উপাচার্যের সাক্ষাৎ না পেয়ে প্রধান ফটক আটকালো ইবি শিক্ষার্থীরা
৩ জুন ২০২৪ ২২:৩৫
কুষ্টিয়া: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি ছিল গ্রীষ্মকালীন ও ঈদ-উল-আজহার ছুটিতে আবাসিক হল খোলা রাখতে হবে। এই দাবি নিয়ে সোমবার (৩ জুন) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তারা উপাচার্যের কার্যালয়ে যান উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। সেখানে প্রায় দুপুর ২টা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টা অপেক্ষা করেও উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেনি।
পরে তারা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রধান ফটক অবরোধ করেন। এতে দুপুরের কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহগামী পরিবহন বের হতে পারেনি ক্যাম্পাস থেকে। যার ফলে ভোগান্তিতে পড়েন কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ শহরগামী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে প্রক্টরিয়াল বডির আশ্বাসে প্রধান ফটক খুলে দেয় আন্দোলনকারীরা।
পরে বিকেল তিনটার দিকে উপাচার্যের বাংলোতে উপাচার্যের সাথে দেখা করেন তারা। সেখানে ঈদের ছুটিতে হল খোলা রাখার জন্য উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন তারা।
স্মারকলিপিতে ছুটিতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির বিষয় বিবেচনা করে দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ন্যায় হল খোলা রাখার দাবি জানানো হয়েছে। এর আগে একই দাবিতে বেলা ১১টায় উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে ইবি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মঞ্চ (ঐক্যমঞ্চ)।
রেজিস্ট্রার দফতর সূত্রে জানা গেছে, গ্রীষ্মকালীন ও পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে আগামী ৬ জুন থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত মোট ২৩ দিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে আবাসিক হলগুলো ১০ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত মোট ১৪ দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বছরের প্রায় অর্ধেক সময়ই বন্ধ থাকে। এই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটির সঙ্গে কম-বেশি করে হলগুলাও দীর্ঘদিন বন্ধ রাখা হয়। এক্ষেত্রে দূরের শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েন। আবার নির্দিষ্ট ধর্মীয় কোনো ছুটিতে হল বন্ধ থাকলে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদেরও ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে হয়। আবার লেখাপড়ার শেষ স্তরে থাকা চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরাও মারাত্মক অসুবিধায় পড়েন। তাই এসব শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে আমরা হল খোলা রাখার দাবি জানাচ্ছি।’
তারা আরও বলেন, ‘অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো সারাবছর খোলা থাকে। কিন্তু ঈদের ছুটিতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো বন্ধ থাকে। এতে পিছিয়ে পড়ছে চাকরি প্রত্যাশীরা। এ ছাড়া দুর্ভোগ পোহাতে হয় ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদেরও। শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করেই আমরা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি।’
ঐক্যমঞ্চের সদস্য সচিব ওয়ালীউল্লাহ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করেই আমরা ভিসি স্যার বরাবর আবেদন জানিয়েছি। ভিসি স্যার বলেছেন, আমি আপনাদের এই আবেদন প্রভোস্ট কাউন্সিলে ফরওয়ার্ড করব। প্রভোস্ট কাউন্সিল যে সিদ্ধান্ত নিবে আমি সেটাই বাস্তবায়নের নির্দেশ দেব।’
এদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি দেওয়ার পর তাদের কাছে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘এ বছর হল খোলা রাখা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এগুলো আগে থেকেই নির্ধারণ করা থাকে। আগামীতে আমরা হল খোলা রাখার বিষয়টি বিবেচনা করব।’
সারাবাংলা/একে