ভালুকার সেই দুর্ঘটনা তদন্তের দায়িত্বে পিবিআই
১০ জুলাই ২০২৪ ২৩:৫৪
ঢাকা: ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মা ও দেড় বছরের শিশু আহত হওয়ার ঘটনার তদন্তের দায়িত্বভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (১০ জুলাই) বিচারপতি এম আর হাসান এবং বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এদিন দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িত গাড়ি ও আসামিকে গ্রেফতার বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু পুলিশের দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, তারা আসামি ও গাড়ি শনাক্ত করতে এবং খুঁজে বের করতে পারেনি।
তখন শুনানিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘যদিও আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে প্রচলিত পদ্ধতিতে তদন্ত করে গাড়ি ও আসামিকে শনাক্ত করার। যেহেতু ভালুকা থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এখনও আসামি শনাক্ত করতে পারে নাই। সেহেতু অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি পিবিআইকে দিলে প্রকৃত আসামি দ্রুত গ্রেফতার হবে। সেই সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে জড়িত গাড়ি দ্রুত সময়ে শনাক্ত করা সম্ভব হবে।’
শুনানি শেষ আদালত মামলাটি তদন্ত করার জন্য পিবিআই প্রধানকে নির্দেশ দেন। এবং সংশ্লিষ্টদের তদন্তে সহযোগিতা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালত একইসঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তাকে মামলার নথিপত্র সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন।
আদালত আগামী ১৪ আগস্ট মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। এবং ওই তারিখে পিবিআইকে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন আইনজীবী সঞ্জয় মন্ডল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইয়াসমিন বেগম বিথী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মুজিবুর রহমান।
এর আগে, গত ৯ মে দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টার দিকে স্কয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় ওই শিশু ও তার মা সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। তবে কীভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা জানা যায়নি। পরে ৯৯৯ কল পেয়ে পুলিশ ওই শিশু ও তার মাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ভালুকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে মা মারা যান। তখন মা হারা শিশুটির চিৎকারে পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে। যেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
পরে ভালুকা হাইওয়ে থানার পুলিশ জানায়, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মা ও বেঁচে যাওয়া শিশুর পরিচয় মিলেছে। মায়ের নাম জায়েদা আক্তার (৩২)। তিনি সিলেট সুনামগঞ্জ জেলার দুয়ারা উপজেলার খুশিউড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. রমিজ উদ্দিনের মেয়ে। বেঁচে যাওয়া দেড় বছর বয়সী শিশুটির নাম জাহিদ হোসেন। ধারণা করা হচ্ছে, ঘটনার দিন রাতে তিনি রাস্তা পারাপার হতে গিয়ে এ দুর্ঘটনার শিকার হন।
পরে বিষয়টি হাইকোর্টের নজরে আনেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। এবং আদালত গত ১৩ মে র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) এবং ময়মনসিংহের পুলিশকে এ ঘটনায় জড়িত আসামিকে গ্রেফতার করতে নির্দেশ দেন। গত ১৩ মে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এরপর গত ২০ মে রাত সাড়ে ৮টায় জেলা শিশু কল্যাণ বার্ডের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে এক নিসন্তান দম্পতির কাছে ওই শিশুকে হস্তান্তর করা হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/পিটিএম