বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে শিক্ষার্থীদের পাশে আয়রন-স্টিল ব্যবসায়ীরা
১২ আগস্ট ২০২৪ ২০:২৫
ঢাকা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত ও নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ আয়রন অ্যান্ড স্টিল ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। একইসঙ্গে ব্যবসায়ীদের অ্যাপেক্স বডি খ্যাত এফবিসিসিআই ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত ৪ শতাধিক বাণিজ্য সংগঠনকেও শিক্ষার্থীদের সব ধরনের সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সংগঠনটি মনে করে, একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়ে তুলতে যেসব শিক্ষার্থীরা জীবন উৎসর্গ করে শহীদ হয়েছেন তাদের রক্ত কখনও বৃথা যেতে পারে না। তাদের সাহসিকতা ও আত্মত্যাগ আমাদের সবার জন্য এক বিরাট অনুপ্রেরণা। প্রিয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরাও বলতে চাই এমন এক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যেখানে কোনো বৈষম্য থাকবে না।
সম্প্রতি রাজধানী ঢাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ও আহত শিক্ষার্থীদের স্মরণে শোকসভার আয়োজন করে বাংলাদেশ আয়রন অ্যান্ড স্টিল ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। ওই সময় বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সভাপতি আবুজার গিফারী জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব নাসির উল্লাহ ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক আমির হোসেন নূরানী প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে আবুজার গিফারী জুয়েল বলেন, ‘আমরা এমন শোকসভা পালন করছি যা আমাদের হৃদয়কে স্পর্শ করে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের স্মরণে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। সমাজে সাম্য ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা সহজ কাজ নয়। কিন্তু তারা লড়াই থেকে পিছপা হয়নি। তাদের এই আত্মত্যাগ আমাদের সকলের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। আমরা শপথ করছি, তাদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। তাদের স্বপ্নের সমাজ গড়তে আমরা একযোগে কাজ করব।’
তিনি বলেন, ‘এফবিসিসিআইয়ের ৪০০ এর অধিক সদস্য সংগঠনগুলো যদি প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে আসেন তাহলে আহত ও নিহত ছাত্র পরিবারগুলোকে সহযোগিতা করা যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বড় সমস্যার নাম। এরইমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার সব ধরনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বর্তমান সরকারের এই উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই।’
সভাপতি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের এই উদ্যোগের ফলে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিমের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। এর আগে তিন দফায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়ায় তিনি আর স্বপদে বহাল থাকতে পারছেন না। তবে কাস্টমস হাউজগুলোতে নিয়োগ পাওয়া সকল অসৎ কমিশনার ও সেখানকার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কারণে ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ। এ কারণে চট্টগ্রাম, পানগাঁও ও ঢাকা কমলাপুর আইসিডি কাস্টমসের অসৎ কমিশনারসহ সকল দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের দ্রুত অপসারণ করতে হবে।’
আমির হোসেন নূরানী বলেন, ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি ইতিহাস। ছাত্রদের এই অর্জন থেকে আমাদের সবার শিক্ষা নেওয়া উচিত। তারা কী চায় সেই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হলে চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতি, অর্থনীতিসহ সকল স্তর থেকে বৈষম্য দূর করতে হবে। ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের কথা কেউ বলছে না। অথচ তাদের সুযোগ-সুবিধা দিলে বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হতো।’
আলহাজ্ব নাসির উল্লাহ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন একটি বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে আশা করছি। পুলিশের অনুপস্থিতিতে ছাত্র-ছাত্রীরা ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করছে, বাজার তদারকি করছে। এরইমধ্যে তার সুফল পেয়েছে দেশবাসী। শিক্ষার্থীরা এগিয়ে যাক, আমরা তাদের সঙ্গে আছি।’
উল্লেখ্য, রাজধানীর পুরান ঢাকাসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত শিক্ষার্থীদের মাঝে খাবার ও পানি বিতরণ করছে বাংলাদেশ আয়রন অ্যান্ড স্টিল ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। যতদিন শিক্ষার্থীরা রাস্তায় থাকবে ঠিক ততদিন খাবার বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
সারাবাংলা/ইএইচটি/একে
আয়রন অ্যান্ড স্টিল ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন কোটা আন্দোলন কোটা সংস্কার নিহত শিক্ষার্থী