Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘আমাদের আন্দোলন ভারতের বিরুদ্ধে নয়, সরকারের বিরুদ্ধে’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২৫ জুন ২০২৪ ১৬:৩৭

ফাইল ছবি: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ঢাকা: বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, একটা কথা পরিষ্কার করে বলে দিই- আমাদের বক্তব্য, আন্দোলন ভারতের বিরুদ্ধে নয়। এই সরকারের বিরুদ্ধে। সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে ভারতের কাছ থেকে দাবি আদায় করে নিয়ে আসতে। আমার পানির হিস্যা আদায় না করে চুক্তি করছে। তিস্তার পানি আমাদের সবার আগে দরকার। কিন্তু, তারা তিস্তার প্রকল্প নিয়ে কাজ করতে চায়। কারণ, প্রকল্প করলে অনেক টাকা। সেই টাকেই আসল উদ্দেশ্য।

বিজ্ঞাপন

‘মমতা (পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী) পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গকে বাদ দিয়ে তিস্তা প্রকল্প করা যাবে না। তারা দেবে না। আপনাকে অবশ্যই এর জন্য প্রেসার ক্রিয়েট করা দরকার। জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে। ফারাক্কা থেকে যতটুকু পেয়েছি, তা আন্দোলনের মাধ্যমে পেয়েছি, দেশে এবং বিদেশে। ইউএন পর্যন্ত গিয়েছি। কেন আজ পর্যন্ত তিস্তার বিষয়টি এই সরকার ইউএনে উত্থাপন করল না?’

মঙ্গলবার (২৫ জুন) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপি সৃষ্টি হয়েছে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিএনপি সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। বিষয়টি বিস্তারিত তুলে ধরার জন্য আমরা ২৮ তারিখে সংবাদ সম্মেলন করতে যাচ্ছি। এর পরে আমরা কর্মসূচি নেব। সেটা আপনারা যথা সময়ে জানতে পারবেন।’

এর আগে, সোমবার (২৪ জুন) অনলাইনের বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভা হয়। ভার্চুয়াল ওই সভার সিদ্ধান্ত তুলে ধরার জন্যই এ সংবাদ সম্মেলন ডাকেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, ‘সভায়, সম্প্রতি শেখ হাসিনার ভারত সফরে ভারতের সঙ্গে ২টি চুক্তি ৫টি নতুন সমঝোতা স্বারক ও ৩টি চুক্তি নবায়নসহ ১০টি চুক্তি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষর হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভায়, সম্পাদিত চুক্তিগুলিতে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হওয়ার আশংকা প্রকাশ করা হয়।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সভা মনে করে, তিস্তাসহ অভিন্ন নদী গুলির পানি বন্টনের কোনো চুক্তি না করা, সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা বন্ধ না করা, একতরফাভাবে ভারতকে সকল সুবিধা প্রদান করে বাংলাদেশের স্বার্থ ব্যাপকভাবে ক্ষুন্ন হয়েছ। কানেকটিভিটির নামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত পর্যন্ত রেল যোগাযোগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগের সমঝোতা, কৌশলগত ও অপারেশনাল খাতে সামরিক শিক্ষা সহযোগীতা, ঔষধ সংক্রান্ত সমঝোতা, বাংলাদেশের জলসীমায় ভারতের অবাধ বিচরণ এবং ভারতের ইনস্পেস ও বাংলাদেশের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সমঝোতা, রেলমন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা, সমুদ্র বিষয়ক গবেষণায় দুই দেশের সমঝোতা ইত্যাদি সমঝোতাগুলোতে বাংলাদেশের স্বার্থ ক্ষুন্ন হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘ভারতকে সকল প্রকার সুবিধা প্রদানের বিনিময়ে ভারতের কাছে থেকে বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ আদায় করতে শেখ হাসিনা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন এবং এটা ম্যান্ডেটবিহীন অবৈধ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতি বহিঃপ্রকাশ। এই অবৈধ সরকার পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে ভারতের ওপর নির্ভরশীল করে ফেলছে। সভায়, এই চুক্তিগুলিকে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী হওয়ায় বিএনপি এই চুক্তিগুলি প্রত্যাক্ষাণ করছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সভায়, সম্প্রতি মিয়ানমার কর্তৃক বাংলাদেশের টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন পর্যন্ত জলসীমায় নির্বিচারে গুলি বর্ষণের ফলে বাংলাদেশের মূল ভূখন্ডের সঙ্গে সেন্টমার্টিনের যোগযোগ বন্ধ হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে, এই অবৈধ সরকারের নতজানু পরারষ্ট্রনীতির কারণেই বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বারবার হুমকির সম্মুখিন হচ্ছে। এই বিষয়ে অবৈধ সরকার জনগণকে সুস্পষ্টভাবে কোনো তথ্য সরবরাহ করছে না। সভা অনতিবিলম্বে মিয়ানমার কর্তৃক বাংলাদেশের সীমান্তে গুলিবর্ষণ বিষয়ে জনগণের নিকট ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য সরকারের নিকট আহ্বান জানায় ‘

তিনি বলেন, ‘সভায়, বৃহত্তর সিলেট বিভাগের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। সভা মনে করে, কিশোরগঞ্জে হাওড়ের মাঝখানে সড়ক নির্মাণ এবং বেশ কিছু এলাকায় মাটি ভরাট করে কয়েকটি স্থাপনা নির্মাণ করায় ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের পানি দ্রুত নিষ্কাশিত না হওয়ার কারনে এই ভয়াবহ দুর্যোগ সৃষ্টি হচ্ছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জ শহরসহ বিভাগের বিস্তীর্ণ এলাকায় পানির তলে যাওয়ায় অসংখ্য মানুষ সীমাহীন দূদর্শার মধ্যে পড়েছে। দূর্গত এলাকায় সরকারের কোনো ত্রাণ তৎপরতা দেখা যায়নি। অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণের জন্য সভায় দাবী জানানো হয়। বিএনপির একটি ত্রাণ টিম অতিদ্রুত সিলেট সফর করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’

ভার্চুয়াল ওই বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন তারেক রহমান।

সারাবাংলা/এজেড/এনইউ

টপ নিউজ ফখরুল বিএনপি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর