Wednesday 09 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভোলায় রেমালের তাণ্ডবে সাড়ে ৭ হাজার বাড়িঘর বিধ্বস্ত, নিহত ৩

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৭ মে ২০২৪ ২৩:২১ | আপডেট: ২৮ মে ২০২৪ ০৯:৫৯

ভোলা: দুই দিন ধরে ঘূর্ণিঝড় রেমাল তাণ্ডব চালিয়েছে দ্বীপ জেলা ভোলায়। এতে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে প্রায় তিন শতাধিক গ্রাম। এ ছাড়া, ঘূর্ণিঝড়ে গাছ ও ঘরচাপা পড়ে নারী-শিশুসহ তিন জন নিহত হয়েছেন।

রোববার (২৬ মে) দিবাগত রাত সাড়ে ৪টার দিকে দৌলতখান পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে ঝোড়ো বাতাসে ঘরের ওপর গাছ পড়ে মাইশা নামের চার বছর বয়সী এক প্রতিবন্ধী শিশু নিহত হয়। নিহত মাইশা ওই ওয়ার্ডের মো. মনিরের মেয়ে।

বিজ্ঞাপন

অপরদিকে, প্রায় একই সময়ে লালমোহন উপজেলার পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বসত ঘরের নিচে চাপা পড়ে মনেজা খাতুন (৫৫) নামের এক নারী নিহত হন। নিহত মনেজা খাতুন ওই এলাকার আব্দুল কাদেরের স্ত্রী।

এ ছাড়া, সোমবার (২৭ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বোরহানউদ্দিন উপজেলার সাচড়া ইউনিয়নের ৬নম্বর ওয়ার্ডে গাছের ডাল পড়ে মো. জাহাঙ্গীর (৫০) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের দুই দিনের তাণ্ডবে প্রায় দুই লাখেরও বেশিমানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক নগদ অর্থ ও খাদ্রসামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, নিহতদের পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে প্রভাবে জোয়ারের তোরে মনপুরা উপজেলার চারটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে প্রায় ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দুই হাজার ২০০ মিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অপর দিকে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে দুই দিন ধরে পুরো জেলা জুড়ে বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এতে করে মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবাও বন্ধ রয়েছে।

ভোলার জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে ভোলার সাত উপজেলার প্রায় ৬০টি ইউনিয়নে কম-বেশি ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এতে দুই হাজার ৪৬৫টি ঘরবাড়ি পুরোপুরি ও পাঁচ হাজার ১৫৮টি ঘরবাড়ি আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন হাওলাদার ও সাকুচিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অলি উল্লাহ কাজল জানান, মনপুরার চারটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে ১০টির মতো গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া, উপজেলার কলাতলি ইউনিয়নে অতি জোয়ারে ৪-৫ ফুট পনিতে প্লাবিত হয়েছে। সেখানকার বাসিন্দারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

চরফ্যাশনের বঙ্গোপসাগর মোহনার ঢালচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল সালাম জানান, তার ইউনিয়ন দুই দিন ধরে ৪-৫ ফুট জোয়ারের পনিতে প্লাবিত হয়েছে। ইউনিয়নের রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেখানকার মানুষ অনেকটা পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। একই অবস্থা সাগরমোহনার চর কুকরি-মুকরি ইউনিয়নে। ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হাশেম মহাজন জানান, তার ইউনিয়নের চর পাতিলা এলাকা জোয়ারে পানিতে প্লাবিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান জানান, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য তাৎক্ষণিক নগদ অর্থ ও খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য কাজ চলছে।

সারাবাংলা/পিটিএম

টপ নিউজ তাণ্ডব ভোলা রেমাল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর