আন্দোলনে সংঘর্ষের ঘটনায় বরিশালে ৮ মামলা, গ্রেফতার ৯৮
২৫ জুলাই ২০২৪ ১৭:৫১
বরিশাল: কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষের ঘটনায় বরিশালে ৮টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে মহানগরের চার থানায় পাঁচটি মামলা ও জেলার তিন থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। এ সব ঘটনায় ৯৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারদের অধিকাংশই বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে বরিশাল মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (স্টাফ অফিসার) প্রণয় রায় জানান, কোটাবিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় মহানগর পুলিশের চার থানায় পুলিশ বাদী হয়ে পাঁচটি মামলা করেছে। এ ছাড়াও মঙ্গলবার রাতে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার রাজীব বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। এই ছয়টি মামলায় নামধারী ৩৫ জন এবং অজ্ঞাতনামা তিন হাজার তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত ৭৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় অভিযুক্ত অন্যান্য নাশকতাকারীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম জানান, জেলার ১০ থানা এলাকা থেকে গত তিন দিনে ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকেরগঞ্জ, বানারীপাড়া ও হিজলা থানায় তিনটি মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়। তিনটি মামলায় ২১ জন নামধারী ও ১৬০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
বরিশালের জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, বরিশালের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। মানুষ যেন ভোগান্তিতে না পড়েন এ বিবেচনায় কারফিউ শিথিলের সময় বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২/১ দিনের মধ্যে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
বৈষ্যম্যবিরোধী আন্দোলনে ১৭ জুলাই নথুল্লাবাদ, চৌমাথা এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ। এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে অর্ধশত আহত হয়। ওইদিন টানা ১০ ঘণ্টা চেষ্টা করেও সড়কের দখল নিতে পারেনি পুলিশ। এরপরের দিনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গেও সংঘর্ষে জড়িয়ে সড়ক ছাড়া করতে না পেরে পিছু হটে পুলিশ। এই দুই ঘটনায় নথুল্লাবাদে একটি পুলিশ বক্স, চৌমাথায় পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয় আন্দোলনকারীরা। এরপরের দিন বিকেলে চৌমাথা এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। বিএনপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিক আব্দুল্লাহর মহড়ায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে সাদিক আব্দুল্লাহর অনুসারীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মহানগর বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মীকে গুরুতর জখম করে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে কোতোয়ালি মডেল থানায় মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরোয়ার রাজীব বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক, সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন সিকদারসহ ২৭ জন নামধারী এবং অজ্ঞাত ৮০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্যসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করতে জনতাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি এবং মারধর করে গুরুতর ও সাধারণ জখম, বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
সারাবাংলা/একে