কক্সবাজারে ডেঙ্গু আক্রান্তদের বেশিরভাগই রোহিঙ্গা, অভাব সচেতনতার
১০ জুলাই ২০২৪ ০৮:২৬
কক্সবাজার: জেলায় বর্ষা মৌসুমে মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার বাড়লেও এবারের চিত্র ভিন্ন। অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে ডেঙ্গু। তবে জেলার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ডেঙ্গুর প্রকোপ অন্যস্থানের চেয়ে বেশি রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেওয়া তথ্যে, কক্সবাজারে গত ২ বছরে (২০২২-২০২৩) ডেঙ্গুতে মারা গেছে ৬৮ জন। আর এবছর (২০২৪) তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১ জনে। ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার উল্লেখযোগ্য হারে কমে এলেও বরাবরই জনসচেতনতার কমতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কক্সবাজারের ২৫০ শয্যার সদর হাসপাতালের ৫ম তলায় ডেঙ্গু ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, গত বছরগুলোর মতো এবারে তেমন রোগীর চাপ নেই। ওয়ার্ডে’র দৈনিক প্রতিবেদন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী সোমবার (৮ জুলাই) পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ১৩ জন। তার মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় পজেটিভ রোগীর সংখ্যা ছিল ৫ জন।
কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসের পরিসংখ্যানবিদ পঙ্কজ পাল জানান, ২০২২ সালের হিসাব (জানুয়ারি-ডিসেম্বর) অনুযায়ী ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ১৭ হাজার ৩৯০ জন। তার মধ্যে রোহিঙ্গা রোগী ১৫ হাজার ৩৫২ জন। আর স্থানীয় (বাংলাদেশি) রোগির সংখ্যা ২ হাজার ৩৮ জন। এদের মধ্যে মারা গেছে ৬৮ জন। মৃতদের মধ্যে রোহিঙ্গা ৩০ জন, স্থানীয় ৯ জন।
২০২৩ সালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ১৮ হাজার ২১১ জন। এরমধ্যে রোহিঙ্গা রোগীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৮৯৫ আর স্থানীয় ৪ হাজার ৩১৬ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১৯ জন। নিহতদের মধ্যে রোহিঙ্গা ১৫ জন, স্থানীয় ৪ জন।
আর ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১ জন রোহিঙ্গা। যদিও এসময়ে অন্যান্য বছর ১৫ থেকে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডা. আসিফ আহমেদ হাওলাদার বলেন, ‘কক্সবাজারে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এটি স্বাস্থ্য অধিদফতরের বড় সফলতা। তবে জনসচেতনতায় এখনো ঘাটতি রয়েছে। লোকজনকে আরো সচেতন হতে হবে।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, জমে থাকা পানিতে জন্ম নেয় ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা। বর্ষাকালে এর প্রকোপ বাড়ে। সাধারণত ৪-৫ দিনের জমে থাকা পরিষ্কার পানিতেই এডিস মশা জন্ম নেয়। বাড়ির চারদিকে ডাবের খোসা, পলিথিনের ব্যাগ বা অপ্রয়োজনীয় পাত্রে জমে থাকা পানিতে এই মশা জন্ম নেয়। তাই ঘর ও চারপাশ পরিষ্কার করেই শুধু ডেঙ্গু প্রতিরোধ সম্ভব।
এদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমে এলেও সচেতন স্থানীয়রা বলছেন, মশা নিধনে পৌরসভার ভূমিকা আরো জোরদার হওয়া দরকার।
সারাবাংলা/এমও