Sunday 24 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাস্তবায়ন হচ্ছে না নতুন শিক্ষাক্রম, আসছে নতুন নিয়ম

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:৪৩

ঢাকা: বর্তমান সরকার মনে করে পরিবর্তিত শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। তাই পাঠ্যসূচির পাশাপাশি পরীক্ষা পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনার চিন্তা করা হচ্ছে। সে লক্ষ্যে রোববার (১ সেপ্টেম্বর) একটি পরিপত্র জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব মোসাম্মৎ রহিমা আক্তারের সই করা পরিপত্রে প্রস্তুতির ঘাটতি, পাঠ্য বিষয়বস্তু ও মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে অস্পষ্টতা ও নেতিবাচক ধারণা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার প্রকট অভাব রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

সেখানে আরও বলা হয়, জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২ এর বিষয়ে মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতা, অংশীজনদের অভিমত, গবেষণা ও জরিপ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী এ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির ঘাটতি, পাঠ্য বিষয়বস্তু ও মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে অস্পষ্টতা ও নেতিবাচক ধারণা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার প্রকট অভাব ইত্যাদি নানাবিধ বাস্তব সমস্যা বিদ্যমান থাকায় ওই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয় মর্মে প্রতীয়মান।

এর পর মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে পরিপত্রে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে প্রাক-প্রাথমিক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে ধারাবাহিকতা রেখে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যবইগুলোর পাণ্ডুলিপি প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জন করে নতুন করে মুদ্রণ করা হবে। এক্ষেত্রে পাঠদান পদ্ধতি ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হবে বলে উল্লেখ করা হয়।

পরিপত্রে জানানো হয়, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে চলমান পাঠ্যবইগুলো ২০২৪ সালের পুরোটা সময় বহাল থাকবে। ২০২৫ সালে যথাসম্ভব সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা হবে।

বিজ্ঞাপন

পরিপত্রে আরও বলা হয়, ২০২৫ সালে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা নেওয়ার লক্ষ্যে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা অব্যাহত রেখে পূর্বের জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ এর আলোকে প্রণীত সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তকগুলো (অর্থাৎ ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ব্যবহৃত পুস্তক) শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হবে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুসারে প্রণীত বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষাভিত্তিক এ পাঠ্যপুস্তকগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হবে। যেন শিক্ষার্থীরা এক শিক্ষাবর্ষের মধ্যেই পাঠ্যসূচি শেষ করতে পারে। পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ অনুসারে পরিচালিত হবে।

আরও বলা হয়, যেসব শিক্ষার্থী ২০২৫ সালে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে, তাদের জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২ এর আলোকে প্রণীত শাখা ও গুচ্ছভিত্তিক সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যপুস্তকগুলো (২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ব্যবহৃত) দেওয়া হবে। এসব শিক্ষার্থী নবম ও দশম শ্রেণি মিলিয়ে দুই শিক্ষাবর্ষে সম্পূর্ণ পাঠ্যসূচি শেষে ২০২৭ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেবে।

নতুন শিক্ষাক্রমে পরীক্ষা নেই। বাৎসরিক সামষ্টিক মূল্যায়ন করা হয়। ফলে নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষা নেওয়া হবে না বলে যে তথ্য ছড়িয়েছিল, তা সঠিক নয় বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বরং চলতি বছরের ডিসেম্বরে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, সংশোধিত ও পরিমার্জিত মূল্যায়ন পদ্ধতিতে নতুন শিক্ষাক্রমের বইয়ের ওপরই মাধ্যমিক পর্যায়ের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষার আয়োজন ও মূল্যায়ন করা হবে। সংশোধিত ও মূল্যায়ন পদ্ধতির রূপরেখা শিগগির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠানো হবে।

পরিপত্রে বলা হয়, ২০২৪ সালের অবশিষ্ট সময়ে ও বার্ষিক পরীক্ষায় ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সংশোধিত এবং পরিমার্জিত মূল্যায়ন পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করা হবে।

শ্রেণি কার্যক্রমগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির প্রতিটির ছয়টি করে বিষয়ভিত্তিক যে মূল্যায়ন কার্যক্রম অসম্পন্ন রয়েছে, সেগুলো আর হবে না। সংশোধিত ও পরিমার্জনকৃত মূল্যায়ন রূপরেখার ভিত্তিতে চলতি বছরের ডিসেম্বরে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে বলা হয়েছে, শিক্ষাবিদ, শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ, মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রশাসক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও অভিভাবক প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় ২০২৫ সালে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করা হবে। যা ২০২৬ সাল থেকে পরিপূর্ণরূপে কার্যকর করা হবে।

উল্লেখ্য, কঠোর সমালোচনা ও বিতর্কের মুখেও নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছিল আওয়ামী লীগ সরকার। অভিযোগ উঠেছিল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আপত্তিকে পাত্তা না দিয়েই শেখ হাসিনা সরকার এই শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করে।

সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম

আসছে নতুন নিয়ম নতুন শিক্ষাক্রম পরিপত্র শিক্ষা মন্ত্রণালয়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর