Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পুলিশের অবকাঠামো উন্নয়নে ৭৩০ কোটি টাকার প্রকল্প

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৬ জুলাই ২০২৪ ১০:৩২

ঢাকা: বাংলাদেশ পুলিশের অবকাঠামো উন্নয়নে আসছে ৭৩০ কোটি ৫৭ লাখ টাকার প্রকল্প। এটি বাস্তবায়ন হলে পুলিশের বর্ধিত জনবলের জন্য দাপ্তরিক ও আবাসিক সুবিধা সৃষ্টির মাধ্যমে দ্রুত সময়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা পালন সম্ভব হবে। এ জন্য ‘দেশের বিভিন্ন ফাঁড়ি,তদন্ত কেন্দ্র, ক্যাম্প, নৌ-পুলিশ কেন্দ্র, রেলওয়ে পুলিশ থানা ও আউটপোস্ট, ট্যুরিস্ট পুলিশ সেন্টার এবং হাইওয়ে পুলিশের জন্য থানা বা আউটপোস্ট নির্মাণ’ শীর্ষক একটি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। অনুমোদন পেলে এটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পুলিশ এবং গণপূর্ত অধিদফতর।

বিজ্ঞাপন

প্রস্তাবটি নিয়ে আগামী ২৫ জুলাই (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। সভায় সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান।

এ প্রসঙ্গে ড. এমদাদ উল্লাহ মিয়ান সারাবাংলাকে বলেন, ‘সম্প্রতি একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুলিশের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। এছাড়া বাস্তব কারণে এরকম প্রকল্পের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।’

প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে—

ফাঁড়ি ও ক্যাম্প: থানা তদন্দ কেন্দ্রের ন্যায় পুলিশ ক্যাম্প ও ফাঁড়িগুলো জরুরি প্রয়োজন ও আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে সফলতার সঙ্গে ভুমিকা রাখছে। বর্তমানে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ, বিদেশি নাগরিকদের সার্বক্ষণিক মনিটরিং ও নিরাপত্তা এবং কেপিআই (সংরক্ষিত এলাকা) গুলোর নিরাপত্তা বিধানে ক্যাম্প গুলোর গুরুত্ব ও ভুমিকা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এগুলোর অধিকাংশই ক্ষণস্থায়ীভাবে তৈরি, ভাড়া বাড়িতে অথবা জরাজীর্ণ ভবনে কার্যক্রম কোনো রকমে পরিচালিত হচ্ছে।

হাইওয়ে পুলিশ: সড়ক দূর্ঘটনা, সড়কে অপরাধজনিত বিভিন্ন কার্য (ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি), ফিটনেস বিহীন ও অনিয়ন্ত্রিত যানবাহন চলাচল প্রভৃতি ঘটনাগুলোকে নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং করতে হাইওয়ে পুলিশকে ২৪ ঘণ্টা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হচ্ছে। কিন্তু যথাযথ ভৌত অবকাঠামো, অফিস ও যানবাহনের অপ্রতুলতার কারণে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে বিঘ্ন ঘটছে। এ জন্য হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা বাড়াতে হবে।

নৌ পুলিশ: নৌ-পুলিশ, নৌ-পথের চলাচলের নিরাপত্তা সম্পর্কিত যাবতীয় কার্যক্রম যেমন, নৌ পথে অপরাধ, ছিনতাই, ডাকাতি থেকে যাত্রী ও মালামাল রক্ষা করা, অধিক যাত্রী ও মালামাল বোঝাইয়ের বিরুদ্ধে টহল দেওয়া, ফিটনেসবিহীন নৌযানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং করে আসছে। কিন্তু যথাযথ অবকাঠামোগত সুযোগ সুবিধা যেমন, অফিস যানবাহন ও অন্যান্য লজিস্টিক স্বল্পতার কারণে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য হচ্ছে। এজন্য নৌ পুলিশের অবকাঠামোগত সংস্কার ও উন্নয়নের বিকল্প নেই।

বিজ্ঞাপন

রেল পুলিশ থানা ও ফাঁড়ি: বিদ্যমান রেল পুলিশের থানা ও ফাড়িগুলো জরাজীর্ণ। এগুলোর নতুন নির্মাণ ও সংস্কার খুবই অত্যাবশ্যক।

ট্যুরিস্ট পুলিশ: সীমিত অবকাঠামো ও লজিস্টিক দিয়ে পর্যটন শিল্পের এ বিকাশযান অগ্রযাত্রার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কাজ করতে ট্যুরিস্ট পুলিশকে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে । এ জন্য ট্যুরিস্ট পয়েন্টগুলোতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে ট্যুরিস্ট পুলিশ সেন্টার নির্মাণ করা এখন সময়ের দাবি।

প্রকল্প প্রস্তাব নিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের সেক্টর ডিভিশনের মতামত: প্রকল্পের অধীনে যে ১৪০টি ফাঁড়ি, ক্যাম্প, তদন্ত কেন্দ্র, চেকপোস্ট, সেন্টার, আউটপোষ্ট নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর কোনো কোনো নকশা বা ডিজাইন উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) পাওয়া যায় নি। এছাড়া ১৪০টি ফাঁড়ি, ক্যাম্প, তদন্ত কেন্দ্র, চেকপোস্টের জন্য ১৪ কোটি টাকার আসবাবপত্র ক্রয়ের প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু ডিপিপিতে এ সব আসবাবপত্রের ব্রেকডাউন ও একক মূল্য বিবরণ সংযুক্ত নেই। জনপ্রশাসনের প্রাধিকার নীতিমালার প্রাপ্যতা অনুযায়ী কর্মচারীদের আসবাবপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী দেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

প্রকল্প দপ্তরের জন্য আসবাবপত্র ও তৈজসপত্র বাবদ ৩৬ লাখ টাকা, মাটি পরীক্ষা বাবদ ২ কোটি ১০ লাখ টাকা, রাজস্ব খাতে ছাপানো, বাঁধাই কোডে মোট এক কোটি ১০ লাখ টাকা, সম্মানি বাবদ এক কোটি ২৭ লাখ টাকা, ওয়াসা, সিটি করপোরেশন, টিএন্ডটি, পল্লি বিদ্যুৎ, পিডিবি, ডেসা, ডেসকোর সার্ভিস চার্জ বাবদ ৪ কোটি ২০ লাখ টাকা, প্রকল্প দফতরের জন্য টেলিফোন ও ফ্যাক্স বিল বাবদ ১৮ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে, যা অধিক বলে প্রতীয়মান হয়।

এছাড়া প্রকল্পে দ্বিতীয় তলা পুলিশ ফাঁড়ি বর্গফুট প্রতি খরচ ৫ হাজার ২২১ টাকা, তিন তলা টুরিস্ট পুলিশ সেন্টারের বর্গফুট প্রতি ব্যয় প্রায় ৪ হাজার ৪৪৩ টাকা, চারতলা ফাউন্ডেশনে দুই তলা নৌ পুলিশ কেন্দ্রের বর্গফুট প্রতি নির্মাণ খরচ ৫ হাজার ২২১ টাকা, চারতলা ফাউন্ডেশন দ্বিতীয় তলা, রেল পুলিশ থানার বর্গফুট প্রতি নির্মাণ খরচ ৫ হাজার ২৪ টাকা এবং চারতলা ফাউন্ডেশনে চারতলা হাইওয়ে পুলিশ থানার বর্গফুট প্রতি নির্মাণ খরচ ৪ হাজার ২৩৬ টাকা। সুপার স্ট্রাকচার করার কারণে নির্মাণ ব্যয় অনেক বেশি হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়।

মতামত দিতে গিয়ে পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, পুলিশ, নৌপুলিশ, রেলপুলিশ ফাড়িঁ,তদন্ত কেন্দ্র, আউটপেস্টের জন্য ৮ হাজার ৪০০ বর্গফুটের দুই তলা ভবন, রেল পুলিশ থানার জন্য ১১ হাজার বর্গফুটের দ্বিতীয় তলা ভবন, হাইওয়ে থানা বা আউটপোস্টেও জন্য ২২ হাজার ২০০ বর্গফুটের চারতলা ভবনের এবং টুরিস্ট পুলিশ থানার জন্য ১২ হাজার ৬০০ বর্গফুটের ভবনের প্রস্তাব করা হয়েছে ।

ডিপিপিতে কোন অফিসের কোন পর্যায়ের কতজন অনুমোদিত জনবল রয়েছে তার বিবরণ নেই। এছাড়া ডিপিপিতে মন্ত্রণালয়ের এমটিবিএফ (মধ্য মেয়াদী বাজেট কাঠামো) সিলিং উল্লেখ করা হয়নি। আগামী তিন অর্থবছরে ৭৩০ কোটি টাকা মন্ত্রণালয়ের উন্নয়নে বাজেট বরাদ্দের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা আলোচনা হয়েছে পিইসি সভায়।

সারাবাংলা/জেজে/একে

উন্নয়ন প্রকল্প পুলিশ পুলিশ ফাঁড়ি বাংলাদেশ পুলিশ

বিজ্ঞাপন

খুলনায় যুবকের পেটে মিলল ইয়াবা
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১২:০২

আরো

সম্পর্কিত খবর