Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এত উষ্ণ গ্রীষ্ম আগে দেখেনি বিশ্ব

সারাবাংলা ডেস্ক
৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:৫০

বৈশ্বিক বিবেচনাতেই এ বছরের গ্রীষ্ম অতীতের উষ্ণতার রেকর্ড ভেঙেছে। তাপমাত্রার তীব্রতা এ বছর প্রত্যক্ষ করেছে বাংলাদেশও। সবশেষ আগস্টেও সারা দেশের গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে শূন্য দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। সারাবাংলা ফাইল ছবি

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বৈশ্বিক উষ্ণতা দিন দিন বাড়ছেই। প্রতি বছরই গড় তাপমাত্রাও বাড়ছে কিছুটা করে। গত বছরের গ্রীষ্মকাল যেমন উষ্ণতায় ছাড়িয়ে গিয়েছিল আগের সব বছরকে। এ বছরও সেই তাপমাত্রা বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রয়েছে।

কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের তথ্য বলছে, এ বছর তথা ২০২৪ সালের গ্রীষ্মকাল তাপমাত্রায় গত বছর তথা আগের সব বছরকেই ছাড়িয়ে গেছে। কেবল গ্রীষ্মকাল নয়, সারা বছরের তাপমাত্রাতেও এ বছর আগের সব বছরকে ছাড়িয়ে যাবে বলেই আশঙ্কা করছেন গবেষকরা।

বিজ্ঞাপন

কেবল বৈশ্বিক হিসাব নয়, বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতরের পরিসংখ্যানও তাপমাত্রা বৃদ্ধির কথাই বলছে। সদ্য সমাপ্ত আগস্ট মাসে দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে শূন্য দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। এ মাসে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রাও ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে শূন্য দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। আর সারা দেশের গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছিল শূন্য দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের গবেষণার তথ্যের বরাত দিয়ে এ খবর দিয়েছে বিবিসি। খবরে বলা হয়েছে, ইউরোপ জুড়ে ২০২২ সালের গ্রীষ্মকাল ছিল উষ্ণতম। এ বছর সেই রেকর্ডও ভেঙে গেছে। ১৯৯১ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়ের দীর্ঘমেয়াদি গড় হিসাব করলে দেখা যায়, এ বছরের গ্রীষ্মের গড় তাপমাত্রা ওই গড়ের তুলনায় ১ দশমিক ৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।

এ বছরই প্রথম টানা ২৭ দিন দেশের কোথাও না কোথাও মৃদু থেকে শুরু করে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ দেখেছে বাংলাদেশ। বিশেষ করে দেশের উত্তর ও উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ জনজীবনে নাভিশ্বাস তুলেছিল। সারাবাংলা ফাইল ছবি

এদিকে গত আগস্ট মাস ছিল ১৪ মাসের মধ্যে ত্রয়োদশ মাস, যে মাসগুলোর প্রতিটিতেই বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ছিল প্রাক-শিল্পযুগের তুলনায় ১ দশমিক ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। এদিকে ২০১৫ সালে যুক্তরাজ্য সবচেয়ে ‘শীতল গ্রীষ্মকাল’ কাটালেও ইউরোপের অন্য এলাকাগুলো ছিল তুলনামূলকভাবে বেশি উষ্ণ।

বিজ্ঞাপন

গবেষণার তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত এ বছরের বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ১৯৯১-২০২০ সময়ের গড় তাপমাত্রার তুলনায় বেড়েছে শূন্য দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখন পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। এর সূত্র ধরেই কোপার্নিকাস সার্ভিস আশঙ্কা করছে, ২০২৪ সাল বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা অতীতের যেকোনো বছরের তুলনায় হবে বেশি। এখন পর্যন্ত এই রেকর্ড রয়েছে গত বছরের দখলে।

ক্রমেই বিশ্ব এভাবে উষ্ণ থেকে উষ্ণতর হয়ে ওঠায় তাপপ্রবাহ ও আবহাওয়া চরমভাবাপন্ন হয়ে ওঠাসহ নানামুখী প্রভাব পড়ছে বিশ্বজুড়ে। কোপার্নিকাসের উপপরিচালক সামান্থা বার্গেস বলেন, তাপমাত্রাসংশ্লিষ্ট চরমভাবাপন্ন ঘটনাগুলোর তীব্রতা এ গ্রীষ্মে কেবল আরও বেশি হবে।

কেবল গ্রীষ্ম নয়, উষ্ণতায় এ বছরই ছাড়িয়ে যাবে অতীতের সব বছরকে— এমন আশঙ্কাই করছেন জলবায়ু গবেষকরা। সারাবাংলা ফাইল ছবি

ইউরোপ জুড়েও তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙেছে চলতি গ্রীষ্ম। অস্ট্রিয়াতে সর্বোচ্চ উষ্ণতার গ্রীষ্মের রেকর্ড ভেঙেছে এ বছর। স্পেনের আগস্ট মাস ছিল দেশটির ইতিহাসের উষ্ণতম। ফিনল্যান্ডেও এ বছরের আগস্ট মাসের গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হিসেবে যৌথভাবে শীর্ষে রয়েছে। সুইজারল্যান্ডের আগস্ট মাস উষ্ণতার দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে।

উষ্ণতায় এল নিনোর প্রভাব

বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মানবসৃষ্ট বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা থাকলেও ২০২৩ ও ২০২৪ সালে উষ্ণতায় নতুন নতুন রেকর্ডের পেছনে বড় ভূমিকা রেখেছে জলবায়ুজনিত প্রাকৃতিক ঘটনা এল নিনোও। গত বছরের জুন থেকে এ বছরের মে পর্যন্ত প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্বাঞ্চলে দেখা গেছে এল নিনো, যেটি মূলত সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা বাড়িয়ে দেয়।

কোপার্নিকাস বলছে, এল নিনোর সময় সমুদ্রপৃষ্ঠের বাড়তি তাপমাত্রা বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে। মে মাসে এল নিনো শেষ হয়ে গেলেও বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে এর প্রভাব থেকে যাবে বছর জুড়েই। অস্ট্রেলিয়া ব্যুরো অব মিটিওরোলজির বিজ্ঞানীরা অবশ্য বলছেন, আসছে মাসগুলোতে লা নিনা শীতল ধাপে প্রবেশ করবে।

সারাবাংলা/টিআর

উষ্ণতম গ্রীষ্ম এল নিনো গ্রীষ্মকাল গ্রীষ্মের তাপমাত্রা তাপমাত্রার রেকর্ড বৈশ্বিক উষ্ণতা

বিজ্ঞাপন

খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমলো
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০৮

আরো

সম্পর্কিত খবর