৯৪৫ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন ঢাবির
২৬ জুন ২০২৪ ১৬:৫৫
ঢাবি: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জন্য ৯৪৫ কোটি ১৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকার বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। যা গত অর্থবছরের তুলনায় ৩১ কোটি ২৫ লাখ ৫৮ হাজার টাকা বেশি।
এছাড়া, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৫৯ কোটি ১৫ লাখ ৯১ হাজার টাকা বৃদ্ধি করে ৯৭৩ কোটি ৫ লাখ ৭৭ হাজার টাকার সংশোধিত বাজেট উপস্থাপন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।
বুধবার (২৬ জুন) বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বিকেল থেকে চলমান বাজেট অধিবেশনে তিনি চলতি অর্থ বছরের বাজেট ও গত অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট উপস্থাপন করেন। চলমান বার্ষিক সিনেট অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন সিনেট চেয়ারম্যান ও উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ জানান, উপস্থাপনকৃত ৯৪৫ কোটি ১৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকার বাজেটের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ৮০৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা প্রদান করবে। এ ছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় থেকে ৯০ কোটি টাকা এবং ঘাটতির পরিমাণ ৫০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।
কোষাধ্যক্ষের বাজেট বক্তৃতা থেকে জানা যায়—২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য উপস্থাপিত বাজেটে বেতন, ভাতা ও পেনশন বাবদ বরাদ্দকৃত হয়েছে ৬৩৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা; যা মোট বাজেটের ৬৭ শতাংশ। গত অর্থবছরে যা ছিল টাকার অংকে ৭২৪ কোটি ১২ লাখ টাকা এবং মোট ব্যয়ের ৬৮.২৯ শতাংশ।
গত অর্থবছরের তুলনায় ৫ কোটি টাকা বাড়িয়ে গবেষণা মঞ্জুরি বাবদ ২০ কোটি ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। যা মোট বাজেটের ২ দশমিক ১২ শতাংশ। গত অর্থ বছরে যা ছিলো ১৫ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং মোট ব্যয়ের ১.৬৪ শতাংশ।
এর আগে, বেলা তিনটায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ২০২৪-২৫ বার্ষিক বাজেট অধিবেশন। বাজেট অধিবেশনের সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকার।
অধিবেশনের শুরুতে সম্প্রতি প্রয়াত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের শিক্ষক, বাংলাদেশ ও বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের স্মরণে শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল।
চলতি অর্থবছরের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের কাছে পেশকৃত চাহিদার তুলনায় ৩২৬ কোটি ৭৬ লাখ ১৪ হাজার টাকা কম বরাদ্দ পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
এই প্রসঙ্গে অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ বাজেট বক্তৃতায় বলেন, ‘যুক্তিসঙ্গত চাহিদা অনুযায়ী ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব তৈরি করা হয়। ওই প্রস্তাবের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে চাহিদা পেশ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বমোট চাহিদা ছিল এক হাজার ১৩১ কোটি ১৭ লাখ ১৪ হাজার টাকা। বিমক বরাদ্দ করে মাত্র ৮০৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা। অর্থাৎ চাহিদার তুলনায় বরাদ্দের পরিমাণ ৩২৬ কোটি ৭৬ লাখ ১৪ হাজার টাকা কম’।
গবেষণা খাতে বরাদ্দকৃত ২০ কোটি ৫ লাখ টাকা প্রসঙ্গে মমতাজ উদ্দিন আহমেক্স বলেন, ‘২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের গবেষণা বাবদ ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যা ২০২৩-২০২৪ অর্থবছর থেকে ৫ কোটি টাকা বেশি। উদ্ভাবনের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫ লাখ টাকা। গবেষণার জন্য ২০ কোটি টাকা পর্যাপ্ত নয়। বিশ্বাবিদ্যালয়ে দুই হাজারের বেশি শিক্ষক কর্মরত আছেন। প্রত্যেকের জন্য গড়ে গবেষণা বাবদ বরাদ্দ ১০ লাখ টাকা। এই অর্থ দিয়ে বড় ধরণের মৌলিক গবেষণা আদৌ কি সম্ভব?’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান যুগে টিকে থাকতে হলে নতুন নতুন উদ্ভাবন প্রয়োজন। প্রচুর অর্থ ব্যয় ছাড়া এ ব্যাপারে সাফল্যমন্ডিত হওয়া দিবাস্বপ্ন মাত্র। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং নিয়ে অনেক আলোচনা শুনতে পাই। এই র্যাংকিং উন্নত করতে হলে প্রয়োজন গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা। এই খাতে বাজেট বরাদ্দ বহুলাংশে বৃদ্ধি করলে আমরা কাঙ্খিত ফলাফল পাব বলে আমার বিশ্বাস’।
সারাবাংলা/আরআইআর/এনইউ