মূলধনি আয়ে আরোপিত কর প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবি ডিবিএ‘র
১১ জুন ২০২৪ ২০:২২
ঢাকা: ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ৫০ লাখ টাকার অধিক মূলধন আয়ের ওপর স্তরভিত্তিক করারোপ করা হয়েছে। এ ছাড়াও, কোনো সিকিউরিটিজ বিনিয়োগের সময়কাল পাঁচ বছর অতিক্রম করলে বিনিয়োগ থেকে প্রাপ্ত আয়ের ওপর ১৫ শথাংশ হারে করের প্রস্তাব করা হয়। গত কয়েকবছর ধরে মন্দা বাজার পরিস্থিতি এবং আর্থিক সংকটে থাকা বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ পরিস্থিতি বিবেচনা করে মূলধন আয়ের ওপর থেকে করারোপের প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশ (ডিবিএ)।
মঙ্গলবার (১১ জুন) মতিঝিলের ডিএসই ভবনে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ডিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ব্রোকারেজ হাউজগুলো দুটি স্তরে কর দেয়। প্রথমত, সিকিউরিটিজ কেনা-বেচার ওপর ০.০৫% এবং দ্বিতীয়ত, কর্পোরেট আয়কর হিসেবে, যেটি বেশি হয় তা চূড়ান্ত কর হিসেবে গণ্য করা হয়। এই দ্বিস্তরের ব্যবস্থার ফলে মন্দাবাজার পরিস্থিতি ব্রোকারদের ক্ষতি করে। কিছু ক্ষেত্রে এই করের হার ৪০% বা তার বেশি ছাড়িয়ে যায়। এই অবস্থায় রাজস্ব করহার ০.০৫% থেকে কমিয়ে ০.০২৫% হ্রাসকরণ এবং কর্পোরেট আয়করকে ব্রোকারেজের জন্য চূড়ান্ত কর হিসেবে বিবেচনা করার দাবি জানাচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে ডিবিএ সভাপতি বলেন, ‘গত ১৫ বছরে পুঁজিবাজারে ভালো মানের উল্লেখযোগ্য কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়নি। হাতে গোনা কয়েকটি ভালো কোম্পানি এসেছে মাত্র। বাজারে ভালো কোম্পানি না এলে নতুন বিনিয়োগকারী আসবে না।
তিনি বলেন, ‘পুঁজিবাজারে সুশাসনের ঘাটতি, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা না থাকায় একদিকে যেমন ভালো ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজার বিমুখ হচ্ছে, অন্যদিকে ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্ত না হওয়ায় নতুন বিনিয়োগকারীও আকর্ষণ করা যাচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সার্বিকভাবে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএইসি, স্টক এক্সচেঞ্জ, তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও বাজার সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সুশাসনের ঘাটতি আছে। স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা না থাকায় নতুন করে ভালোমানের কোম্পানি বাজারে আসতে চাইছে না। ভালা কোম্পানি না আসায় বাজারে নতুন বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করতে পারছে না। বরং অনেক বিনিয়োগকারী বাজারবিমুখ হয়ে পড়ছেন। গত কয়েক বছরে বিনিয়োগকারীদের বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব ৩৩ লাখ থেকে কমে ১৭ লাখে নেমেছে। এর প্রভাবে ৫০ শতাংশ ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠান এখন রুগ্ন হয়ে পড়েছে।’
সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বাজারে ব্যক্তি পর্যায়ের বিনিয়োগকারীই ৮০ শতাংশ। এখন তারাই বাজারের ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলছে। আস্থা ফেরাতে ডিএসইকে আরও ক্ষমতায়ন করতে হবে। বিদ্যমান সবগুলো নিয়ম, নীতিমালা পূর্ণমূল্যায়ন করে বাজারমুখী করার সময় হয়েছে।’
ডিবিএ সভাপতি বলেন, ‘ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স নির্ধারণের আগে অংশীজন হিসেবে কারও সঙ্গেই আলোচনা করা হয়নি। এতে বাজারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। আমরা কয়েক জায়গা থেকে আশ্বস্ত হয়েছিলাম যে, এবার করটি বসানো হবে না। তারপরেও সেটি করা হয়েছে। এই অবস্থায় করটি প্রত্যাহার করে আগামী অর্থবছর থেকে ক্যাপিটাল গেইন বাসানো যেতে পারে।’
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম