১৫ দিন পর মৃত্যুর কাছে হার মানলেন সেলিম
২ আগস্ট ২০২৪ ১৬:০২
বরিশাল: পনেরো দিন গুলির ক্ষত নিয়ে হাসপাতালের বেডে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিলেন সেলিম তালুকদার রমজান (২৮)। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় ধানমণ্ডির পপুলার হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মরদেহ নেওয়া হয় বাড্ডা লিংক রোডের বাসায়। সেখানে প্রথম জানাজা হয়।
পরে শুক্রবার (২ আগস্ট) সকাল ১০টায় গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটির মল্লিকপুর এলাকায় দ্বিতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়।
এর আগে, কোটা বিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষে ১৮ জুলাই মাথায়, বুকে ও পিঠে তার গুলি লাগে। ফুসফুসেও লাগে গুলি। ঢাকার চার হাসপাতাল ঘুরে শেষে ধানমন্ডির পপুলারে ভর্তি হন। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন গুলিবিদ্ধ সেলিম।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে তার মরদেহ বাড়ি পৌঁছলে এলাকায় শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এ সময় তার স্ত্রী, আত্মীয় ও সহপাঠীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিন বোন আর এক ভাইয়ের মধ্যে সেলিম তালুকদার মেজ। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি।
নিহত সেলিমের স্বজনরা জানান, ঘটনার দিন (১৮ জুলাই) তিনি বাসা থেকে অফিসের উদ্দেশে রওনা দিয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে চলমান কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন সেলিম। প্রথমে তাকে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে নেন স্থানীয়রা। সেখানে গুলিবিদ্ধ সেলিমের মোবাইল থেকে তার মায়ের মোবাইল নম্বরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফোন দেন। এরপর ওই ফোনটি আর পাওয়া যায়নি। ফোন পেয়েই স্বজনরা দ্রুত ওই হাসপাতালে ছুটে যান। রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে স্বজনরা ঢাকার গ্রীন রোডের ৩টি বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরেন। কোথাও আইসিইউতে সিট খালি পাননি। একই সঙ্গে প্রশাসনিক হয়রানির ভয়ে গুলিবিদ্ধ রোগীকে ভর্তি নিতে অস্বীকৃতি জানান বলে অভিযোগ করেন স্বজনরা। রোগীর স্বজনরা পরের দিন ধানমণ্ডির পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করান সেলিমকে।
তারা আরও জানান, ৮ মাস আগে বিয়ে করেন সেলিম। বিজিএমই ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে দুই বছর আগে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করে নারায়ণগঞ্জ বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে সহকারী মার্চচেন্ডাইজার পদে চাকরি শুরু করেন তিনি।
সারাবাংলা/একে