Monday 02 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ঢাকা মেডিকেলে ১০০ দিনের কর্মসূচি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৯ আগস্ট ২০২৪ ১৮:৫৯ | আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২৪ ০১:২২

ঢাকা: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার মানউন্নয়নে ১০০ দিনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সভাকক্ষে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ১০০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। এ সময় তিনি হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার মানোন্নয়নে ১০০ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

বিজ্ঞাপন

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড স্থাপন ও বিনামূল্যে বিশেষায়িত চিকিৎসা নিশ্চিত করা; কেবিন সংস্কার করা ও আইসিইউর সংখ্যা বাড়ানো; হাসপাতালের কর্মীদের উপস্থিতির হার বাড়ানো ও যথাসময়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করা; হাসপাতালে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার; ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি ও বহিরাগত দালালদের হাসপাতালে ঢুকতে না দেওয়া; বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতাল চত্বর থেকে সরিয়ে সেখানে রোগী ও রোগীর সঙ্গে আসা লোকজনের বিশ্রামের ব্যবস্থা করা; হাসপাতালের আশপাশের অবৈধ দোকানপাট অপসারণ করা; হাসপাতালে হয় এমন সব প্যাথলজিকাল টেস্ট, এক্সরে, সিটি স্ক্যান ইত্যাদি বাধ্যতামূলকভাবে হাসপাতালে করার ব্যবস্থা নেওয়া; টিকিটিং ব্যবস্থায় ডিজিটাল কার্যক্রম জোরদার করা; দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যক্রম জোরদার করা; রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের সম্পর্ক উন্নয়নে আচরণগত পরিবর্তন নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া; স্বাস্থ্যসেবাবিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম জোরদারের উদ্যোগ নেওয়া; অভ্যর্থনা বা তথ্যকেন্দ্র স্থাপন ও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম জোরদার করা।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বলেন, দুই হাজার ৬০০ বেডের এ হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি রেফার্ড হওয়া রোগী আসে। গড়ে সেখানে চার হাজারের বেশি রোগী ভর্তি থাকে। হাসপাতালের মেঝে, বারান্দাগুলো সবসময় ভর্তি থাকে রোগী দিয়ে। বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগ থেকে প্রতিদিন চিকিৎসা নেন আরও হাজার পাঁচেক মানুষ। এরমধ্যে গত ২২ জুলাই থেকে আগস্টের আজকের দিন পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ২৬১৩ রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এদের মধ্যে অনূর্ধ্ব ১২/১৩ থেকে ১৯ বছরের শিশু-কিশোর ছিল ১৬৬ জন। ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে ৭৮৬ জনকে। তিন সপ্তাহ ধরে বিনামূল্যে এদের চিবিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে ভর্তি আছে ৮৯ জন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান আরও বলেন, ‘ক্যাজুয়ালটি, নিউরো সার্জারি, অর্থপেডিক্সসহ সব বিভাগ থেকে আহতদের আলাদা চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সিএমএইচ হাসপাতালে ২৬ জন ও বিজিবি হাসপাতালে ১৯ জনকে স্থানান্তর করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ১৭২ জন মারা গেছেন।’

পরিচালক বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অনেক পুরাতন হাসপাতাল। সবারই আস্থার জায়গা। রোগীর তুলনায় জায়গা কম। এর মধ্যেই ১০০ দিনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে, হাসপাতালের কর্মীদের উপস্থিতির হার বাড়ানো এবং যথাসময়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের পাশাপাশি দালালদের ঢোকা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রতিনিধিরা যাতে ঢুকতে না পারে, তা নিশ্চিত করা। এরইমধ্যে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতাল চত্বর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে রোগী ও রোগীর সঙ্গে আসা লোকজনের বিশ্রামের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকরাও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনের সময় আহত রোগীদের অবস্থার চিত্র তুলে ধরেন। চক্ষু বিভাগে অনেকেই চিকিৎসা নিয়েছেন, এই আহতদের মধ্যে এক চোখে ছররাগুলির পাশাপাশি বেশ কয়েকজন রোগীর দুই চোখেও গুলির আঘাত রয়েছে বলে জানান তারা।

রোগীর পরিচয় শুধু রোগী। যেমন আগে দেখা গেছে অমুক নেতা রোগী পাঠিয়েছেন, তার রোগীকে ভালোভাবে দেখতে হবে। এগুলো যেন আর না হয়, চিকিৎসকদের কাছে সব রোগী সমান বলে জানান ঢামেক হাসপাতালের চিকিৎসকরা।

সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আশরাফুল আলম। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরো সার্জারির প্রধান অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলাম, নাক, কান ও গলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নুরুল ফাত্তাহ রুমী, সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. ইমতিয়াজ ফারুক, হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. নুরুল ইসলাম প্রমুখ।

সারাবাংলা/একে

১০০ দিনের কর্মসূচি টপ নিউজ ঢামেক হাসপাতাল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর