Tuesday 03 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নওগাঁয় হত্যা মামলায় ২৬ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৪০ | আপডেট: ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২১:৫০

নওগাঁ: নওগাঁর মান্দা উপজেলায় ২৬ বছর আগে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আজিম উদ্দিন হত্যা মামলার রায়ে ২৬ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. মোখলেছুর রহমান এ রায় দেন। শুনানির সময় ২২ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক।

বিজ্ঞাপন

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি শুনানি করেন অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) সামসুর রহমান এবং আসামিপক্ষে মামলাটি শুনানি করেন আইনজীবী ইউসুফ আলী।

১৯৯৮ সালের ২ ডিসেম্বর নওগাঁর মান্দা উপজেলার ভরট্ট শিবনগর গ্রামে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আজিমুদ্দিন নামে এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত আজিমুদ্দিনের ছেলে আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে মান্দা থানায় মামলা করেন।

মামলাটি তদন্ত করে পুলিশ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৪ ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। মামলা চলাকালে অভিযুক্ত আটজন আসামি বিভিন্ন সময়ে মারা যাওয়ায় তাদের নাম অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত ২৬ জন আসামির মধ্যে ২২ জনকে আদালতে আনা হয়। চারজন পলাতক। পলাতক সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে গ্রেফতার করে সাজা
পরোয়ানা অনুযায়ী কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছন আদালত।

আদালতে উপস্থিত থাকা যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ২২ আসামি হলেন- মান্দা উপজেলার ভরট্ট শিবনগর গ্রামের মনছুর আলী, আলতাব হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, ফজের আলী, ফজলুর রহমান, কাদের আলী, জবেদ আলী, কাজেমুদ্দিন, অহিদুল ইসলাম, আছিব উদ্দিন, মোখলেছার রহমান, কাশেম আলী, লিয়াকত আলী, জালাল,শাহজাহান আলী, ছাইদুর রহমান, পৈক্যা ওরফে বুলু, আজাদ আলী মৃধা, আশরাফুল
মৃধা, কলিমুদ্দিন মণ্ডল, পটল ওরফে পরশ উল্যা ও গুল মাসুদ।

বিজ্ঞাপন

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক চার আসামি হলেন-ভরট্ট শিবনগর গ্রামের এনামুল হক, আনিছুর রহমান, মোখলেছুর রহমান ও মোজাহার আলী।

আদালত ও মামলার নথি সূত্রে জানা যায়, মান্দা উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ভরট্ট শিবনগর গ্রামের বাসিন্দা আজিমুদ্দিন গ্রামের মসজিদের নামে থাকা জমি লিজ নিয়ে ভোগদখল করতেন। সেই জমি নিয়ে আজিমুদ্দিনের সঙ্গে একই গ্রামের বাসিন্দা মনসুর আলী, শাহজাহান আলী ও আলতাব হোসেন ম-লের বিরোধ চলছিল। ১৯৯৮ সালের ২ ডিসেম্বর সকাল ৬টার দিকে মনসুর আলী, শাহজাহান আলী ও আলতাব হোসেন লোকজন নিয়ে আজিমুদ্দিনের ভোগদখল করা জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে হয়।

এ সময় আজিমুদ্দিন তাদেরকে বাধা দিতে গেলে মনসুর আলী, শাহজাহান আলী আলতাব হোসেন ও তাদের সহযোগীরা লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার শরীর এবং মাথায় আঘাত করে। গুরুত্বর আহত অবস্থায় আজিমুদ্দিনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে পর দিন তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আজিমুদ্দিনের ছেলে আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে মান্দা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ১৯৯৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর আদালতে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগপত্র জমা দেন। আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় মামলার চার্জভুক্ত আট আসামির মৃত্যু হওয়ায় তাদের নাম মামলার চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়। এর ফলে পরবর্তীতে ২৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম চলমান থাকে। ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ এবং রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে দীর্ঘ ২৬ বছর পর সোমবার দুপুরে মামলাটির রায় ঘোষণা করা হয়।

সারাবাংলা/এনইউ

টপ নিউজ নওগাঁ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর