বেতন-ভাতা ও গ্রাচুইটি খাতে বরাদ্দ ১ লাখ কোটি টাকা
৪ জুন ২০২৪ ২২:১১
ঢাকা: আগামী ৬ জুন (বৃহস্পতিবার) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট সংসদে উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এটি হবে বর্তমান অর্থমন্ত্রীর প্রথম ও আওয়ামী লীগ সরকারের টানা চতুর্থ মেয়াদের প্রথম বাজেট। আসছে বাজেটে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতার পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ব করপোরেশন ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আনুতোষিক সুবিধা ও গ্রাচুইটি খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থবিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, আসছে বাজেটে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতায় বরাদ্দ থাকছে ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এটি চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের বেতন-ভাতায় বরাদ্দের তুলনায় প্রায় ৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ বা ৬ হাজার কোটি টাকা বেশি। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৭৭ হাজার ৪৮৯ কোটি টাকা।
সূত্র আরও জানায়, রফতানি প্রণোদনাসহ বিভিন্ন খাতের প্রণোদনার হার প্রতিবছর বাজেটে নতুন করে নির্ধারণ করা হলেও চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ৫ শতাংশ ঘোষিত প্রণোদনা বাতিল না করা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। অর্থাৎ সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য গতবছর ঘোষিত প্রণোদনা সরকার যতদিন বাতিল না করবে, ততদিন পর্যন্ত তারা জেনারেল ইনক্রিমেন্টের পাশাপাশি প্রণোদনা সুবিধা ভোগ করবেন। ফলে নতুন অর্থবছরের জুলাই থেকে ৫ শতাংশ হারে সাধারণ ইনক্রিমেন্টের পাশাপাশি গত অর্থবছরের মতো মূল বেতনের অতিরিক্ত ৫ শতাংশ হারে (ন্যূনতম ১ হাজার টাকা) প্রণোদনা পাবেন সরকারি চাকরিজীবী, পেনশনভোগী ও এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা।
তবে গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে থেকে সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে নতুন পে-কমিশন গঠনের দাবি জানায়। তখন উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সাধারণত নতুন পে-স্কেল ঘোষণার সময় এ ধরনের বিশেষ ভাতা বা প্রণোদনা বাতিল করা হয়। সর্বশেষ ২০১৫ সালে বেতন প্রায় দ্বিগুণ করে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়ন করেছে সরকার। ওই পে-স্কেল অনুযায়ী, প্রতিবছর ১ জুলাই সরকারি চাকরিজীবীদের মূল বেতনের ৫ শতাংশ হারে জেনারেল ইনক্রিমেন্ট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ওই পে-কমিশনের প্রতিবেদনে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য আর কোনো পে-স্কেল না দেওয়ার সুপারিশ করে বলা হয়েছিল, মূল্যস্ফীতির হার ৫ শতাংশের বেশি হলে তার সঙ্গে সমন্বয় করে ইনক্রিমেন্টের হার নির্ধারণ করা যেতে পারে।
উল্লেখ্য, আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের সম্ভাব্য আকার হতে পারে ৭ লাখ ৯৬ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটের আকার ছিল ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। ফলে আগামী বাজেটের আকার চলতি বাজেট থেকে ৩৫ হাজার ১১৫ কোটি টাকা বা ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ বেশি হচ্ছে। আগামী বাজেটে সামগ্রিক ঘাটতি থাকছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা (অনুদান ছাড়া)।
এছাড়াও, রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে ৫ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা হতে পারে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ ছিল ৫ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৪ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম