Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে ২ দেশের বাণিজ্যে ভারসাম্য চলে আসবে’

গোলাম সামদানী,‌ স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১০ জুলাই ২০২৪ ১০:৪৪

বেইজিং (চীন) থেকে: প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে মধ্যে দিয়ে সামনের দিনে বাংলাদেশ এবং চায়নার ট্রেডিং এবং বিনিয়োগ পরিস্থিতির একটা অভূতপূর্ব উন্নয়ন হবে। আমরা আশা করছি আমাদের দু’দেশের যে বাণিজ্য ভারসাম্য আছে সেটা অনেকটা গ্রহণযোগ্য জায়গায় চলে আসবে প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের মাধ্যমে। বিশেষ করে বাংলাদেশের যে অগ্রগতি হচ্ছে সেটা অব্যাহত রাখতে চীনা বিনিয়োগকারীরা যেন বাংলাদেশে আসে এবং আগামীতে তারা যাতে আরো বড় মাত্রায় বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে, সেটিই এবারের বিজনেস সামিটের প্রধান উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিসিআই‌)।

গতকাল মঙ্গলবার (৯ জুলাই) চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত ‘দ্যা রাইজ অব বেঙ্গল টাইগার: ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট অপরচুনিটিজ বিটুইন বাংলাদেশ অ্যান্ড চায়না’ সামিট শেষে বিসিসিসিআই সাধারণ সম্পাদক আল মামুন মৃধা সারাবাংলাকে এসব কথা বলেন। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে উভয় দেশের সরকারের নীতিনির্ধারক এবং সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারী এবং বাণিজ্য সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (বিসিসিসিআই‌) ২০০৩ সাল থেকে দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে। বাণিজ্য সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা। সাত শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বর্তমানে বিসিসিসিআইয়ের সদস্য, যার মধ্যে প্রায় প্রায় ৫০০ প্রতিষ্ঠান চীনের। বাংলাদেশে চীনের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ বাড়ানোসহ দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক জোরদার ও বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বিসিসিসিআই কাজ করছে।

আল মামুন মৃধা বলেন, ‘আপনারা অবগত আছেন যে বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, এবার বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিটের অন্যতম সহ-আয়োজক এবং আমাদের তরফ থেকে প্রায় এক হাজার চাইনিজ বিনিয়োগকারী এবং যারা ব্যবসায়ী আছেন, যারা বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা করছেন বা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সাথে ব্যবসা করতে চান এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সাথে নতুন কি ধরনের এভিনিউ খোলা যায় সেই ব্যাপারে একাডেমিক রিসার্চ গুলো তারা করতে চান। এরকম সকল স্টেক হোল্ডারদেরকে এবার আমরা এই ইনভেস্টমেন্ট সামিটে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। তাদের কাছ থেকে যে রেসপন্স আমরা পাচ্ছি সেগুলো বেশ পজিটিভ মনে হয়েছে আমাদের কাছে।’

বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার গত দুই দশক ধরেই এই ভূমিকা পালন করে আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২০০৩ এ বাংলাদেশের সাথে চীনের ব্যবসা দেড় বিলিয়ন ডলারেরও কম ছিল। গত দুই দশক ধরে বাংলাদেশের সাথে চীনের যে প্রাইভেট সেক্টরে ব্যবসার যে প্রসার হয়েছে তার পেছনে বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ একটা অন্যতম অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। সামনের দিনেও আমাদের এই কার্যক্রমগুলো আরও বৃদ্ধি করতে পারবো বলে আমরা ধারণা করছি। আমাদের নতুন নতুন ডিল হচ্ছে যেখানে আমরা বিনিয়োগকারীদের ডেডিকেটেড সার্ভিস দেয়ার জন্য ডেডিকেটেড টেবিল হচ্ছে, ডেডিকেটেড সেক্রেটারি হচ্ছে। আমাদের ট্রেড স্পিউট যত রকম আছে সেগুলো কে মিটগেট করার জন্য আমাদের আলাদা একটা লিগ্যাল প্যানেল হয়েছে। আমাদের নতুন যারা বিনিয়োগকারী আসবেন তাদেরকে সব ধরনের লিগ্যাল এসিস্টেন্স দেওয়া হবে সেই লিগ্যাল প্যানেল থেকে এবং সেটা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। চায়নাতে বিভিন্ন রকম এক্সিবিশন হয় যেগুলো দ্বারা বাংলাদেশে যারা ব্যবসায়ী আছেন তারা বহুমাত্রিক ভাবে উপকৃত হতে পারবেন। চাইনিজদের কাছ থেকে যেই আশ্বাস আমরা পেয়েছি, যে বাংলাদেশের জন্য একটা স্পেশাল ডিস্কাউন্ট বা প্রিভিলেজ থাকবে সামনের দিনগুলোতে যেন বাংলাদেশিরা এখানে এক্সিবিউটর হিসেবে আসতে পারেন এবং বেশি মাত্রায় ভিজিটর হিসেবে আসতে পারেন।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির যত মেম্বার আছেন তারা যেন সহজে ভিসা পেতে পারে সে ব্যাপারেও চায়না দূতাবাসের তরফ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে এবং উভয় দেশের মধ্যে যোগাযোগগুলো যেন আরও বেশি মাত্রায় হয়। এছাড়াও যেসব চীনা বিনিয়োগকারীরা আছেন তাদের যে বড় বড় ডিলেগেশন্সগুলো সামনের দিনে আসবে, তাদের সাথে আমরা যেন সমন্বয় সাধন করতে পারি সেজন্য উভয় দেশ কাজ করছে। আমরা আশা করছি এবছরের শেষ নাগাদ হয়তো বা আমরা প্রথম চাইনিজ ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ট্রেড সামিটের একটা ভার্সন বাংলাদেশেও দেখতে পাবো। আশা করছি যে বড় মাত্রায় একটা চীনা বিনিয়োগকারীদের একটা সম্মেলন হয়তো ঘটাতে পারবো এ বছরের শেষ নাগাদ।’

এ সময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, দেশটিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত, বাংলাদেশ চায়না চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (বিসিসিসিআই‌) সভাপতি গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা, বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি বিনিয়োগকারী এবং স্টেকহোল্ডাররা অংশ নেন।

সারাবাংলা/জিএস/এমও

চীন সফর টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্যে ভারসাম্য বিসিসিসিআই


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর