গভর্নরের দায়িত্ব পাচ্ছেন আহসান এইচ মনসুর
১৩ আগস্ট ২০২৪ ১৫:৪৭
ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর। নিয়োগ পেলে সদ্য সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারের স্থলাভিষিক্ত হবেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকসহ একাধিক সূত্রে আহসান এইচ মনসুরের গভর্নর নিয়োগের তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। সূত্রগুলো বলছে, বয়সের কারণে তাকে নিয়োগ দিতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংক আইন সংশোধন করতে হবে। সেই প্রক্রিয়া চলছে।
বর্তমান আইনে সর্বোচ্চ ৬৭ বছর বয়সী কোনো ব্যক্তিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদে নিয়োগ দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু আহসান এইচ মনসুরের বয়স ৭২ বছরের বেশি। এ অবস্থায় গভর্নর নিয়োগের বয়স বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় সংশোধনী প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হচ্ছে। তিনি অনুমোদন দিলে তা রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য পাঠানো হবে। রাষ্ট্রপতি অনুমোদন দেওয়ার পর অধ্যাদেশ জারি হলে তখন আহসান এইচ মনসুরের গভর্নর পদে নিয়োগ পেতে কোনো বাধা থাকবে না।
এর আগে গভর্নর নিয়োগের সর্বোচ্চ বয়সীমা ছিল ৬৫ বছর। পরে সাবেক গভর্নর ফজলে কবীরকে দ্বিতীয়বার গভর্নর হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সময় সেই সীমা বাড়িয়ে ৬৭ বছর করা হয়।
আহসান এইচ মনসুরের পরিচিতি
দেশের অর্থনৈতিক অঙ্গনে একটি সুপরিচিত নাম ড. আহসান এইচ মনসুর। ১৯৭৪ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৭৬ সালে একই বিভাগে শিক্ষকতার মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু। পরে তিনি ১৯৭৭ সালে কানাডার ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও ১৯৮২ সালে কানাডার অন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি সম্পন্ন করেন।
এর আগেই ১৯৮১ সালে ইকোনমিস্ট প্রোগ্রামের অধীনে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) যোগ দেন ড. মনসুর। আইএমএফে দীর্ঘ কর্মজীবনে কাজ করেছেন রাজস্ব, নীতি পর্যালোচনা ও উন্নয়ন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সব বিভাগে। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানে আইএমএফের সিনিয়র আবাসিক প্রতিনিধি ছিলেন তিনি। সম্প্রতি তিনি উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদ (জিসিসি) বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং সৌদি আরব, কুয়েত ও ওমানে আইএমএফ মিশনের প্রধান ছিলেন।
আহসান এইচ মনসুর ১৯৮৯-৯১ মেয়াদে বাংলাদেশ সরকারের অর্থমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে দেশে মূল্য সংযোজন করের (মূসক) সফলভাবে প্রবর্তনের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি।
আইএমএফ থেকে অবসর নেওয়ার পর গড়ে তোলেন নীতি বিশ্লেষণী প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই)। এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও নির্বাহী পরিচালক তিনি। একাডেমিক প্রবন্ধ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের অসংখ্য প্রকাশনা রয়েছে তার। পত্রপত্রিকায় নিয়মিত কলামও লিখেছেন।
সারাবাংলা/জিএস/টিআর