ভোলায় মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যা
৬ আগস্ট ২০২৪ ২০:৩৫
ভোলা: জেলার তজুমদ্দিন উপজেলায় পূর্ব শত্রুতার জেরে মো. মাহমুদউল্লাহ মিয়া (৭০) নামের এক মুক্তিযোদ্ধাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহত মাহমুদউল্লাহ উপজেলার চাচড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও একই ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য।
সোমবার (৫ আগস্ট) দিবাগত রাতে তার নিজ বাড়িতে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় তার মেয়ে মিষ্টি তাকে বাঁচাতে গেলে তাকেও মাথায় আাঘাত করে গুরুতর আহত করা হয়। এ ঘটনায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আব্দুল হক নামের একজনকে আটক করা হয়।
নিহতের ছোট ভাই মোসলেহ উদ্দিন ঝন্টু জানান, তার ভাই চাচড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন। তিনি বিএনপি করতেন। বিএনপি করার অপরাধে তার বিরুদ্ধে একাধিক মিথ্যা মামলাও হয়েছে। মামলা ও হয়রানি থেকে বাঁচতে তিন বছর আগে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এর পরও চাচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তাহেরের সাথে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করায় তার বিরুদ্ধে আরও ২৬টি মামলা দেওয়া হয়। তার বাড়ির পাশের আব্দুল হকের ছেলে ফজলু, ফরিদ, জহির ও জাকির মিলে চার ভাই মেঘনা নদীতে ডাকাতি করে আসছে। বিএনপির আমলে এরা চার ভাই ও বাবা বিএনপি করতেন। সে সময় তাদের বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতি মামলাও হয়েছে। এর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বর্তমান চেয়ারম্যান আবু তাহেরের ছত্রছায়ায় এসে এরা আবারও ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপরাধে লিপ্ত হয়। মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদউল্লাহ মিয়া তাদের এসব অপকর্ম করতে বাধা দিতেন।
তিনি জানান, এই বিরোধের জেরেই বিভিন্ন সময়ে তার বিরুদ্ধে চেয়ারম্যানের মাধ্যমে স্থানীয় এমপি শাওনকে দিয়ে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়েছে। রোববার শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ত্যাগের পর স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা তজুমদ্দিন বাজারে আনন্দ মিছিলে যায়। এ সুযোগে মাহমুদউল্লাহ মিয়াকে ঘরে একা পেয়ে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফজলুরা চার ভাই ও বাবা মিলে ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা মাহমুদউল্লাহকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে খবর পেয়ে তারা এসে তাকে উদ্ধার করে তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় চাচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তাহেরের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে স্থানীয়রা জানায়, সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চেয়ারম্যান এলাকায় ছিল। এরপর থেকে তাকে আর দেখা যায়নি।
তজুমদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ারুল হক জানান, ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ হাসাপাতালে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় একজন আটক রয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
সারাবাংলা/পিটিএম