কবি মাকিদ হায়দার না ফেরার দেশে
১০ জুলাই ২০২৪ ১২:৫৯
ঢাকা: কবি মাকিদ হায়দার না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। বার্ধক্যসহ নানা রোগে ভুগছিলেন সত্তর দশকের অন্যতম এই কবি। তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
মাকিদ হায়দারের পরিবারের সদস্যরা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বুধবার (১০ জুলাই) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উত্তরার নিজ বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন কবি। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
পাঁচ দশক ধরে সাহিত্যচর্চায় নিবিষ্ট ছিলেন মাকিদ হায়দার। আধুনিক ভাষারীতিতে গড়ে তুলেছিলেন নিজস্ব শৈলী। কবি হলেও তার লেখা গল্পও পাঠক-বোদ্ধাদের কাছে সমাদৃত।
পাবনার সন্তান মাকিদ হায়দারের দাফন হবে পাবনাতেই, পারিবারিক কবরস্থানে। কবির মরদেহ বাংলা একাডেমিতে নেওয়ারও কথা ছিল। তবে পরিবার জানিয়েছে, রাজধানীজুড়ে শিক্ষার্থীদের চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহ ঢাকায় নেওয়া হবে না। তারা কবির মরদেহ নিয়ে পাবনার পথে রওয়ানা হচ্ছেন।
কবি মাকিদ হায়দারের জন্ম ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর, পাবনার বিখ্যাত হায়দার পরিবারে। তারা সাত ভাই, সাত বোন। ভাইদের মধ্যে মাকিদ ষষ্ঠ। তার অন্য ভাইয়েরাও সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনে স্বনামধন্য।
মাকিদ হায়দারের দুই ভাই বরেণ্য নাট্যকার জিয়া হায়দার ও রশিদ হায়দার প্রয়াত। আরেক ভাই দাউদ হায়দার স্বনামধন্য কবি, বর্তমানে নির্বাসিত। বাকি তিন ভাই জাহিদ হায়দার, আবিদ হায়দার ও আরিফ হায়দারও সাহিত্য-সংস্কৃতিতে যুক্ত।
ছোটবেলা থেকেই ডানপিটে ছিলেন মাকিদ হায়দার। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাবনা শহরে রেশনের দোকান দিয়েছিলেন। রেশনের চাল-চিনি-তেল গোপনে সরবরাহ করতেন মুক্তিযোদ্ধাদের। পরে কাব্যচর্চাকেই নিজেদের গন্তব্য হিসেবে বেছে নেন। সরকারি চাকরি করলেও মন-মননে তিনি ছিলেন আপাদমস্তক কবি।
১৯৭৬ সালে মাকিদ হায়দারের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘রোদে ভিজে বাড়ি ফেরা’ প্রকাশিত হয়। এরপর একে একে প্রকাশিত হয়েছে আপন আঁধারে একদিন (১৯৮৪), ও পার্থ ও প্রতিম (২০০৭), কফিনের লোকটি (২০১১), যে আমাকে দুঃখ দিলো (২০১২), প্রিয় রোকানালী (২০১৩), মুমুর সাথে সারা দুপুর (২০১৪)। গল্পগ্রন্থ ও প্রবন্ধের বইও রয়েছে তার।
কবিতায় অবদানের জন্য ২০১৯ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত করা হয় মাকিদ হায়দারকে। এ ছাড়াও অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।
সারাবাংলা/টিআর