বৃক্ষ নিধনও বিএনপি-জামায়াতের একটা চরিত্র: প্রধানমন্ত্রী
১৫ জুন ২০২৪ ১৩:৫৪
ঢাকা: সারা বাংলাদেশে বৃক্ষ নিধনও কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের একটা চরিত্র বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (১৫ জুন) সকালে তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবনে তিন মাসব্যাপী বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার খুব হাসি পায়, যখন দেখি বিএনপি ভোটের কথা উচ্চারণ করে, নির্বাচনের কথা বলে। জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে এ দেশের ভোটের সমস্ত অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছিল। তার সেই হ্যাঁ-না ভোট দিয়ে যাত্রা শুরু; অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধ করার জন্য।
তিনি বলেন, একাধারে সেনাপ্রধান, তারপর আবার নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনী প্রহসন। ক্ষমতার মসনদে বসেই দল গঠন। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে যে দলটি গঠন করে, তাকে আবার জিতিয়ে আনার জন্য ভোট চুরির একটা প্রক্রিয়া এ দেশের শুরু করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানের পরে তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে এরশাদ ক্ষমতায় এসে জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলে। এ দেশের কৃষক-শ্রমিকরা সব সময় অবহেলিতই থেকে যায়। এরপর আসলো খালেদা জিয়া। সেও ক্ষমতায় আসার পর দেখা গেল, শুধু জনগণের ভোট চুরি করাই না, দেশের কৃষকের ভাগ্য নিয়েও ছিনিমিনি খেলে; সার পাওয়া যাচ্ছে না, কৃষক আন্দোলন করেছে। আন্দোলন করার অপরাধে ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করেছিল।
সে সময় কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, শুধু কৃষক কেন! রোজার দিনে শ্রমিকরা মজুরির দাবিতে যখন আন্দোলন করে তখনো প্রায় ১৭ জন শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছিল এই খালেদা জিয়া। বিদ্যুতের দাবি করেছিল কানসাটে; কৃষকরাই সেচের জন্য পানি পাচ্ছিল না। সেখানেও নয়জন মানুষকে হত্যা করা হয়। তাদের এই অপকর্মের ফলে যখন জনগণ তাদের ওপর বিতশ্রদ্ধ, সেই সময় ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি একটা প্রহসনমূলক নির্বাচন হয়, খালেদা জিয়া সেই নির্বাচনে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকার চেষ্টা করে। মাত্র ২২ শতাংশ ভোট পড়েছিল সেখানে। সরাসরি নির্বাচিত কোনো প্রতিপক্ষ ছিল না। কিন্তু জনগণের ভোট চুরি করলে কেউ কিন্তু ক্ষমতায় থাকতে পারে না। বাংলাদেশের জনগণ এ বিষয়ে খুব সচেতন।
আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পরবর্তী সময়ের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, এয়ারপোর্ট থেকে বাংলা একাডেমি হয়ে ইউনিভার্সিটি পর্যন্ত আইল্যান্ডের মধ্যে কৃষ্ণচূড়া গাছ। যখন ফুল ফুটতো, অপরূপ রূপ আমাদের এই শহরটা জেগে উঠতো। জিয়াউর রহমান একে একে সব গাছগুলো কেটে ফেলে দেয়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ঠিক হোটেল শেরাটনের সামনে একটা আইল্যান্ড আছে, সেখানে নাগকেশর ফুলের গাছ ছিল। সেখান দিয়ে গাড়ি নিয়ে বা হেঁটে গেলে খুব সুন্দর খুশবু আসতো। চমৎকার সবুজে ভরা ছিল। সেগুলো জিয়াউর রহমান কেটে ফেলে দেয়। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাশে বিরাট বাগান বিলাশের ঝাড় ছিল, সেখানে অনেক টুনটুনি পাখি ছিল। আমরা ছোটবেলায় রুটি নিয়ে ওখানে যেতাম, ওদের খাবার দিতাম। সেটাও কেটে ফেলে। এভাবে সারা বাংলাদেশে বৃক্ষ নিধন এটাও কিন্তু তাদের একটা চরিত্র এবং তার আরেকটা নমুনা আপনারা পেয়েছেন ২০১৩ সালে।
১৯৮৪ সাল থেকে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, তখন রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। পরিবেশ রক্ষা বা জলবায়ু পরিবর্তন—এসব কিন্তু তখনো বিশ্বে আসে নাই কিন্তু আওয়ামী লীগ; আমরা উদ্যোগ নেই, সব সময় গাছ লাগানো আমাদের নীতি ছিল। তখন থেকে আমরা বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করি এবং কৃষক লীগের ওপর দায়িত্ব দিই।
তিনি বলেন, এটা আমরা শিখেছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কাছ থেকে। তিনি এ দেশের ঘোড়দৌড় বন্ধ করে দিয়েছিলেন। রেসকোর্স ময়দানে প্রথম বৃক্ষরোপণ করেন। সেখানে অনেক পুরাতন নারকেল গাছগুলো তার সময়ে লাগনো। তিনি নিজে বৃক্ষরোপণ করেন। গণভবনের পুরোনো সব গাছগুলো বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে লাগানো ছিল এবং খুব চমৎকারভাবে গাছগুলো সাজিয়ে লাগানো।
সারাবাংলা/এনআর/ইআ