একযোগে আন্দোলনে রাবি-রুয়েট, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
১০ জুলাই ২০২৪ ১৭:৫১
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের একদফা দাবিতে একযোগে মহাসড়ক অবরোধ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১০ জুলাই) দুপুর ১টায় নগরীর চৌদ্দ পাইয়ের বিহাস বাইপাস মোড় অবরোধ করেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেলা ১১টা থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোড়ে অবস্থান নিতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর ১২টায় প্যারিস রোড থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনের ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেন রাবি শিক্ষার্থীরা। এরপর বেলা সোয়া ১২টায় রুয়েটের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যুক্ত হয় রাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। পরে একযোগে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রাজশাহী নগরীর চৌদ্দ পাইয়ের বিহাস বাইপাস মোড়ে অবস্থান নেন তারা। এতে যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়া তীব্র জট সৃষ্টি হয়।
এ সময় আন্দোলনকারীরা ‘আমার সোনার বাংলায়, কোটা প্রথার ঠাঁই নাই’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্র সমাজ জেগেছে’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’, ‘কোটা প্রথার বিরুদ্ধে, লড়াই করো একসাথে’, ‘দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হবে অবসান’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে আন্দোলন মুখরিত করে এবং এইসব স্লোগান সম্বলিত লেখা প্লাকার্ড প্রদর্শন করে।
আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী রেজওয়ান গাজী মহারাজ বলেন, ‘আদিবাসীরাও অনেক এগিয়ে গেছে। তারাও অনেক ভালো ভালো চাকরি করছে। আমরা কোনোভাবেই তাদের অনগ্রসর জাতি বলতে পারি না। আবার মেয়েদের অনগ্রসর বলা হচ্ছে। তারা কেন এটা বলে যে, আমার মাথায় আসে না। আমরা আগামী দিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ও রুয়েটের সঙ্গে একত্রিত হয়ে আন্দোলনে নামব।’
আন্দোলনে অবস্থান নেওয়া রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রনিক অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী আল মামুন বলেন, ‘আমরা এই কোটা পদ্ধতির সংস্কার চাই। আমরা চাই যারা মেধাবী তারা যেন তাদের ন্যায্য অধিকার পায়। তারা যেন তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে নিজেদের প্রমাণ করতে পারে। কোটার কারণে মেধাবীরা তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কোটা পুনর্বহাল রাখা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং ভিত্তিহীন।’
আন্দোলনরত বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সানজিদা ডালি বলেন, ‘কোটা সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ রাখা যেতে পারে এবং সেটা আইনের ভিত্তিতে যারা অনগ্রসর তাদের জন্য। মুক্তিযোদ্ধা কোটার ক্ষেত্রে শুধু মুক্তিযোদ্ধা এবং তার সন্তানেরা কোটা পাবে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো নাতি-নাতনি কোটা সুবিধা নিতে পারবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত নির্বাহী বিভাগ আমাদের দাবি মেনে না নিবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা রাস্তায় আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
উল্লেখ্য, এর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবিতে আন্দোলন করলেও বর্তমানে সারা দেশের সঙ্গে সমন্বয় করে এক দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে। চলমান এই আন্দোলনে বিগত দিনগুলোতে একাধিকবার মহাসড়ক অবরোধ এবং সেইসঙ্গে রেললাইন অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা।’
সারাবাংলা/পিটিএম