লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, পানির নিচে ফসলি জমি-পথঘাট
১৯ জুন ২০২৪ ২৩:১৯
লালমনিরহাট: উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিতে তিস্তার পানি বেড়েছে। নদীর ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় ধান ও বাদামসহ নানা ধরনের ফসলের ক্ষেত এবং গ্রামীণ রাস্তাঘাট ডুবে গেছে।
এ অবস্থায় চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। খাবারের জন্য বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, নদীর পানি ধারণক্ষমতা কমে আসায় অল্প পানিতেই এখন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়, বন্যা দেখা দেয়। তা সত্ত্বেও নদী খনন বা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না।
বুধবার (১৯ জুন) বিকেল ৩টায় লালমনিরহাটের হাতিবান্ধায় অবস্থিত তিস্তার ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫১ দশমিক ৮৪ মিটার। যা বিপৎসীমার মাত্র ৩১ সেন্টিমিটার নিচে।
ডালিয়া ব্যারেজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম না করলেও তিস্তা নদীতে পলি পড়ে পানি ধারণক্ষমতা কমে আসায় অল্প পানিতেই লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা গোবরধন, বারোঘরিয়া, সদর উপজেলার বাগডোরাসহ বেশ কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
এসব এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নদীর পানি প্রবেশ করায় তলিয়ে গেছে কৃষকের ধান, বাদামসহ নানা জাতের ফসলের ক্ষেত। এ ছাড়া নিম্নাঞ্চলের রাস্তাঘাটে পানি জমায় চলাচলেও পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগ।
গোবরধন এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আউয়াল বলেন, গত দুদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। নদীর পানি বাড়ছে। তাই আমাদের এলাকায় পানি ঢুকেছে। এতে রান্না থেকে শুরু করে চলাফেরাসহ নানা সমস্যা হচ্ছে।
একই এলাকার মুদি দোকানি জোবায়দুল ইসলাম বলেন, এলাকা নিচু হওয়ায় রাস্তাগুলোও নিচু। তাই অল্প পানিতে বন্যা হয়, আর রাস্তা তলিয়ে যায়।
বারোঘরিয়ার স্কুল শিক্ষার্থী শাহজালাল বলেন, ঈদের ছুটিটাও শান্তিতে কাটাতে পারলাম না। বাড়িতে ও রাস্তা পানিতে ডুবছে। কোনো আত্মীয় আসেনি, আমরাও কোথাও যেতে পারিনি।
জানতে চাইলে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার রায় বলেন, ‘টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে তিস্তাসহ লালমনিরহাটের সবকটি নদীর পানি বেড়েছে। তিস্তা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে পানি দ্রুত নেমে যাবে।’
নদীতে পলি পড়ে পানি ধারণক্ষমতা কমে আসায় এমন পরিস্থিতি দেখা দিচ্ছে বলে জানান শুনীল কুমার রায়। বলেন, পানি কমে গেলে কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিতে পারে। নদী ভাঙন ঠেকাতে জরুরি আপৎকালীন কাজ হিসেবে জিও ব্যাগ ফেলা হবে।
সারাবাংলা/টিআর