প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ১২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:২০
নওগাঁ: নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার সুদরানা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমরেন্দ্রনাথ সাহার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন তহবিল ও শিক্ষকদের প্রাপ্য নানা সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার নামে কয়েক লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। ওই বিদ্যালয়ের মোট ২৫ জন শিক্ষক-কর্মচারীর সইসহ একটি অভিযোগপত্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার নন্দিগ্রাম গ্রামের বাসিন্দা আনছার আলী ইউএনও বরাবর ওই আবেদন করেছেন। আবেদনের অনুলিপি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহীর চেয়ারম্যান, নওগাঁর জেলা প্রাশাসক, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও আত্রাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকেও পাঠানো হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রবিধানমালার ৪৫ (৫)-এর শর্ত অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক পাঁচ হাজার টাকা নগদ হাতে রাখতে পারেন। কিন্তু নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অমরেন্দ্রনাথ সাহা বিভিন্ন তহবিলের টাকা নিজের পকেটে রেখে দিয়েছেন। তিনি স্কুলের শিক্ষক কর্মচারীদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে নেওয়া আট লাখ ৪৮ হাজার টাকা, শিক্ষার্থীদের সেশন ফি ও বেতনবাবদ আদায় করা চার লাখ টাকাসহ মোট ১২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
অভিযোগ আরও বলা হয়েছে, উচ্চতর বেতন স্কেল দেওয়ার নামে শিক্ষক আসাদুল ইসলাম, মো. ওয়াদুদ আলী সরকার, মো. আবু আসলাম, মো. লিয়াকত আকন্দ ও মোছা. মুনিরা খাতুনের কাছ থেকে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক অমরেন্দ্রনাথ। একইভাবে টাইম স্কেল পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে শিক্ষক মোছা. শিল্পী আকতার ও বিএড স্কেল-বেতন পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে মো. আবু হেনা মোস্তফা কামালের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তিনি।
এখানেই শেষ নয়। বেতন অনুমাদন করে দেওয়ার কথা বলে নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক মো. রজব আলী, মোছা. আরিফা খাতুন, মেহেদী হাসান, এস এম মজমুল হক ও রোজিনা খাতুনের কাছ থেকেও টাকা নিয়েছেন অমরেন্দ্রনাথ সাহা। কোচিং ফি থেকে তিনি ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়ে আর ফেরত দেননি। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের পুরাতন কাগজ বিক্রির ছয় টাকা, শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র ও প্রশংসাপত্রের জন্য নেওয়া এক লাখ টাকা নিয়েছেন তিনি। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকেও বোর্ড ফির বাইরে অতিরিক্ত এক লাখ টাকা তিনি আদায় করেছেন। এর কোনো টাকা বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাবে জমা না দিয়ে তিনি নিজেই আত্মসাৎ করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।
এ ছাড়াও স্কুলে যৎসামান্য কাজ দেখিয়ে ৪৬ হাজার ইট বিক্রি করে সেই টাকাও সুদরানা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমরেন্দ্রনাথ সাহা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে অমরেন্দ্রনাথ সাহা বলেন, সব অভিযোগ মিথ্যা। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সারা দেশে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের বিরুদ্ধে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তারই ধারাবাহিকতায় এসব ঘটানো হচ্ছে। স্কুলের কোনো কোনো শিক্ষক প্রধান শিক্ষক হিসেবে পদায়িত হওয়ার সুপ্ত বাসনা পোষণ করেন। সেই প্রতিহিংসা সফল করতে আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছে।
সারাবাংলা/টিআর