রাজশাহীতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৪৭
রাজশাহী: রাজশাহীতে আব্দুল্লাহ আল মাসুদ নামে এক পা হারানো সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে মারধরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতাকে রাজশাহীর দিনাজপুর এলাকা থেকে খুঁজে বের করে ছাত্ররা। পরে সেখানই তাকে পিটিয়ে প্রথমে মতিহার থানা পুলিশের কাছে দেয়। সেখান থেকে তাকে বোয়ালিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ পারভেজ তার মৃৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, মরদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
নিহত আব্দুল আল মাসুদের গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায়। তার বাবার নাম রফিকুল ইসলাম। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে স্টোর অফিসার ছিলেন। গত ৩ সেপ্টেম্বর একটি কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছেন তিনি। চাকরির সুবাদে পরিবার নিয়ে তিনি বিনোদপুরে থাকতেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাসুদ শনিবার রাত ১০টার দিকে বাড়ি থেকে রাজশাহী বিনোদপুর বাজারে ওষুধ কেনার জন্য গেলে মারধরের শিকার হন। পরে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে শিক্ষার্থীদের একটি দল মতিহার থানায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে নেওয়া হয় বোয়ালিয়া থানায়। এরপর শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল চিকিৎসার জন্য মাসুদকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাসুদের মৃত্যু হয়।
এর আগে ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলের সামনে হামলার শিকার হয়েছিলেন আবদুল্লাহ আল মাসুদ। এতে মাসুদের ডান পায়ের নিচের অংশ গোড়ালি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। বাম পা-ও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কেটে দেওয়া হয়েছিল হাতের রগ। ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগ, ছাত্রশিবিরের ক্যাডাররা ওই হামলা চালিয়েছিল।
১০ বছর আগের ওই হামলায় পা হারানো মাসুদ একটি প্লাস্টিকের পা লাগিয়ে চলাচল করতেন। তার অন্য পা শনিবার রাতে ভেঙে দেওয়া হয়। বোয়ালিয়া থানা হাজতে শুয়ে থাকা অবস্থায় মাসুদ বলেছিলেন, ‘আমি বিনোদপুরে ওষুধ নিতে এসেছিলাম। আমি ছাত্রলীগ করতাম, ওই জন্য ধরেছে। কিন্তু আমার পা ২০১৪ সালে কেটেছে। রগ-টগ সব কাটা। আমি তো অনেক দিন আগে থেকেই ছাত্রলীগ করা বাদ দিয়েছি, ভাই।’
সারাবাংলা/ইআ