Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী হতাশাগ্রস্ত

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৭ জুন ২০২৪ ২২:০৮

প্রতীকী ছবি

ঢাকা: বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রায় ৭৯.৯ শতাংশ শিক্ষার্থী হতাশার মধ্য দিয়ে যায় বলে এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে। হতাশার উপসর্গগুলোর মধ্যে রয়েছে— ক্লান্তি, ওজন কমে যাওয়া, কোনো কিছু উপভোগ না করা, ঘুমের ধরনের পরিবর্তন, আত্মহত্যার চিন্তা, কাজে মনোযোগ দিতে না পারা ইত্যাদি। সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আঁচল ফাউন্ডেশনের সমীক্ষার ফলাফলে এ চিত্র দেখা গেছে। সমীক্ষা বলছে, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশাপ্রবণতা সবচেয়ে বেশি।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (৭ জুন) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করে এ ফলাফল তুলে ধরেন সংগঠনটির রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস ইউনিটের টিম লিডার ফারজানা আক্তার লাবনী।

‘বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতির কারণ’ শীর্ষক সমীক্ষায় দেশের সরকারি-বেসরকারি ৮৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১ হাজার ৫৭০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। গবেষণাটি ২০২৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩০শে মে পর্যন্ত চলমান ছিল।

হতাশার উপসর্গে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে

সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে হতাশার উপসর্গ নিয়ে তুলনা করতে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে হতাশার উপসর্গ অনুভব করার হার বেশি। ৮৩.৪ শতাংশ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন তারা এই ধরনের বিষণ্ণতার উপসর্গগুলোর মুখোমুখি হয়েছেন। বাকি ১৬.৬ শতাংশ জানিয়েছেন তাদের মাঝে হতাশার উপসর্গ দেখা যায়নি। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে হতাশার চিত্র তুলনামূলক কম। ৭৯.৯ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তারা হতাশার উপসর্গগুলো অনুভব করেছেন। অন্যদিকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬১.৩ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তারা এই ধরনের উপসর্গের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন।

বিষণ্ণতার কারণ

শিক্ষার্থীদের থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জরিপে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের হতাশার বিভিন্ন কারণ উঠে এসেছে। মোট শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৫.০০ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তারা ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। বিভিন্ন কারণে নিজেকে অন্যদের সঙ্গে তুলনা করার কারণে হতাশায় ভুগছেন বলে জানিয়েছেন মোট শিক্ষার্থীর ১৬.২ শতাংশ। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা নিয়ে ৯.৪ শতাংশ, হল বা আবাসিক পরিবেশ নিয়ে ৯.০০ শতাংশ, সহপাঠী বা শিক্ষক কর্তৃক বুলিং এর কারণে ৫.৩ শতাংশ। উপর্যুক্ত সবগুলো কারণের জন্য ১.৬ শতাংশ শিক্ষার্থী হতাশাগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়াও আরো ৩.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অন্যান্য কারণে হতাশায় ভুগছেন।

বিজ্ঞাপন

ক্যাম্পাসে বুলিং ও যৌন নিগ্রহ

সহপাঠী, সিনিয়র কিংবা শিক্ষক কর্তৃক ক্যাম্পাসে শারীরিক বা মানসিকভাবে হয়রানির শিকার হওয়াই ক্যাম্পাস বুলিং। জরিপে দেখা গিয়েছে, অংশগ্রহণকারী মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হয়েছেন ৩১.১ শতাংশ শিক্ষার্থী। যার মাঝে বুলিং এর শিকার হয়েছেন ১৫.৯ শতাংশ, র‍্যাগিং এর শিকার হয়েছেন ১৩.৪ শতাংশ, যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ১.৮ শতাংশ এবং কোনো ধরনের হয়রানির শিকার হননি ৬৮.৯ শতাংশ।

বিশেষজ্ঞদের মতে বুলিং, র‍্যাগিং ও যৌন হয়রানির তিক্ততা যখন কোনো শিক্ষার্থীকে গ্রাস করে তখন সে নিজেকে সবকিছু থেকে গুটিয়ে নেয় এবং ধীরে ধীরে বিষণ্ণতার দিকে ধাবিত হয়।

হয়রানিতে এগিয়ে সহপাঠী ও সিনিয়ররা

বিভিন্ন ধরনের হয়রানিতে আক্রান্ত হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে সহপাঠী বা সিনিয়র দ্বারা হয়রানির শিকার হয়েছেন ৮৫.৫ শতাংশ, শিক্ষক কর্তৃক ৭.৬ শতাংশ, স্টাফ কর্তৃক ১.২ শতাংশ এবং অন্যান্যদের দ্বারা ৫.৭ শতাংশ শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার হয়েছন। হয়রানির ফলে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে ৪২.৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর, মোটামুটি প্রভাব পড়েছে ৪৮.৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর এবং কোনোরূপ প্রভাব পড়েনি ৮.৮ শতাংশ শিক্ষার্থীর।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পরিবেশ নিয়ে অসন্তুষ্টি

বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনার পরিবেশ নিয়ে কতটুকু সন্তুষ্ট এই প্রশ্ন ছিল সবার কাছে। জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে পুরোপুরি অসন্তুষ্ট ৩৩.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী,
মোটামুটি সন্তুষ্ট ৫৮.১ শতাংশ এবং পুরোপুরি সন্তুষ্ট মাত্র ৮.৪ শতাংশ। পড়াশোনার পরিবেশ নিয়ে অসন্তুষ্টি হওয়া পরবর্তীতে বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যা তৈরি করতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন।

মন খুলে কথা বলার মতো শিক্ষক কম

সমীক্ষায় ৫৯.৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তারা মন খুলে কথা বলার মতো কোনো শিক্ষক পান না। এর মাঝে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬২.৯ শতাংশ শিক্ষার্থী নিজ শিক্ষকদের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না এবং ৩৭.১ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তারা খুব সহজে নিজ বিভাগের শিক্ষকদের সামনে নিজেকে মেলে ধরতে পারেন। অন্যদিকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৮.৮ শতাংশ শিক্ষার্থী স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন এবং ৪১.২ শতাংশ শিক্ষার্থী ফ্যাকাল্টির অন্যান্য মেম্বারদের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না।

হলের পরিবেশও প্রভাব ফেলছে বিষণ্ণতায়

বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে অনেকেই হল বা ডর্মিটরিতে অবস্থান করে। হলে থাকা-খাওয়া ও পড়াশুনার পরিবেশও একজন শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। হলের পরিবেশ নিয়ে সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির ক্ষেত্রে ৩৯.৩ শতাংশ জানিয়েছেন তারা পুরোপুরি অসন্তুষ্ট। সন্তুষ্টির কথা বলেছেন মাত্র ১০.০০ শতাংশ শিক্ষার্থী। বাকিরা জানিয়েছেন তারা মোটামুটি সন্তুষ্ট। অসন্তুষ্টির কারণ হিসেবে আমরা দেখতে পাই ৯.৯ শতাংশ শিক্ষার্থী থাকার পরিবেশকে দায়ী করেছেন। অনুন্নত খাবারকে দায়ী করেছেন ৭.৮ শতাংশ শিক্ষার্থী। রিডিং রুম বা গ্রন্থাগারের সংকট মনে করছেন ৩.৭ শতাংশ শিক্ষার্থী এবং সবগুলো কারণকেই দায়ী করছেন ৬৮.২ শতাংশ শিক্ষার্থী। এছাড়াও ১০.৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তারা অন্যান্য কারণকে অসন্তুষ্টির জন্য দায়ী করছেন। ৭০.১ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন হলের পরিবেশ তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

বিদেশমুখী তরুণ প্রজন্ম

জরিপে শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের ক্যারিয়ার ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। সেখানে উঠে এসেছে বিভিন্ন চমকপ্রদ তথ্য। জরিপে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে ৩১.৭ শতাংশ শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন, ২৯.৭ শতাংশ শিক্ষার্থী ক্যারিয়ার হিসেবে সরকারি চাকরি করতে চান, ৯.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ব্যবসা বা উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন, মাত্র ৭.১ শতাংশ শিক্ষার্থী বেসরকারি চাকরি করতে চান। এছাড়া বাকি শিক্ষার্থীরা এখনো কোনোরূপ ক্যারিয়ার ভাবনা ঠিক করেনি যা মোট শিক্ষার্থীর প্রায় ২২ শতাংশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার ভাবনা

প্রচণ্ড মানসিক অস্থিরতা এবং প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে উঠতে না পারা থেকেই আত্মহত্যার চিন্তা মস্তিষ্কে বাসা বাঁধে। আঁচল ফাউন্ডেশনের গবেষক দল শিক্ষার্থীদের কাছে আত্মহত্যা সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন করেছিল। জরিপে অংশগ্রহণকারী মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন ৫.৯ শতাংশ, আত্মহত্যা চিন্তায় এসেছে কিন্তু আত্মহত্যা চেষ্টা করেন নি ৩৯.২ শতাংশ, আত্মহত্যা চিন্তা এসেছে এবং উপকরণও জোগাড় করেছেন ৭.৩ শতাংশ, এবং কখনো মাথায় আত্মহত্যা চিন্তা আসেনি ৪৭.৬ শতাংশ শিক্ষার্থীর।

ক্যারিয়ার ভাবনা থেকে আত্মহত্যার চিন্তা

জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫২.৪ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন, তাদের মাথায় আত্মহত্যা চিন্তা এসেছে এবং সে সব শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা ভাবনার পেছনে বেশ কিছু কারণ উঠে এসেছে। এর মধ্যে প্রধান কারণ হলো শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশা। এ সকল শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৩০ শতাংশ ক্যারিয়ার নিয়ে হতাশায়, ১৬.২ শতাংশ বাবা-মায়ের সাথে অভিমানের ফলে, ৯.৭ শতাংশ প্রেমঘটিত বিষয়ে, ৯ শতাংশ অর্থনৈতিক সমস্যাগ্রস্ত হয়ে, অন্যরা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করায় ৪.৩ শতাংশ এবং ৩০.৮ শতাংশ শিক্ষার্থী অন্যান্য বিভিন্ন কারণে আত্মহত্যা করার চিন্তা এসেছে বলে জানিয়েছেন।

মানসিক স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতা

জরিপে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাওয়া তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হয় কিনা। এ প্রশ্নের উত্তরে ৩৮.৩ শতাংশ শিক্ষার্থী হ্যাঁ সূচক এবং ৩৫.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী না সূচক উত্তর দিয়েছেন। এছাড়া ২৬.২ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছেন তারা এই সম্পর্কে কোন কিছু জানেন না।

আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রস্তাবনা

● ক্যাম্পাসে কাউন্সিলিং ইউনিটের ব্যবস্থা করা।
● ক্যাম্পাসে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করা।
● ক্যাম্পাসে কেউ যেন বুলিং এর শিকার না হয় তা মনিটরিং করা।
● নিরাপদ বাসস্থান ও উন্নতমানের খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, প্রয়োজনে বৃত্তি ও প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা।
● শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের সম্মান ও আস্থার সম্পর্ক উন্নয়ন, প্রয়োজনে কাউন্সিলিং করানো।
● মানসিক স্বাস্থ্যসেবাকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত করা।
● সেমিনার ও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করা, বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী বা বিশেষজ্ঞদের এসব সেশনে বিভিন্ন সমস্যা ও এগুলোর সমাধান নিয়ে লেকচার দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো যেতে পারে।
● দেশের সব স্কুল, কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট (মনোবিদ) এডুকেশনাল কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট নিয়োগ দিতে হবে।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দীন আহমেদ চৌধুরী, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ডিপার্টমেন্ট অব সোশাল সায়েন্সেস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজের সিনিয়র লেকচারার ওবায়দুল্লাহ আল মারজুক, কমিউনিটিভিত্তিক মানসিক স্বাস্থ্য প্রকল্প, এডিডি ইন্টারন্যাশনালের প্রকল্প ব্যবস্থাপক আবদুল্লাহ আল হারুন এবং আঁচল ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি তানসেন রোজ।

সারাবাংলা/আরএফ/একে

আঁচল ফাউন্ডেশন বিষণ্নতা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মানসিক স্বাস্থ্য সমীক্ষা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হতাশা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর