দাম কমেনি নিত্যপণ্যের, পেঁয়াজ-আলু-কাঁচামরিচে অস্বস্তি
১৬ আগস্ট ২০২৪ ২২:২৭
ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলন-পরবর্তী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ১০ দিন পরও দেশের নিত্যপণ্যের বাজার চড়াই রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলের নেতা ও শিক্ষার্থীরা মনিটরিং করায় কিছুটা নিম্নগামী হলেও বাজারে সার্বিকভাবে প্রভাব পড়েনি বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বিজয় সরণি, শান্তিনগর ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে দেখা গেল, বাজারে পেঁয়াজ ও কাঁচা মরিচের ঝাল কমেনি একেবারেই। মুরগিও যেন অধরা হয়ে উঠছে। নিম্নবিত্তের আলুও হাফ সেঞ্চুরি পেরিয়ে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজের কেজি এখনো ১১৫ থেকে ১২০ টাকা। আর কাঁচা মরিচ হাঁকিয়েছে ট্রিপল সেঞ্চুরি, তথা ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে ঝাল সব রান্নায় ব্যবহার্য এই সবজি।
এদিকে সর্বনিম্ন ৩০ টাকা কেজিতে পেঁপে কেনা গেলেও কোনো কোনো সবজি এখনো ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মাছ-মাংস ও পোলট্রি মুরগিও বাজারে বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। ভরা মৌসুমেও ইলিশ রয়েছে ক্রেতাদের নাগালের বাইরে।
সব বাজারেই গরু ৭৫০ টাকা কেজি ও ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। দাম আরও কম হওয়ার কথা ছিল কি না— জানতে চাইলে এক মুরগি বিক্রেতা বলেন, ১৪০ টাকা কেজি দরেও তারা মুরগি কিনতে পারেননি।
কারওয়ান বাজারে কথা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলামের সঙ্গে। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ফেসবুকে ঢুকলে দেখা যায় সব পণ্যের দাম কমে গেছে। বাজারে কিন্তু সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। আলু এখনো ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কিছুদিন আগেও ৫০ টাকা কেজিতে আলু কেনা গেছে। মুরগি বিক্রি করছে ১৭০ টাকা কেজিতে, দাম তো অনেক বেশিই। বাজারে সব কিছুর দামই বেশি।
এই বাজারের মাছুম নামের এক বিক্রেতা বলেন, পাইকারি বাজারে সব পণ্যের দামই বেশি। পাইকারিতেই আজ কাঁচামরিচ কিনতে হয়েছে ৩০০ টাকা কেজিতে। এখন আমরা আর কত কম বিক্রি করব?
রাজধানীর সেগুনবাগিচা বাজারে করলা ৬০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, দেশি গাজর ১০০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা ও কাঁচামরিচ ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেল। এই বাজারের বিক্রেতা সবুজ বলেন, পাইকারি বাজারে সব পণ্যের দাম বেশি। নতুন করে কাঁচা মরিচের দাম বেড়েছে।
এদিকে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক সপ্তাহ ধরে চালের চড়া দাম এখনো একই অবস্থায় রয়েছে। বাজারে মিনিকেট ৭০ টাকা থেকে ৭২ টাকা, নাজিরশাইল ৭০ টাকা থেকে ৭৫ টাকা ও পাইজাম ৫৮ টাকা থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এসব চালের দাম বরং আগের চেয়ে কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। মোটা চাল স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে আগের মতোই ৫৫ থেকে ৫৬ টাকায়।
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে এখন ইলিশের মৌসুম চললেও শুক্রবার সকালে কারওয়ান বাজারের কিচেন মার্কেটে তার কোনো প্রভাবই দেখা যায়নি। ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ এক হাজার টাকা ও ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে এই বাজারে। এক কেজি ওজনের ইলিশের কেজি ১৫৫০ টাকা। ১ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৬০০ টাকা ও ১ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছিল এই বাজারে।
আল্লার দান ফিশারিজের দোকানি শুকুর আলী সারাবাংলাকে বলেন, গত বছরও ইলিশের দাম এই সময়ে প্রায় একই ছিল। তব গত কয়েক দিনের চেয়ে কেজিতে দাম কমেছে ১০০ টাকা।
একই রকম চিত্র দেখা গেছে রাজধানীর আরও কয়েকটি বাজারে। আর ছোটখাটো বাজারে এখনো ইলিশের দেখাই মিলছে না। ইলিশ কেনার ইচ্ছা নিয়ে বাজারে গেলেও তাদের না কিনেই ফিরে যেতে দেখা গেছে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এনইউ
কাঁচাবাজার নিত্যপণ্য নিত্যপণ্যের বাজার বাজার বাজারদর মাছের বাজার সাপ্তাহিক বাজার