ইন্টারনেট বন্ধের ধাক্কায় জুলাইয়ে রেমিট্যান্স ১৯০ কোটি ডলার
১ আগস্ট ২০২৪ ২১:৩৫ | আপডেট: ১ আগস্ট ২০২৪ ২১:৩৬
ঢাকা: ২০২৪-২০২৫ নতুন অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছে। কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশে ১০ দিন ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠাতে পারেননি। ফলে জুলাইয়ে প্রবাসী আয়ে ভাটা পড়েছে। সদ্য বিদায়ী মাসটিতে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৯০ কোটি ডলার। যা জুন মাসের তুলনায় ৬৪ কোটি ডলার বা ২৫ দশমিক ১৯ শতাংশ কম। জুনে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৫৪ কোটি ডলার। আর ২০২৩ সালের একই সময়ে দেশে রেমিট্যান্স আসে ১৯৭ কোটি ডলার।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোটা সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সৃষ্ট উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইন্টারনেট বন্ধ থাকাসহ নানা কারণে জুলাই মাসে রেমিট্যান্স কমেছে। সদ্য বিদায়ী জুলাইয়ে প্রতিদিন গড়ে প্রবাসী আয় এসেছে ৬ কোটি ১২ লাখ ডলার। এটি আগের মাস জুনের চেয়ে কম। ওই মাসে প্রতিদিন প্রবাসী আসে ৮ কোটি ৪৬ লাখ ডলার।
অর্থনীতিবিদদের মতে, ইন্টারন্টে সেবা শাটডাউন হয়ে যাওয়ার বিষয়টি এরই মধ্যে রেমিট্যান্সের ওপর প্রভাব ফেলেছে। সামনের দিনগুলোতে যদি কোনো কারণে প্রবাসী আয় কমতে থাকে তাহলে অর্থনীতির জন্য খারাপ হবে। চলমান অস্থিরতার মধ্যে প্রবাসীরা দেশে অর্থ পাঠালেও ডলার আসবে না। কারণ, এক্ষেত্রে হুন্ডি বেছে নেবে তারা। ফলে দেশের অর্থনীতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।
জানা গেছে, চলতি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২১০ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার, মার্চে ১৯৯ কোটি ৬৮ লাখ ডলার, এপ্রিলে ২০৪ কোটি ৪২ লাখ ডলার, মে মাসে ২২৫ কোটি ডলার, জুনে ২৫৪ কোটি ডলার।
বিভিন্ন অর্থবছরভিত্তিক রেমিট্যান্স
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের রেমিট্যান্স এসেছে দুই হাজার ৩৯১ কোটি বা ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলার, ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসীরা ২ হাজার ১০৩ কোটি ডলার, ২০২০-২১ অর্থবছরে দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান।
এ ছাড়াও ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের এক হাজার ৬৩১ কোটি ডলার, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার এবং ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।
পঞ্জিকাবর্ষ হিসাবে রেমিট্যান্স
সদ্য সমাপ্ত ২০২৩ সালে প্রবাসী ২ হাজার ১৯২ কোটি (২১ দশমিক ৯২ বিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। ২০২২ সালে প্রবাসীরা দুই হাজার ১২৭ কোটি ডলার বা ২১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর আগে, ২০২১ সালে প্রবাসীরা রেকর্ড দুই হাজার ২০৭ কোটি ৮৫ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। অন্যদিকে, ২০২০ সালে দুই হাজার ১৭৪ কোটি ১৮ লাখ ডলার, ২০১৯ সালে এক হাজার ৮৩৩ কোটি ডলার, ২০১৮ সালে এক হাজার ৫৫৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলার, ২০১৭ সালে এক হাজার ৩৫৩ কোটি ডলার, ২০১৬ সালে এক হাজার ৩৬১ কোটি ডলার এবং ২০১৫ সালে এক হাজার ৫৩১ কোটি মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসে দেশে।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম