বিচারকের আদেশ জালিয়াতি: আদালতের বেঞ্চ সহকারী কারাগারে
৭ জুলাই ২০২৪ ১৯:১২
ঢাকা: বিচারকের আদেশ জালিয়াতির অভিযোগের মামলায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৯ এর বেঞ্চ সহকারী খন্দকার মোজাম্মেল হক জনিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (৭ জুলাই) তিন দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন চন্দ্র সরকার। এসময় আসামি পক্ষের আইনজীবী কামাল হোসেন পাটোয়ারী জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
শুনানি শেষে আদালত জনির জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন।
এর আগে, গত ৩ জুলাই ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে খন্দকার মোজাম্মেল হক জনি নামে ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারীকে আটকের নির্দেশ দেন। পরে একই আদালতের স্টেনোগ্রাফার মো. নূরে আলম বাদী হয়ে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন। পরদিন তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি জনি শেরেবাংলা নগর থানার এক মামলায় ২০২২ সালে ৯ মার্চ ও ২১ মার্চ দু’টি ভিন্ন আদেশ নথিতে লিপিবদ্ধ করেন। যাতে প্রদত্ত স্বাক্ষর অত্র আদালতে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারকের নয়। বর্ণিত মামলায় বিগত ইং ২১/০৩/২০২২ তারিখের প্রচারিত আদেশে আসামি অহিদুজ্জামানকে The Code of Criminal Procedure, 1898 এর ২৪৯ ধারা অনুযায়ী মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে মুক্তি দেওয়ার আদেশ দেন। আদেশের স্বাক্ষর অত্র আদালতে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারকের না হওয়া এবং ওই আদেশ বেঞ্চ সহকারী খন্দকার মোজাম্মেল হক কর্তৃক লিখিত হওয়ায় এটি সুস্পষ্ট হয় যে, তিনি বিচারকের স্বাক্ষর জাল করে বেঞ্চ সহকারী হিসেবে তার উপর অর্পিত দায়িত্বের বরখেলাপ করে বিচারকের অগোচরে আদেশ প্রচার করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে ২০২৪ সালের ৩ মার্চ যাত্রাবাড়ী থানার এক মামলার বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য বিচারকের আদালতে পাঠানো হলে আসামি বিচারকের অগোচরে ২০২৪ সালের ৪ এপ্রিল মামলার আসামি নাসির উদ্দিন ও আশিকুর রহমানকে প্রবেশন দেওয়ার আদেশ কজলিস্ট ও কোর্ট ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করেন। যদিও এইরূপ কোনো আদেশ বিচারক দেননি। এমনকি নথিটি শুনানির জন্য বিচারকের কাছে উপস্থাপনও করা হয়নি। আসামি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়ে এমন ন্যক্কারজনক অপরাধ সংঘটন করেছেন বলে প্রতীয়মান হয়।
এসব বিষয়ে গত ৩০ জুন তাকে লিখিত ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলে তিনি গত ১ জুলাই নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করে কারণ দর্শানোর জবাব দেন। তার লিখিত ব্যাখ্যা থেকে এটি সুস্পষ্ট যে, তিনি অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়ে এসব হীন অপরাধ সংঘটন করেছেন যা চাকরিবিধি ও শৃঙ্খলা বিধিমালার পরিপন্থি।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এমও