেয়ারম্যান ও অন্যান্য প্রার্থীদের মাঝে উল্লেখযোগ্য আয় বৈষম্য লক্ষ্য করা গেছে। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রায় ২৪.২১ শতাংশ এর আয় সাড়ে ১৬ লাখ টাকার ওপরে। অন্যান্য প্রার্থীর ক্ষেত্রে এ হার ৩.৪৫ শতাংশ। আবার, চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রায় ১৯.৫ শতাংশের আয় সাড়ে তিন লাখ টাকার নিচে, অন্যান্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রে এ হার ৪৫.৭৪ শতাংশ। অর্থাৎ চেয়ারম্যান পদে অপেক্ষাকৃত ধনীরা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।

প্রার্থীদের মধ্যে ৭.৪৭ শতাংশ বা ১০৬ প্রার্থীর কোটি টাকার বেশি সম্পদ রয়েছে। পাঁচ বছরে প্রায় চার গুণ হয়েছে কোটিপতি প্রার্থীর সংখ্যা। প্রায় ২২.৫ শতাংশ প্রার্থীর ঋণ/দায় রয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ১৮৫ কোটি টাকা ঋণ/দায় রয়েছে একজন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর। ১৬ শতাংশ প্রার্থী বর্তমানে বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত। অন্যদিকে ১০ বছরে একজন চেয়ারম্যানের আয় বেড়েছে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৮৮৯. ৬৮ শতাংশ, ৫ বছরে এই বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ১০ হাজার ৪২২.০৪ শতাংশ। অন্যদিকে ১০ বছরে অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ৭৯৩ শতাংশ, ৫ বছরে স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের সম্পদ বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৪০০ শতাংশ। ৫ বছরে অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধিতে উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা পেছনে ফেলেছেন সংসদ সদস্যদের। একজন সংসদ সদস্যের অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৬৫ শতাংশ, যেখানে একজন চেয়ারম্যানের বেড়েছে সাড়ে ৯ হাজার ৮৫০.৬২ শতাংশ।

সারাবাংলা/জিএস/ইআ

উপজেলা নির্বাচন টপ নিউজ টিআইবি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ধানমন্ডি থেকে গ্রেফতার শাজাহান খান
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:৪৫

সম্পর্কিত খবর