Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বিতকির্ত’ কর্মকর্তা বারবার ওসি পদে, সিএমপিতে ক্ষোভ


৪ জুন ২০১৮ ২০:২৮

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ইয়াবা দিয়ে সাধারণ মানুষকে ফাঁসানোসহ বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে অভিযুক্ত এক পুলিশ কর্মকর্তাকে বারবার বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব দিচ্ছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। এতে সিএমপির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যেই ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

বিতর্কিত ওই পুলিশ কর্মকর্তা হলেন নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানা থেকে সদ্য বিদায় নেওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম। ১৭ দিনের মাথায় সোমবার (০৪ জুন) তাকে আবারও নগরীর চকবাজার থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন সিএমপি কমিশনার মো. ইকবাল বাহার।

সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) মাসুদ উল হাসান সারাবাংলাকে বলেন, বায়েজিদ বোস্তামি থানা থেকে আবুল কালামকে পুলিশ লাইনে বদলি করা হয়েছিল। সেখান থেকে তাকে চকবাজার থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর চকবাজার থানার ওসি মীর মো. নুরুল হুদাকে ইপিজেড থানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ইপিজেড থানার ওসি আহসান উদ্দিন চট্টগ্রাম রেঞ্জে বদলি হয়েছেন।

সূত্রমতে, গত বছরের সেপ্টেম্বরে আবুল কালাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক পদ থেকে বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পান। গত এপ্রিলে তাকে শিল্প পুলিশে বদলির আদেশ আসে। এই আদেশ আসার পর গত ১৭ মে বায়েজিদ বোস্তামি থানা থেকে আবুল কালামকে নগর পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছিল। তবে এর মধ্যে শিল্প পুলিশে বদলির আদেশ স্থগিত করাতে পারায় আবুল কালামকে আবারও চকবাজার থানায় পদায়ন করা হয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে।

চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক পদে দায়িত্ব পালনের সময় গত বছরের জুলাই মাসে আবুল কালামের বিরুদ্ধে ঢাকার দুই ব্যবসায়ী রানা আহমেদকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠে। ইয়াবা মামলা দেওয়ার পর রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন না করতে রানা আহমেদের পরিবারের কাছ থেকে এক লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ারও অভিযোগ উঠে এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। গত বছরের ৯ জুলাই রানা আহমেদের জামিন শুনানিতে এই অভিযোগ শুনে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু সালেম মো. নোমান নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনারকে এই বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দেন। তবে আদালতে এখনও এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি বলে সূত্র জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এই অভিযোগের সুরাহা না হওয়ার পরও গত সেপ্টেম্বরে আবুল কালামাকে বায়েজিদ বোস্তামি থানায় দায়িত্ব দেওয়া হয়। নভেম্বরে বায়েজিদ বোস্তামি থানা থেকে ইয়াবাসহ আটক আসামি ছেড়ে দেওয়া এবং ইয়াবা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। তবে নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) মো. আব্দুল ওয়ারিশ খান এই অভিযোগের সত্যতা পাননি বলে জানিয়েছিলেন।

পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগ বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগেও সিএমপিতে আলোচিত এই পুলিশ কর্মকর্তা। এরপরও তাকে বারবার বিভিন্ন থানায় দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সিএমপির কর্মকর্তাদের মধ্যে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, পেশাগতভাবে অপরাধ দমনে দৃশ্যমান কোনো সাফল্য নেই আবুল কালামের। বরং বিভিন্ন অভিযোগ ওঠার পরও তাকে ওসি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে সিএমপি আগেও সমালোচিত হয়েছে গণমাধ্যমে। এরপরও তাকে চকবাজার থানার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সিএমপির শীর্ষ একজন কর্মকর্তার সঙ্গে ভালো সম্পর্কের সুবাদে তিনি বারবার পোস্টিং পাচ্ছেন। অথচ এতে সিএমপি সমালোচিত হচ্ছে।

এই বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য সিএমপি কমিশনার মো. ইকবাল বাহারকে কয়েকবার ফোন করেও সাড়া পাওয়া যায়নি। মোবাইল বন্ধ থাকায় আবুল কালামের সঙ্গেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মাসুদ উল হাসান এই বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি।

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

গুলশানে দুইজনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:৫৫

ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩৩

সম্পর্কিত খবর