তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, তীব্র হচ্ছে ভাঙন
১৯ জুন ২০২৪ ২০:৩১
কুড়িগ্রাম: বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে তীস্তাপারের ভাঙন তীব্র হয়ে উঠেছে ভাঙন। ভাঙনের কবলে পড়ে ঘর-বাড়ি ও ফসল সরিয়ে নিচ্ছেন স্থানীয়রা। হুমকিতে পড়েছে নদীর তীর রক্ষা স্পারসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি।
এ ছাড়া উজানের ঢল ও স্থানীয়ভাবে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমারের পানিও বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বেড়েছে ধরলা, ব্রহ্মপুত্রসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানিও।
সরেজমিনে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, তীব্র স্রোতে বইছে তিস্তায়। স্রোতের তোড়ে ভাঙছে পার। ভাঙনের মুখে থাকা ঘর-বাড়ি ও ক্ষেতের ফসল সরিয়ে নিচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। দেবে গেছে তীর রক্ষা স্পারের পাশে ফেলা জিও ব্যাগ।
বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের কালিরমেলা বর্তমানে ভাঙনের তীব্র ঝুঁকিতে রয়েছে। পাশাপাশি ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখা, বুড়িরহাটসহ উলিপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকাও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এসব এলাকার মানুষজন রীতমতো দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
ভাঙন কবলিতরা বলছেন, বারবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে এরই মধ্যে গত এক মাসে রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের তিস্তার ভাঙন বিলীন হয়েছে শতাধিক ঘর-বাড়ি। এখন আতঙ্কে কেউ কেউ সরিয়ে নিচ্ছেন তাদের ঘর-বাড়িসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র।
রাজারহাটের কালিরমেলা এলাকার তিস্তাপারের সিদ্দিকুল বলেন, মঙ্গলবার রাত থেকে তিস্তার তীব্র ভাঙনে আমার একটি ঘর নদীতে চলে গেছে। রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। বাকি ঘর সরিয়ে নিচ্ছি। কিন্তু যাওযার কোনো জায়গা নেই।
একই এলাকার সুবাস বলেন, বাড়ির গাছপালা, ঘর সব সরিয়ে নিচ্ছি। না সরালে রাতেই সব সব নদীতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল। পানি উন্নয়ন বোর্ড গত বছর কিছু জিও ব্যাগ ফেলেছিল। সেগুলো পানির স্রোতে ভেসে গিয়ে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। সরকার নদীর কাজ না করায় আজকে আমাদের এই দুর্দশা।
রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বলেন, তিস্তার পানি বাড়তে থাকায় আমার ইউনিয়নের অসংখ্য ঘরবাড়ি, ফসলি জমি নদীতে চলে গেছে। এখন অনেকেই ঘরবাড়ি সরিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে। সহায়-সম্পদ, স্থাপনা রক্ষায় সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও স্থানীয় সংসদ সদস্যকে অবহিত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, তিস্তার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে জরুরিভিত্তিতে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশা তিস্তার স্থায়ী ভাঙন রোধে চলমান সমীক্ষা শেষে কাজ করা হবে।
সারাবাংলা/টিআর