Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সিমেন্ট শিট ব্যবহারে উৎপাদন বাড়বে সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১ জুলাই ২০২৪ ২২:১৯

ঢাকা: প্রাণিসম্পদ খাতে, বিশেষ করে হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশুর খামারে সিমেন্ট শিট ব্যবহার করলে দেশে বছরে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার বেশি উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন শিল্প সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, এতে করে এক দিকে উৎপাদন খরচ কমিয়ে প্রান্তিক লোকসানি খামারগুলো মুনাফায় ফিরতে পাবে অন্যদিকে ভোক্তারা কম মূল্যে ডিম, দুধ, মাংস খেতে পারবে।

সোমবার (১ জুলাই) রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত ‘সবুজ নির্মাণ: সিমেন্ট শিট যেভাবে বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতিকে রূপান্তরিত করছে’ শীর্ষক কর্মশালায় তারা এসব তথ্য জানান।

বিজ্ঞাপন

ইআরএফ ও বাংলাদেশ সিমেন্ট শীট ম্যানুফ্যাকচারিং অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে আয়োজিত কর্মশালায় বক্তব্য দেন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. মুসাদ্দিক হোসেন ও সিমেন্ট শীট শিল্পের বড় উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান আনোয়ার গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওয়াইজ আর হোসেন। ইআরএফ সভাপতি মোহম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মীরধার সভাপতিত্বে ও সধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম’র সঞ্চালনায় এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ড. নথু রাম সরকার।

ওয়াইজ আর হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে গবাদি-পশু হাঁস-মুরগি উৎপাদনে সিমেন্ট শিট ব্যবহারে নীরব বিপ্লব ঘটেছে। দেশে সিমেন্ট শিট ব্যবহারের ফলে ডিম, দুধ ও মাংস উৎপাদন প্রায় ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সিমেন্ট শিট মৎস্য ও গবাদি-পশুকে রোগ-ব্যাধি থেকে শুধু রক্ষাই করছে না সেই সঙ্গে মৃত্যুহার প্রায় ১০ শতাংশ কমাচ্ছে।’

মুসাদ্দিক হোসেন বলেন, ‘নানা কারণে বাংলাদেশ উচ্চ তাপমাত্রার ঝুঁকিতে রয়েছে, যা প্রাণিসম্পদ ও কৃষি খাতের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ। এই দুশ্চিন্তা কমাতে সিমেন্ট শিট বড় ভুমিকা রাখতে পারে। শিগুলো ৬ স্তরের হওয়ায় অতিরিক্ত গরমের সময় শেডের ভেতরের তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করে, এতে শেডের ভিতরের পরিবেশ তুলনামুক শীতল থাকে। যা মুরগি ও গবাদি পশুর হিট স্ট্রোকে মৃত্যু হ্রাস করে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘এই শিট ব্যবহারে খামার নির্মাণ ব্যয় ৩০ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করে। যা উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনতে সহায়তা করে।’

প্রবন্ধে আরও বলা হয়, বিভিন্ন গবেষণা বলছে অতিরিক্ত হিটের কারণে গবাদিপশু ও মুরগি ২৫ শতাংশ পর্যন্ত খাদ্য গ্রহণ কমিয়ে দেয়, যার ফলে উৎপাদন হ্রাস পায়। সিমেন্ট শিট দিয়ে তৈরি শেড নির্মাণের ফলে তাপ প্রায় ৬-ডিগ্রী সেলসিয়াস হ্রাস করার ফলে গবাদি পশু ও মুরগির খাদ্য গ্রহণ বৃদ্ধি পায়। যা গবাদি পশু ও পোল্ট্রি খাতে হিট স্টোকে মৃত্যুহার হ্রাস করে ও ডিম, দুধ, মাংসের উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়।

দেশে বর্তমানে মোট ১ দশমিক ২৫ লাখ পোল্ট্রি খামার রয়েছে যার মধ্যে ৩৫ শতাংশ খামের শেড সিমেন্ট শিট দিয়ে তৈরি। এতে বছরে ডিমের উৎপাদন প্রায় ১১ শতাংশ বা ২৫৭ কোটি পিস ডিম বেড়েছে। যদি শতভাগ খামারে সিমেন্ট শিট ব্যবহার করা যায় তবে বছরে প্রায় ৭০০ কোটি পিস ডিম অতিরিক্ত উৎপাদন হবে, যার বাজার মূল্য প্রায় ৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এছাড়া দেশে প্রায় ৪ দশমিক ২৫ লাখ গবাদি পশুর (ডেইরি ও ফ্যাটেনিং) বাণিজ্যিক খামার রয়েছে। এর বাইরে অন্যান্য গৃহপালিত গবাদি পশুসহ দেশে মাংসের উৎপাদন বছরে ৮৭ দশমিক ১০ লাখ টন।

বর্তমানে, দুগ্ধ ও পশু মোটাতাজাকরণ খামাগুলোর প্রায় ১৯ শতাংশ শেড সিমেন্ট শিট দিয়ে তৈরি, যদি শতভাগ খামার সিমেন্ট শিট দিয়ে তৈরি করা যায় তবে দেশে বছরে মাংসের উৎপাদন অতিরিক্ত প্রায় ৬ লাখ টন বাড়বে যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।

অ্যাসোসিরেয়শন তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত সিমেন্ট শিট সেক্টরে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। বর্তমানে দেশে ৫টি সিমেন্ট শিট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক প্রায় ৩ দশমিক ৬২ লাখ মেট্রিক টন উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে। যার মধ্যে আনোয়ার সিমেন্ট শিট লি. সিংহভাগ উৎপাদন ও বাজারজাত করে।

সারাবাংলা/জিএস/একে

ইআরএফ গবাদী পশু পালন সিমেন্ট শিট

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর