এক নজরে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট
৬ জুন ২০২৪ ১৬:০১
ঢাকা: দেশের অর্থনীতিতে সব নেতিবাচক নিয়ামকের প্রভাবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে নেমেছে। পাশাপাশি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মূল্যস্ফীতি। বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান ও মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিও এখন নিম্নমুখী।
অর্থনৈতিক সংকটের মুখেই বৃহস্পতিবার (৬ জুন) ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এটি দেশের ৫৪তম এবং আওয়ামী লীগ সরকারের ২৬তম বাজেট এটি। তবে অর্থমন্ত্রী হিসেবে আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রথম বাজেট।
বাজেটের আকার ও আয়-ব্যয় : প্রস্তাবিত ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটের চুড়ান্ত আকার (ব্যয়) ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এতে মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা।
বাজেটে জিডিপি‘র প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি : বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতির গড় হার ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। বাজেটের প্রতিবাদ্য হচ্ছে, ‘সুখী সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার’।
বাজেটে এডিপি‘র আকার : আগামী বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা।
বাজেটের আয় যেভাবে আসবে : বাজেটে রাজস্ব প্রাপ্তি কর থেকে আয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিয়ন্ত্রিত কর ও এনবিআর বহির্ভূত করের মাধ্যমে আয় ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকা। মোট আয়ের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে আয় আসবে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। আর এনবিআরবহির্ভূত কর থেকে আয় আসবে ১৫ হাজার কোটি টাকা। এছাড়াও কর ছাড়া প্রাপ্তি আসবে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।
বাজেটের ঘাটতি যেভাবে পূরণ করা হবে : ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এই ঘাটতি মোকাবেলায় অর্থায়নের উৎস হবে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণ এবং অনুদান। এর মধ্যে বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ২৭ হাজার ২০০ কোটি টাকা। যেখানে নিট ঋণের পরিমাণ ধরা হয় ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এছাড়াও বৈদেশিক অনুদান ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। অভ্যান্তরীণ ঋণের মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে নেওয়া হবে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ব্যাংকবহির্ভূত খাত থেকে ঋণের জোগান আসবে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেওয়া হবে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি এবং অন্যান্য খাত থেকে নেওয়া হবে ৮ হাজার কোটি টাকা।
ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা : আগামী বাজেটে সরকারকে শুধু সুদ পরিশোধেই ব্যয় করতে হবে ১ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। যেখানে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় হবে ৯৩ হাজার কোটি টাকা, বৈদেশিক ঋণের সুদ পরিশোধে যাবে ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ফলে মোট বাজেটের ২০ শতাংশই চলে যাবে সুদ পরিশোধে।
সারাবাংলা/জিএস/একে