Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মিছিলে যাওয়ায় আন্দোলনকারীকে ছাত্রলীগ নেতার মারধর

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট
১৫ জুলাই ২০২৪ ১৭:২৬

কুষ্টিয়া: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ মিছিলে যাওয়ায় এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এছাড়াও ওই শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আইন বিভাগের স্নাতক ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও জিয়াউর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র মাহফুজ উল হক নামে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হাফিজ একই হলে থাকেন। তিনি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয়ের অনুসারী। এছাড়া রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এই নেতার বর্তমানে ছাত্রত্ব নেই বলেও জানা গেছে।

সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, ছাত্র-উপদেষ্টা ও প্রভোস্টের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগপত্রে মারধরের ঘটনা উল্লেখ করে বিচার চান ভুক্তভোগী। পাশাপাশি নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে নিরাপত্তা প্রদানের দাবি জানান।

লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, ভুক্তভোগী শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ৪২০ নং কক্ষে থাকেন। সকাল ১১টায় তিনি কক্ষেই পড়ছিলেন। পরে সাড়ে ১১টার দিকে আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষবর্ষের সোহানুর রহমান তাকে ছাত্রলীগের প্রোগামে যাওয়ার জন্য ডাকতে যান। এর কিছুক্ষণ পর শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হাফিজ কক্ষের সামনে যান এবং রাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিক্ষোভ মিছিলে গিয়েছিলেন কি-না জানতে চায়।

এ সময় মাহফুজ আন্দোলনে গিয়েছে শুনলে হাফিজ ক্ষিপ্ত হন। এক পর্যায়ে বলেন, ‘তুই কি রাজাকার? রাজাকার না হলে ওই মিছিলে গেলি কেন?’ এসময় মাহফুজ বলেন, ‘আমি রাজাকার হবো কীসের জন্যে? কোনটা ব্যঙ্গার্থক আর কোনটা আসলেই সেটা তো আপনার বোঝা উচিত।’

এসময় উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হাফিজ কক্ষে থাকা ঝাড়ু দিয়ে দুই বার মাথায় সজোরে আঘাত করলে ঝাড়ু ভেঙে যায়। এছাড়াও অভিযুক্ত আরও মারতে উদ্যত হলে তাকে ডাকতে আসা সোহান এবং সৌরভ শেখ ঠেকায়। যাওয়ার সময় হাফিজ হুমকির সুরে বলে যান, ‘ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম থেকে ফিরে যেন তোকে হলে না দেখি। যদি কেউ কিছু বলে, বলবি আমার নাম হাফিজ। তোর কে আছে দেখবোনে।’

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী মাহফুজ উল হক বলেন, প্রত্যেকের ভিন্ন মত থাকতেই পারে। আন্দোলনে যাওয়ার কারণে তিনি আমাকে হুমকি-ধামকি ও মারধর করতে পারেন না। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই আমার যথাযথ নিরাপত্তা প্রদান এবং হুমকি ও মারধরের বিষয়ে বিচারের দাবি জানাচ্ছি।

ছাত্রলীগ কর্মী সোহানুর রহমান বলেন, ‘আমি সকালে ছাত্রলীগের মিছিলের জন্য ডাকতে গিয়েছিলাম। মাহফুজের রুম থেকে পাশের রুমে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করেই হাফিজ ভাই হিট করে বসছে। পরে আমি ভাইকে টেনে নিয়ে আসি।’

অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হাফিজ বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। ঘুম থেকে উঠেই ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে গিয়েছি। আমি আর সোহান ওই হল দেখাশোনা করি। তাই আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।’

শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, ‘ওই ছেলেটা (ভুক্তভোগী) গতকাল রাতে (রবিবার) ‘রাজাকার রাজাকার’ শ্লোগান দিয়েছিল। এ কারণে হয়তো কথাকাটাকাটি হয়েছে। তবে মারধরের বিষয় ভিত্তিহীন। মারধরের বিষয়ে আমরা সমর্থন করি না। যদি এমন হয়ে থাকে সাংগঠননিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দীকি আরাফাত বলেন, ‘আমি যতদূর খোঁজ নিয়ে জেনেছি মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে যদি বিষয়টি প্রমাণিত হয়। আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’

হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন বলেন, ‘হলে যারা থাকে সবাই তো ছাত্রলীগ। তারাই বিচার করবে। সভপতি-সেক্রেটারি বিচার না করলে তারপর আমি দেখব।’

প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।’

সারাবাংলা/একে

ইবি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কোটা আন্দোলন ছাত্রলীগ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

৯০০তম গোলে ইতিহাস গড়লেন রোনালদো
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:০৪

সম্পর্কিত খবর