Tuesday 03 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যবিপ্রবিতে উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ, প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১৯ আগস্ট ২০২৪ ২১:১০ | আপডেট: ২০ আগস্ট ২০২৪ ০১:৪৬

পদত্যাগ দাবি করে উপাচার্যের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সারাবাংলা

যশোর: যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনের পদত্যাগের দাবিতে তার কুশপুত্তলিকাদাহ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

ক্যাম্পাসে গত কয়েকদিন ধরে চলমান কর্মসূচির অংশ হিসাবে সোমবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে উপাচার্যের কুশপুত্তলিকাদাহ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রারেরও পদত্যাগের দাবি জানান, পদত্যাগ না করলে তাদের কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর হুশিয়ারি দেন আন্দোলনকারীরা।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বিকেলে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি। এছাড়া পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. ইকবাল কবির জাহিদ এবং উপাচার্য একান্ত সচিব মো. আব্দুর রশিদও।

পদত্যাগ পত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আহসান হাবিব বলেন, ‘আমি বিশ্বিবদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন ও উপাচার্যের একান্ত সচিবের পদত্যাগ পত্রের কপি পেয়েছি। প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ পত্র এখন ও আমার কাছে আসেনি।’ প্রক্টোরিয়াল বডির পদত্যাগের বিষয় জানতে চাইলে সহকারী প্রক্টর মো: আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে আমরা প্রক্টোরিয়াল বডি পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছি।’

এর আগে বেলা ১২ টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ে তার অনুসারীদের পদত্যাগের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে মিছিল শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এসব মিছিলে ভিসিসহ তার অনুসারীদের নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন।

বিজ্ঞাপন

মিছিলটি উপাচার্যের বাসভবন ও ডরমিটরি ঘুরে আবার প্রধান ফটকের সামনে এসে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।

সমাবেশে পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ উসামাহ বলেন, আমরা আমাদের দেশ থেকে স্বৈরাচার দূর করতে পারলেও আমরা আমাদের ক্যাম্পাস থেকে এখনো পর্যন্ত স্বৈরাচার দূর করতে পারিনি। আমাদের এই ভিসির কাছে কোনো দাবি নেই কারণ এই স্বৈরাচার দালালের কাছে কোনো প্রকার দাবি আমরা রাখতে চাই না। তাই আমাদের এই আন্দোলনের একটাই মাত্র দাবি বিশ্ববিদ্যালয়ে সকল প্রকার স্বৈরাচার ভিসি, প্রক্টর, হল প্রভোস্ট, শিক্ষক সমিতি সভাপতিসহ সকল দালালদের পদত্যাগ করতে হবে।

সমাবেশে বক্তরা বলেন, টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ভিসি আনোয়ার স্বৈরাচারী কায়দায় এই বিশ্ববিদ্যালয় চালিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন কোন কাজ নেই তিনি অনিয়ম দুনীর্তি করেছেন। এই দুনীর্তি করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি চক্র তৈরি করেছে। বিভিন্ন সময়ে যারা প্রতিবাদ করেছে, সেই শিক্ষক, কর্মচারী শিক্ষার্থীদের তিনি গোয়েন্দা সংস্থার লোক, পুলিশ দিয়ে আমাদের হয়রানি ও নাজেহাল করেছেন তিনি। তাই গত দুদিন আগে তাকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম আমরা।

তবে সেই আল্টিমেটামের পরেও তিনি পদত্যাগ না করায় তার প্রশাসনিক ভবনে তালা এবং শাটডাউন ঘোষণা করেছি। তিনি দ্রুত পদত্যাগ না করলে আমরা আরোও বৃহৎ কর্মসূচি হাতে নিবো। সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অধ্যাপক ড.আনোয়ার হোসেনর কুশপুত্তলিকাদাহ করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ নিয়ে টানা ৫ম দিনের মতো আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা।

এই বিষয়ে জানতে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি। তবে এই কর্মসূচির এক দিন আগে এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে পদত্যাগের বিষয়ে তার কোনো পরিকল্পনা নেই। কারণ তিনি ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার সমন্বয়ক। ভর্তি প্রক্রিয়ার ৯৭ শতাংশ শেষ হয়েছে। বাকি ৩ শতাংশ শেষ করতে পারলে দায়মুক্ত হবেন। এরপর কী করবেন ভেবে দেখবেন। তবে সরকার চাইলে তিনি ভেবে দেখবেন।’

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার থেকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার, হল প্রভোস্ট, প্রক্টর, রিজেন্ট বোর্ড সদস্য ড. ইকবাল কবির জাহিদসহ উপাচার্যের অনুসারীদের পদত্যাগের দাবিতে কর্মসূচি শুরু করে। ঐ দিন একই দাবিতে যবিপ্রবিতে বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল, শেখ হাসিনা ম্যুরাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ভবনের বঙ্গবন্ধুর নাম ও বঙ্গবন্ধু একাডেমিকের গ্যালারির সামনে ছবি ভাস্কর্য ভাঙচুর করে বিক্ষুদ্ধ ছাত্ররা।

সারাবাংলা/এনইউ

টপ নিউজ যবিপ্রবি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর